স্টাফ রিপোর্টার: সিপিএমের বইওয়ালা বলেই তাঁকে সকলে চেনে। আলিমুদ্দিনেও তাঁর অবাধ যাতায়াত। পার্টির বই থেকে রাজনৈতিক দলিল সবই থাকে তাঁর ঝোলায়। সেই সুভাষচন্দ্র লাহিড়ী পার্টির দুঃসময়েও বই বিক্রি করে চলেছেন। বাংলা থেকে বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওযার পর সিপিএমের বই বিক্রি পড়েছে। তবুও পার্টির বই তিনি নিষ্ঠাসহকারে পৌঁছে দিচ্ছেন দলের কর্মী-সমর্থক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের হাতে।

সিপিএম ও তার গণসংগঠনগুলির সম্মেলনে, ব্রিগেড বা যে কোনও সমাবেশস্থলেই দেখা পার্টিঅন্ত প্রাণ সুভাষবাবুকে। বিভিন্ন উৎসবেও তিনি পার্টির বইয়ের ডালি নিয়ে হাজির সকলের কাছে। আর প্রতিটা মিডিয়া হাউসেও তাঁর অবাধ যাতায়াত। সালটা ১৯৭৫। তখন স্কুল পড়ুয়া সুভাষবাবু ক্লাস নাইনের ছাত্র। সেই সময় থেকেই তাঁর পরিচয় সিপিএমের প্রমোদ দাশগুপ্ত থেকে শুরু করে সরোজ মুখোপাধ্যায়ের মতো নেতাদের সঙ্গে। প্রয়াত প্রমোদবাবু এবং সরোজবাবুদের পরামর্শেই তিনি পার্টির বই বিক্রির কাজ শুরু করেন। তার আগে সিপিএমের মুখপত্র গণশক্তি বিক্রি করতেন।
সিপিএমের বইওয়ালা সুভাষবাবু জানালেন, "সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক থাকাকালীন প্রয়াত অনিল বিশ্বাসই সাংবাদিকদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন আলিমুদ্দিনে। মিডিয়া হাউসে গিয়ে বই বিক্রি করার সুযোগ অনিলদাই করে দিয়েছিলেন আমায়।’’ বয়স এখন ৬৫। উসকো-খুসকো চুল, কাঁচা-পাকা দাড়ি মুখে। একেবারেই সাদামাঠা মানুষ সুভাষচন্দ্র লাহিড়ী জানালেন, বই বিক্রি করে যেটুকু আয় হয় মোটামুটি চলে যায়।
মার্কসীয় সাহিত্য থেকে শুরু করে গণসংগঠনগুলির পত্রিকা, এছাড়াও অন্যান্য বামপন্থী ভাবনার সঙ্গে সম্পৃক্ত বিভিন্ন বই ও পত্রপত্রিকাও তাঁর ঝোলাতে থাকে। আবার বিভিন্ন নির্বাচনের ফলাফলের হিসেব নিয়ে প্রকাশিত বইও পাওয়া যায় তাঁর কাছে। রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে সাংবাদিকদের নিতেই হবে তাঁর কাছে থাকা এইসব গুরুত্বপূর্ণ বইগুলি। তিনি সকলের কাছের ও শ্রদ্ধার পাত্র। 'সুভাষদা' ভ্রাম্যমান বইওয়ালা। রানী রাসমনি রোডের সমাবেশ, ব্রিগেডের মাঠ থেকে শুরু করে জেলায় জেলায় পার্টির বড় সম্মেলন ও মিটিংয়ে বইয়ের ডালি নিয়ে বসে থাকেন সকলের প্রিয় বইওয়ালা 'সুভাষদা'।
৬৫ বছরের সুভাষ লাহিড়ীর এমন নিষ্ঠাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তাঁর কথায়, এমন নিষ্ঠাবান কর্মী বা সমর্থক যেকোনও দলের সম্পদ। প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলেই এমন লোক থাকা দরকার।