দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: রামনবমীর দিন বিজেপি ধর্মীয় উস্কানি দিয়ে দাঙ্গা বাধানোর চেষ্টা করছে। উসকানিতে পা দেওয়া যাবে না। এই বলে রাজ্যের মানুষকে সতর্ক করলেন ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক শওকত মোল্লা। পাশাপাশি তাঁর হুঙ্কার, '২৬শের নির্বাচনে বিজেপি ধুয়েমুছে সাফ হয়ে যাবে। তিনি বলেন, "অভিষেক ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বাংলার মানুষ ঐক্যবদ্ধ হবে, তাতে বহিরাগত পাখিগুলো আর কোনও দিন বাংলার দিকে মুখ করবে না।"

বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন। এখন থেকেই ধীরে ধীরে সেই রাজনৈতিক যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে সব দলই। ইতিমধ্যেই বিজেপি ধর্মীয় মেরুকরণের তাস খেলতে শুরু করেছে বলে অভিযোগ শাসকদলের। বিধানসভার সামনে 'তৃণমূলের মুসলিম বিধায়কদের চ্যাংদোলা করে' ফেলে দেওয়ার মন্তব্য করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকার। সেই মন্তব্য ঘিরে তেতে ওঠে বিধানসভাও। শুভেন্দু হিন্দুত্বের জিগির তুলতে চান, বলে অভিযোগ ওঠে।
সেই ইস্যুতেই বিজেপিকে বিঁধে শওকত মোল্লা শনিবার বলেন, "৬ তারিখে রামনবমীতে বিজেপি একটা নাটক করতে চাইছে। দাঙ্গা বাঁধাতে চাইছে। বাংলার মানুষের কাছে আবেদন কোনও রকম ধর্মীয় উসকানি, প্ররোচনায় পা দেবেন না। সবার কাছে বিশেষ করে সংখ্যালঘু মানুষের কাছে আহ্বান কোনও রকম প্ররোচনায় পা দেবেন না। শুভেন্দুর পাতা ফাঁদে পা দেওয়া যাবে না।" শওকত জানিয়েছেন, তাঁর বিধানসভা এলাকায় রামনবমীর অনুষ্ঠান হবে। সেখানে তিনিও উপস্থিত থাকবেন। তৃণমূল সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাস করে।
পাশাপাশি তিনি আরও দাবি করেছেন, "আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বিরোধী দলের তকমা হারাবে বিজেপি। '২১ বিধানসভায় ছোট ধাক্কা ছিল। '২৪-এর লোকসভায় মাঝারি ধাক্কা, '২৬ হবে সাইক্লোন। তৃণমূলের সেই সাইক্লোনে উড়ে যাবে গেরুয়া শিবির। ৩০টাও সিট পাবেন না শুভেন্দুরা।"
উল্লেখ্য, আগেই রামনবমী নিয়ে হিংসাত্মক মন্তব্য শোনা গিয়েছিল বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের মুখে। তিনি জানিয়েছিলেন, রামনবমীতে মিছিল আটকানো হলে পালটা প্রতিরোধ হবে। ইটের জবাব পাথরে দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছিলেন তিনি। প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও জানিয়েছিলেন, রামনবমীতে তাঁরা অস্ত্র নিয়ে বেরবেন। এটা খড়গপুরে আখড়ার ঐতিহ্য। তা কেউ বন্ধ করতে পারেনি। পারবেও না।
এদিকে রামনবমীতে সাম্প্রদায়িক অশান্তির ছক তৈরি হচ্ছে, পোস্টারে হিংসা ছড়ানোর ষড়যন্ত্র চলছে। শনিবার সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যবাসীকে সতর্ক করেছেন আইজি (এডিজি), আইনশৃঙ্খলা জাভেদ শামিম এবং দক্ষিণবঙ্গের এডিজি সুপ্রতিম সরকার। কোনও প্ররোচনায় পা দিতে বারণ করেছেন তাঁরা। এবিষয়ে পুলিশও যথেষ্ট সতর্ক আছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।