shono
Advertisement

দেনা মেটাতে দেড় লক্ষ টাকায় বিক্রির উদ্দেশ্যেই শিশু চুরি, পুলিশি জেরায় স্বীকার মহিলার

এর পিছনে বড় চক্র রয়েছে বলেও মনে করছে পুলিশ। The post দেনা মেটাতে দেড় লক্ষ টাকায় বিক্রির উদ্দেশ্যেই শিশু চুরি, পুলিশি জেরায় স্বীকার মহিলার appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 07:27 PM Jan 21, 2020Updated: 07:27 PM Jan 21, 2020

সৌরভ মাজি, বর্ধমান: বাজারে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা দেনা। তা মেটাতেই শিশু বিক্রির পরিকল্পনা করেছিল পিংকি বন্দ্যোপাধ্যায় ওরফে মধুমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৈরাগ্য। অনাময় হাসপাতাল থেকে শিশু চুরির পর মিডলম্যানের হাতে তাকে তুলে দিতে রায়না হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনাও হয়েছিল পিংকি। কিন্তু মাঝপথে মোবাইলের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ফলে রায়না হাসপাতালের সামনে পৌঁছলেও মিডলম্যান পৌঁছতে পারেনি। ফলে পাচার হওয়া আটকে যায়। তখন পিংকি দুর্গাপুরের ভাড়া বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। চুরির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশের জালে ধরা পড়ে যায় পিংকি। জেরায় পুলিশ জানতে পেরেছে ও মিডলম্যান দেড় লক্ষ টাকার বিনিময়ে পিংকির কাছ থেকে শিশুকে নিত। তার পর কোনও এক দম্পতিকে আরও বেশি টাকায় তা বিক্রি করত।

Advertisement

পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় মঙ্গলবার বলেন, “বিক্রির উদ্দেশ্যেই শিশুটিকে চুরি করা হয়েছিল। মোটা টাকায় বিক্রির পরিকল্পনা ছিল। ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে আমরা এই চক্রে আর কেউ রয়েছে কি না, কোথায় বিক্রি করার উদ্দেশ্য ছিল, কত টাকায় বিক্রির মতলব ছিল সবকিছু জানার চেষ্টা করা হবে।” মঙ্গলবার পিংকি ও তার দ্বিতীয় পক্ষের স্বামী মণি বৈরাগ্যকে বর্ধমান আদালতে পেশ করা হয়। তাকে ১০ দিন হেফাজতে নিতে চেয়ে আবেদন করেছে পুলিশ। শিশু চুরির মতলবে প্রথমে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে গর্ভবতী সেজে ভর্তিও হতে চেয়েছিল পিংকি। কিন্তু সেখানে চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে গর্ভবতী নয় বলে ভর্তি নেননি। তাই নিয়ে সেখানে অশান্তিও করেছিল পিংকি। তার পর ছক বদলে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও একই কায়দায় ভর্তি হয়। কিন্তু টেকনিক্যাল কারণে ইউএসজি করাতে পারেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার পর হাসপাতাল থেকে ছুটিও দেওয়া হয়েছিল পিংকিকে।

গত রবিবারই প্রসূতি বিভাগ থেকে ছুটি পেয়ে বাড়ি যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন রায়নার সিপটার রিমা মালিক। সঙ্গে স্বামী সন্দীপ মালিকও ছিলেন। রিমার কন্যাশিশুকেই চুরির ছক করে। তার পর সরকারি প্রকল্পে ৬ হাজার টাকা পাইয়ে দেওয়ার নাম করে এই হাসপাতালের সুপার স্পেশালিটি উইং অনাময় হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে দম্পতিকে বোকা বানিয়ে শিশুটিকে নিয়ে চম্পট দেয় পিংকি। বর্ধমান থেকে রায়নাগামী বাসও ধরে সে। কিন্তু চার্জ না থাকায় তার মোবাইল সুইচড অফ হয়ে যায়। তখন বাসের সহযাত্রীদের মোবাইল নিয়েও মিডলম্যানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে। কিন্তু কারণে তা ঘটেনি।

[আরও পড়ুন: বর্ধমানের শিশু চুরি কাণ্ডে পুলিশের জালে দম্পতি, হদিশ মিলল খুদের]

রায়না হাসপাতালের সামনে বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে শিশুটিকে নিয়ে দুর্গাপুর রওনা হয়েছিল পিংকি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পুলিশের জালে ধরা পড়ে যায় পিঙ্কি ও তার দ্বিতীয় পক্ষের স্বামী মণি বৈরাগ্য। তাদের গ্রেপ্তার করে শক্তিগড় থানার পুলিশ। শিশুটিকেও উদ্ধার করা হয়। মঙ্গলবার দুইজনকেই বর্ধমান আদালতে পেশ করে পুলিশ তাদের হেফাজতেও নিয়েছে। পুলিশের জালে ধরা পড়ার পড়েও পুলিশের কাছে পিংকি বারবার দাবি করেছে সে গর্ভবতী। আবার কখনও দাবি করে গত রবিবারই সে প্রসব করেছে ওই শিশুটিকে। দুর্গাপুরেই টোটোর মধ্যে না কি শিশু প্রসব করে বলেও পুলিশের কাছে দাবি করে।

সোমবার বর্ধমান মেডিক্যালে এই সংক্রান্ত বিষয়ে হাসপাতালের মেডিক্যাল বোর্ড পরীক্ষা নিরীক্ষা করে। ডেপুটি সুপার অমিতাভ সাহা জানান, কোনও পরীক্ষা থেকেই ধরা পড়েনি ওই মহিলা গর্ভবতী। তিনি রবিবার প্রসব করেছেন বলে যে দাবি করছিলেন তাও মিথ্যা। পরীক্ষায় তেমন কোনও প্রমাণই মেলেনি। তবে শিশুচুরির পরিকল্পনা নিয়েই যে বর্ধমান মেডিক্যালে পিংকি ভর্তি হয়েছিল তা এখন স্পষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও তদন্তকারীদের কাছে। গত ১৫ জানুয়ারি সে ভর্তি হয়েছিল। ওইদিনই ভর্তি হয়েছিল রিমা মালিকও। তবে সন্তান প্রসবের পর রিমাকে অবশ্য অন্য ওয়ার্ডে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। কিন্তু রিমার বিষয়ে সবকিছুই সে খোঁজ রাখত বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। এর পিছনে বড় চক্র রয়েছে বলেও মনে করছে পুলিশ। সেই চক্রের সন্ধান পেতে পিংকি ও মণিকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করছে পুলিশ।

The post দেনা মেটাতে দেড় লক্ষ টাকায় বিক্রির উদ্দেশ্যেই শিশু চুরি, পুলিশি জেরায় স্বীকার মহিলার appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup মহানগর toolbarvideo শোনো toolbarshorts রোববার