অর্ণব আইচ: উত্তরবঙ্গের ‘চিকেন নেক’-এ চিনের (China) লাল ফৌজের কর্তাদের ‘ভ্রমণ’। আর সেই তথ্য ঘিরেই চাঞ্চল্য গোয়েন্দা মহলে। উত্তরবঙ্গ থেকে এই ব্যাপারে গোয়েন্দারা দিল্লিতে রিপোর্ট পাঠিয়েছেন। উত্তরবঙ্গের গোয়েন্দারা এই রিপোর্টে এই ‘ভ্রমণ’ ঘিরে উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন। চিনের লাল ফৌজের এই ‘ভ্রমণ’ নিছক পর্যটনের কারণে কি না, তা নিয়ে গোয়েন্দারা সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। চিনা আধিকারিকদের ওই টিম নিছক ভ্রমণের নামে উত্তরবঙ্গের ‘চিকেন নেক’ বা শিলিগুড়ি করিডর (Siliguri Corridor) পর্যবেক্ষণ করতে গিয়েছে, এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না গোয়েন্দারা।
গোয়েন্দাদের সূত্র জানিয়েছে, দেশের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন্য সেনাবাহিনীর মূল নজর শিলিগুড়ি করিডর বা ‘চিকেন নেক’-এর উপর। কারণ, সেনাদের মতে, চিনের লাল সেনাদের মূল নজর এই শিলিগুড়ি করিডরের দিকে। অথচ উত্তরবঙ্গের গোয়েন্দাদের রিপোর্ট অনুযায়ী, সম্প্রতি উত্তরবঙ্গের ওই শিলিগুড়ি করিডরেই দেখা গিয়েছে চিনের ওই আধিকারিকদের। দক্ষিণবঙ্গ থেকে কিছু চিনা ব্যক্তি শিলিগুড়িতে পৌঁছন। একই সময়ে দিল্লি থেকে শিলিগুড়িতে পৌঁছয় চিনা অতিথিদের একটি টিম।
[আরও পড়ুন: হেরে ক্ষুব্ধ ‘চিনপন্থী’ মুইজ্জু, ভারতীয় সেনা হঠানোর ডেডলাইন দিল মালদ্বীপ]
গোয়েন্দাদের কাছে খবর, ওই দিল্লির টিমের সদস্যদের মধ্যে ছিলেন চিনের লাল ফৌজ পিএলএ-র দুই আধিকারিক। তাঁরা চিনের লাল ফৌজের সেনা গোয়েন্দা আধিকারিক, এমন হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তরবঙ্গের গোয়েন্দাদের সূত্র জানিয়েছে, ওই টিমের সদস্যরা প্রথমে শিলিগুড়ির কয়েকটি জায়গায় ‘ভ্রমণ’ করেন। এর পর ওই টিম কালিম্পং ও দার্জিলিংয়ের কয়েকটি জায়গায় পর্যটক হিসাবেই যান। ‘ভ্রমণ’-এর সময় ওই টিমের সদস্যরা কয়েকজন এলাকার বাসিন্দার সঙ্গে কথাও বলেন। ওই বাসিন্দাদের মধ্যে কেউ চিনা সদস্যদের পূর্বপরিচিত কি না, সেই তথ্য গোয়েন্দারা জানার চেষ্টা করছেন। যাঁদের সঙ্গে চিনা অতিথিরা কথা বলেন, তাঁদের প্রত্যেককেই চিহ্নিত করা হচ্ছে। তাঁদের সঙ্গে চিনা সেনা আধিকারিকরা দোভাষী মারফত কী কী কথা বলেছেন, সেই তথ্যও জানার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা।
সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গ থেকে উত্তর-পূর্ব ভারতের সংযোগকারী অপরিসর অংশকেই ‘চিকেন নেক’ বা ‘মুরগির গলা’ বলা হয়। এই অংশটিকে ‘শিলিগুড়ি করিডর’ও বলে সেনাবাহিনী। সেনাদের মতে, ওই অংশটির উপর চিনের বিশেষ নজর রয়েছে। কারণ, চিকেন নেক ‘ছিঁড়ে নিলে’ অথবা শত্রু সেনারা কোনওমতে ওই অংশটি যদি দখল করে, তবে সারা দেশ থেকে উত্তর-পূর্ব ভারত, এমনকী, উত্তরবঙ্গও বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে। ওই অংশের সুরক্ষার জন্য উত্তরবঙ্গ, সিকিমে অত্যন্ত তৎপর সেনা ও বায়ুসেনা। এর আগে উত্তরবঙ্গের ওই অংশে চিনা চর সন্দেহে একাধিক ব্যক্তি গ্রেপ্তারও হয়েছে পুলিশের হাতে। সেখানে ওই অংশেই চিনা ফৌজের আধিকারিকরা বেড়ানোর নামে আসলে পর্যবেক্ষণ করেছেন কি না, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দারা।