অর্ণব আইচ: দু, এক বছর নয়। তিন তিন বছর আগে থেকেই লটারি জেতার টাকায় ফুলেফেঁপে উঠেছিল বীরভূমের (Birbhum) তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ও তাঁর মেয়ে সুকন্যার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট। লক্ষ লক্ষ টাকা জমা পড়েছিল সেখানে। সবই লটারি জেতার টাকা। সিবিআইয়ের (CBI) হাতে এসেছে এমনই চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। যার ভিত্তিতে ফের নতুন করে লটারি ও গরু পাচার কাণ্ডের যোগসাজশ নিয়ে ভাবতে হচ্ছে তদন্তকারীদের।
সিবিআই সূত্রে খবর, ২০১৯ সালে একটি লটারি কেনা হয়েছিল। তার পুরস্কার বাবদ ১০ লক্ষ টাকা যায় অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) অ্যাকাউন্টে। এরপর আরও দু’ দফায় লটারির টিকিট কেনে পুরস্কার জেতেন সুকন্যা মণ্ডল (Sukanya Mandal)। একবার ২৫ লক্ষ ও আরেকবার ২৬ লক্ষ টাকা। সবমিলিয়ে মোট ৬১ লক্ষ টাকা জমা পড়ে তাঁর অ্যাকাউন্টে। এই টাকার দিকেই এখন নজর কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার। প্রশ্ন উঠছে, বারবার লটারির মোটা অঙ্কের আর্থিক পুরস্কার কীভাবে জিতলেন অনুব্রত-সুকন্যা? এক লটারির উৎস খুঁজতে গিয়ে আরও অন্তত তিন লটারির সন্ধান পেলেন তদন্তকারীরা।
[আরও পড়ুন: ২০১৭’র টেটে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের নম্বর প্রকাশ পর্ষদের, ২০১৪’র নম্বরও জানা যাবে চলতি সপ্তাহে]
সিবিআই আরও জানতে পেরেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ৫৪০৪৫ নম্বর যে টিকিটে অনুব্রত এক কোটি টাকা জিতেছিলেন অনুব্রত। সেই টিকিট কেনা হয়েছিল বীরভূমের নানুর বিধানসভার নাহিনা গ্রাম থেকে। বোলপুর থেকে সেই গ্রামটি ১৫ কিলোমিটার দূরে। ‘রাহুল লটারি এজেন্সি’ থেকে লটারির টিকিট কিনেছিলেন এক টিকিট বিক্রেতা। সেই বিক্রেতার থেকে লটারি কেনেন মুন্না। তারপর সেই টিকিট সে বিক্রি করে। তাঁর বিক্রি করা একটি টিকিটেই এক কোটি টাকা পুরস্কার পেয়েছেন অনুব্রত।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের অনুমান, গরু পাচারের টাকা এভাবে ঘুরপথে অনুব্রত-সুকন্যার অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে। লটারি সংস্থাকে ভুল বুঝিয়ে ওইপথে কালো টাকা সাদা করার চক্রান্ত করা হয়েছে। আর সেই কারণেই লটারি জেতার টাকার দিকে নজর সিবিআইয়ের। যে টাকা ট্রানজাকশন হয়েছিল সেই টাকার ট্রানজাকশন বুঝতে আধিকারিকরা অনুব্রত মণ্ডল এবং তাঁর পরিবারের লোকেদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের স্টেটমেন্ট চেক করেছিলেন। সেই সময় এই তথ্য আসে, ধাপে ধাপে লটারির মাধ্যমে টাকা ঢুকছিল। সেই টাকা কি গরু পাচারের (Cattle smuggling) টাকাকেই রোল করাবার জন্যই লটারি আশ্রয় নেওয়া হয়েছিল? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই সিবিআই আধিকারিকরা বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছিলেন, বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করেছেন। আর সেখান থেকেই টাকার অঙ্ক জানতে পেরেছেন তাঁরা। এ নিয়ে অনুব্রত কিংবা সুকন্যাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে সিবিআই।
[আরও পড়ুন: ইরানের আন্দোলনের আঁচ ভারতে, আমিনিকে সমর্থন করে হিজাব পোড়ালেন কেরলের মহিলারা]
এদিকে, অনুব্রত ঘনিষ্ঠ আরেক নেতাকে তলব করা হয়েছে। বোলপুর পুরসভার ১৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিশ্বজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়কে তলব করেছে ইডি (ED)। এর আগে অনুব্রতর ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী রাজীব ভট্টাচার্যকেও ইডি জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।