শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: রামনবমী ঘিরে অশান্তির আশঙ্কা ছিল। তা রুখে দিতে সবরকমভাবে প্রস্তুতি ছিল পুলিশেরও। সারাদিন নির্বিঘ্নেই কেটেছে এই দিনটি। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নির্বিশেষে শোভাযাত্রা, মিছিল, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে রামনবমী উদযাপিত হয়েছে রাজ্যজুড়ে। ছোট-বড় অশান্তির কোনও খবরও মেলেনি। তবে এসবের মাঝেই রাজনৈতিক সৌজন্যের ছবি সামনে এল। রামের নামে মিলে গেল তৃণমূল, বিজেপি। মিছিলের মাঝে দেখা হতেই রায়গঞ্জে তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা এলাকার দাপুটে নেতা কানাইয়ালাল আগরওয়ালের পা ছুঁয়ে প্রণাম করলেন বিজেপি সাংসদ কার্তিক পাল! পরিয়ে দিলেন উত্তরীয়।
কানাইয়ালাল আগরওয়ালকে উত্তরীয় পরিয়ে দিলেন বিজেপি সাংসদ। নিজস্ব ছবি।
চব্বিশের লোকসভা ভোটে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ থেকে প্রার্থী নিয়ে বিস্তর সমস্যায় পড়েছিল গেরুয়া শিবির। প্রাথমিকভাবে তিনজনের নাম ভাবা হলেও সেখান থেকে একজনকে নির্বাচনী ময়দানে নামানোর ক্ষেত্রে বিস্তর ভাবতে হয়েছিল বিজেপিকে। শেষমেশ তরুণ প্রার্থী কার্তিক পালের উপরই ভরসা রাখা হয়। নেতৃত্বের ভরসা যোগ্য জবাবও দিয়েছেন তিনি। রায়গঞ্জ থেকে তৃণমূলের কৃষ্ণ কল্যাণীকে হারিয়ে জিতেছেন। যার জেরে এবারও উত্তরবঙ্গের এই আসনটি দখলে আসেনি রাজ্যের শাসক শিবিরের। তবে গেরুয়া শিবিরের জনপ্রতিনিধি হলেও শোনা যায়, এলাকার তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে তেমন বিরোধে জড়াননি কার্তিক পাল।
রামনবমীতে সেই বিরোধহীনতার ছবিই দেখা গেল। রবিবার রায়গঞ্জ শহরে একদিকে কার্তিক পালের নেতৃত্বে মিছিল চলছিল। অন্যদিক থেকে রামের নাম নিয়ে শোভাযাত্রায় শামিল হয়েছিলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা ইসলামপুরের পুরচেয়ারম্যান কানাইয়ালাল আগরওয়াল। মাঝপথে তাঁদের দেখা হয়। বিজেপি সাংসদ কার্তিক পাল এগিয়ে এসে কানাইয়ালাল আগরওয়ালের পা ছুঁয়ে প্রণাম করলেন। পরিয়ে দিলেন খাদির উত্তরীয়। সৌজন্য খামতি রাখেননি কানাইয়ালালও। অনুজ কার্তিককে নমস্কার করে উত্তরীয়ও গ্রহণ করেছেন হাসিমুখে। কিছু কথাবার্তাও হয়েছে তাঁদের মধ্যে। রামনবমীর দিনে এহেন সৌজন্যের ছবি দেখে আপ্লুত মিছিলে যোগ দেওয়া জনতা। বলছেন, এটাই বাংলা, সম্প্রীতির বাংলা।