দেবব্রত মণ্ডল ও সুরজিৎ দেব: ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ (Cyclone Sitrang)। আবহাওয়া দপ্তরের সতর্কবার্তা অনুযায়ী, আগামী ২৫ অক্টোবর, মঙ্গলবার তা আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা। ‘আয়লা’, ‘ফণী’, ‘বুলবুল’, ‘আমফান’ কিংবা ‘যশ’ বা ‘ইয়াসে’র স্মৃতি এখনও টাটকা। ভয়াবহতাকে সাক্ষী রেখে ‘সিত্রাং’ ধেয়ে আসার আগে আতঙ্ক যেন দ্বিগুণ হচ্ছে। আর সে কারণে ইতিমধ্যেই বাংলার উপকূল এলাকায় জারি চরম সতর্কতা। সুন্দরবন, কাকদ্বীপ ও দিঘায় চলছে মাইকিং। সুন্দরবনের নদী খাঁড়ি এবং গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়ার ক্ষেত্রে জারি নিষেধাজ্ঞা।
ঝড়খালি, গোসাবা, বাসন্তী-সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের তরফ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। ঝড়খালি কোষ্টাল থানার আধিকারিক প্রদীপ রায়ের নেতৃত্বে ইতিমধ্যে মাইকিং করে ঝড়খালি কোষ্টাল থানার বিভিন্ন এলাকায় সতর্কতামূলক প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ মোকাবিলায় প্রতিটি ব্লক ও মহকুমা স্তরে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। সেখান থেকেই এই ঝড়ের গতিপ্রকৃতি এবং গোটা এলাকার পরিস্থিতির উপর নজরদারি রাখবে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন।
[আরও পড়ুন: সুদের টাকা শোধ করতে না পারায় রেললাইনে ফেলে দেওয়া হল প্রৌঢ়কে, ট্রেনের ধাক্কায় কাটল পা]
সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া মৎস্যজীবীরা যাতে বিপদে না পড়েন, তাই দক্ষিণ ২৪ পরগনার মৎস্যজীবীদের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মৎস্যদপ্তর। নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে কেউ গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে গেলে তাঁর লাইসেন্সও বাতিল করা হতে পারে। নদী তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজও চলছে। সুন্দরবনে পর্যটনে ব্যবহৃত জলযানের ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
সুন্দরবনের পাশাপাশি কাকদ্বীপ মহকুমার বিভিন্ন উপকূলীয় এলাকাতেও শুরু মাইকিং। কাকদ্বীপের মহকুমা শাসক অরণ্য বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ইতিমধ্যেই কাকদ্বীপ মহকুমায় পাঁচটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। মূল কন্ট্রোল রুমটি খোলা হয়েছে কাকদ্বীপ মহকুমা শাসকের অফিসে। বাকি চারটি খোলা হয়েছে কাকদ্বীপ, সাগর, নামখানা ও পাথরপ্রতিমা ব্লকে। ফ্লাড শেল্টারগুলিকে প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। এছাড়াও কাকদ্বীপ মহকুমায় ৬৪টি মাল্টিপারপাস সাইক্লোন শেল্টার এবং ১১৭টি স্কুলবাড়িকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। ফ্লাড শেল্টারগুলিতে বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যবস্থা ঠিকঠাক রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কাকদ্বীপ এবং সাগরদ্বীপে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে প্রস্তুত রাখা হচ্ছে।