shono
Advertisement

কালীর সঙ্গেই এখানে দুর্গা বিসর্জন, পুজোর অভিনব নিয়মে দ্বিগুণ উৎসবের আনন্দ

বিদায়বেলায় নানা রকমের ভোগ দেওয়া হয় দুই দেবীকে। The post কালীর সঙ্গেই এখানে দুর্গা বিসর্জন, পুজোর অভিনব নিয়মে দ্বিগুণ উৎসবের আনন্দ appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 05:13 PM Oct 28, 2019Updated: 05:13 PM Oct 28, 2019

সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: আসেন নির্দিষ্ট সময়েই। কিন্তু বিদায় নেন কালীর সঙ্গে। সোমবার সন্ধেবেলা মা কালীর সঙ্গেই বিসর্জন হবে দেবী দুর্গার। এটাই দীর্ঘদিনের প্রথা গলসি ১ নম্বর ব্লকের রণডিহার চার পরিবারের। রনডিহা গ্রামের বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের শাখাপ্রশাখা ছড়িয়েছে অন্যত্র। তাই শুধু বন্দ্যোপাধ্যায় নয়, এই পুজো মুখোপাধ্যায়,চট্টোপাধ্যায় ও ভট্টাচার্য পরিবারের পুজো হিসাবেও খ্যাত।

Advertisement

পরিবারের ঠাকুর দালানও একটি। সেখানে ফি বছর দুর্গাপুজো হয়। কিন্তু দুর্গাপুজোর বিসর্জনের রীতি ভিন্ন এই পরিবারে। সোমবার সন্ধেয় কালী প্রতিমার সঙ্গেই শোভাযাত্রা করে দুর্গাও বের হবে। আগে কালী বিসর্জন হবে, তারপরই বিদায় দেওয়া হবে মা দুর্গাকে। এতগুলো দিন ঠাকুর দালানেই থাকেন সপরিবারে দুর্গা। দৈনিক পুজোও হয় দেবীর। প্রতিদিন পঞ্চব্যঞ্জন, মাছ এবং অন্নভোগ দেওয়া হয় দুর্গাকে। সন্ধেবেলা লুচি,মিষ্টি দিয়ে শীতল ভোগ দেওয়া হয়। কোনও ভক্ত এলে তিনিও প্রসাদ হিসেবে পান অন্নভোগ।

[আরও পড়ুন: আলোর উৎসবে নিষ্প্রদীপ জিয়াগঞ্জে নিহত শিক্ষকের বাড়ি]

বন্দ্যোপাধ্যায়, মুখোপাধ্যায়, চট্টোপাধ্যায় ও ভট্টাচার্য পরিবারের এই দেবী উমা ও কালী এবার ৪৬০ বছরে পা দিলেন। দুই দেবীর প্রতিষ্ঠা ও নিরঞ্জন নিয়ে এক সুন্দর লোককথা রয়েছে। মুখোপাধ্যায় পরিবারের প্রবীণ ব্যক্তি সত্যনারায়ণ মুখোপাধ্যায় জানান, এই জনশ্রুতির কথা। ৪৬০ বছর আগে রণডিহার গরীব ব্রাহ্মণ সন্তান গঙ্গাধর বন্দ্যোপাধ্যায় কোটা গ্রামের মিত্তির পরিবারের দেবী দুর্গার পুজো দেখতে গিয়েছিলেন। সেদিন ছিল মহাষ্টমী। নির্জলা উপবাস করেছিলেন গঙ্গাধরবাবু। পুজো শেষে সবাই মায়ের প্রসাদ পেলেও কণামাত্র প্রসাদও পাননি গঙ্গাধর বন্দোপাধ্যায়। হতাশ মনে, তীব্র খিদে নিয়ে বাড়ি ফিরতে গিয়ে পথ ভুল করেন। পথের মাঝে এক বালিকা তাঁর পথ আটকায়। ওই বালিকাই পথ দেখিয়ে গঙ্গাধরবাবুকে রাতে বাড়ি পৌঁছে দেয় আসেন। সেই রাতেই গঙ্গাধর বন্দ্যোপাধ্যায় স্বপ্নাদেশ পান। দেবী দুর্গা তাঁকে স্বপ্নাদেশ দিয়ে বলেন, তাঁর পুজো শুরু করতে। গঙ্গাধরবাবু বলেন, তিনি খুব গরীব। তাই কীভাবে মায়ের আরাধনা করবেন বুঝতে পারছেন না। দেবী তাঁকে বলেন, বাড়িতে যা আছে, তাই দিয়েই করতে হবে পুজো।

[আরও পড়ুন: খাদান কালীর আরাধনায় অংশ নেন মুসলিমরাও, প্রাচীন পুজোর মাহাত্ম্য আপনাকে অবাক করবে]

স্বপ্নাদেশে দেবী দুর্গা এই আদেশও দেন যে, দশমীর দিন বিসর্জন দেওয়া যাবে না। কালী তাঁকে নিয়ে যাবে। সেই থেকেই কালীর পরেই দুর্গার বিসর্জনের রীতি এই পরিবারে। কালীর পুজোর সময়ে দেবী দুর্গারও আরাধনা করা হয়। কালী পুজোর দিন ৩১ সের আতপ চালের নৈবেদ্য দেওয়া হয় কালীকে আর দুর্গাকে দেওয়া হয় ৯ সের চালের নৈবেদ্য। মা কালীকে ৯ থালা ও দেবী দুর্গাকে ৭ থালা অন্নভোগ দেওয়া হয়।দুই দেবীর উদ্দেশ্যেই দুটি ছাগ বলি দেওয়া হয়। কালীর অন্নভোগ হয় দেখার মতো। চোদ্দ রকম ভাজা, চার রকমের তরকারি ও বলির মাংস। দেবী দুর্গার বিদায়ের পর যখন সকলের মন ভারাক্রান্ত হয়, তখন প্রায় একমাস ধরে তাঁকে কাছে পেয়ে আনন্দে ভরে থাকেন রণডিহার বাসিন্দারা।

The post কালীর সঙ্গেই এখানে দুর্গা বিসর্জন, পুজোর অভিনব নিয়মে দ্বিগুণ উৎসবের আনন্দ appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement