সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: রামনবমী (Ram Navami) উৎসব নির্বিঘ্নে কাটাতে রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনের তৎপরতা ছিল বিস্তর। অধিকাংশ জেলাতেই ভালভাবে দিনটি কাটলেও বিক্ষিপ্ত অশান্তি হাওড়ায় (Howrah)। তবে তা দ্রুত সামলে নিয়েছে পুলিশ। চুঁচুড়ায় অবশ্য নিয়মভঙ্গের ছবি দেখা গেল শিশুরা অস্ত্র হাতে মিছিলে হাঁটায়। এছাড়া প্রশাসনের আবেদনে সাড়া দিয়ে শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদাররা রামনবমীর মিছিলে হাঁটলেন নিরস্ত্র হয়েই। গেরুয়া শিবিরের শীর্ষ নেতাদের হাতে অস্ত্র না থাকলেও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বাঁকুড়ার বিজেপি (BJP) সাংসদ সুভাষ সরকার রাস্তায় নেমে লাঠি খেললেন। পুরুলিয়া জেলাতেও বিজেপির সাধারণ কর্মী, সমর্থকরা অস্ত্র নিয়ে রাস্তায় মিছিল করলেন, দেখালেন শারীরিক কসরৎ।
এদিন সকাল সকাল হাওড়ার রামরাজাতলায় রাম মন্দিরে গিয়ে রামনবমীর পুজো দিয়েছেন দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। আরতি সেরে প্রসাদ বিলিও করেন তিনি। বালুরঘাটে পুজো দেন সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)। এখানে রামনবমী উপলক্ষে রাম-সীতারূপী ভক্তরা ঘুরে বেড়ালেন গাড়ি চড়ে। শুভেন্দু অধিকারীও নন্দীগ্রামে পুজোপাঠে ব্যস্ত ছিলেন। যদিও বিকেলে খড়গপুরে গিয়ে রামনবমীর মিছিলে হাতে গদা নিয়ে হাঁটেন দিলীপ ঘোষ। শুভেন্দুও হাওড়ার একটি মিছিলে অংশ নেন। তবে তাঁর হাতে অস্ত্র ছিল না।
[আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর সতর্কতা সত্ত্বেও রামনবমীতে এড়ানো গেল না বিশৃঙ্খলা, হাওড়ায় ব্যাপক অশান্তি]
বৃহস্পতিবার বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (VHP) নেতৃত্বে চুঁচুড়ায় এক মিছিলকে কেন্দ্র করে বিতর্ক দানা বাঁধল। দুপুর তিনটে নাগাদ চুঁচুড়ার রবীন্দ্রনগর মাঠ থেকে প্রায় কয়েকশো কর্মী অস্ত্র হাতে মিছিল শুরু করে। চুঁচুড়ার খাদিনা মোড় তোলা ফটক হয়ে ঘড়ি মোড়, পিপুলপাতির মোড় হয়ে রবীন্দ্র নগরে মিছিল শেষ হয়। সেই মিছিলে শিশুদের হাতেও ছিল খোলা তলোয়ার। আর এখানেই বেঁধেছে বিতর্ক। নাগরিক সমাজ প্রশ্ন তুলেছেন, যে বয়সে মাঠে খেলার কথা, স্কুলে পড়াশোনা করার কথা, সেখানে তাদের হাতে খোলা তরোয়াল তুলে দিয়ে কী বার্তা দিতে চাইছেন মিছিল সংগঠকরা? এদিন মিছিলে বহু মানুষের হাতেই খোলা তরোয়াল, গদা, ত্রিশূল দেখা যায়। তরোয়াল হাতে মিছিল করার অনুমতি না থাকলেও এদিন প্রশাসনের তোয়াক্কা না করে শহরের বুকে এই মিছিলকে কেন্দ্র করে রীতিমতো ক্ষুব্ধ এলাকার মানুষ। এই বিষয়ে বিজেপি নেতৃত্ব কোনও মন্তব্য করতে চায়নি।
বাঁকুড়া (Bankura) শহরে রামনবমীর মিছিলে দেখা গেল কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী সুভাষ সরকারকে। তিনি একাই খোলা রাস্তায় লাঠি নিয়ে খেললেন। দু’ধারে দাঁড়িয়ে তা দেখলেন জনতা। পুরুলিয়া জেলাজুড়ে রামনবমীর বিশাল উদযাপন। হনুমানের ছবি আঁকা পতাকার চাহিদা ছিল তুঙ্গে। তবে এখানে সবটাই নির্বাচনকে সামনে রেখে রামনবমীতে জৌলুস বলে মত জেলার রাজনৈতিক মহলের। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এবারও পুরুলিয়া (Purulia) জেলা বিজেপির হাতিয়ার সেই ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি! বিশ্ব হিন্দু পরিষদের আওতায় থাকা বজরং দল সকাল ১০টা থেকে শহর পুরুলিয়ার গৌশালা হনুমান মন্দির থেকে শোভাযাত্রা বার করে। এতে রামদরবার অর্থাৎ রাম, লক্ষণ, সীতার চরণে হনুমানের মূর্তি-সহ চার ফুটের রাম মন্দির এবং ৯ ফুটের হনুমান মূর্তি ছিল দেখার মতো।