সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দত্তপুকুরের (Duttapukur) মোছপোল এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে প্রাণ গিয়েছে ৭ জনের। বিস্ফোরণস্থল দেখে শিউড়ে উঠছেন সকলে। ধুলিসাৎ বাজি কারখানায়। এখানেই বিস্ফোরণ ঘটেছিল রবিবার সকালে। এদিক-ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে মৃতদেহের অংশ। দেখেই বোঝা যাচ্ছে, বিস্ফোরণের তীব্রতা কতটা গভীর ছিল। তদন্তে নেমে দেখা গিয়েছে, প্রচুর পরিমাণে রাসায়নিক (Chemical) মজুত ছিল কেরামত আলি, সামসুল আলির মালিকানাধীন কারখানায়। ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহের পর বিশেষজ্ঞরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছেন, মূলত তিনটি রাসায়নিক পদার্থের জন্যই এত ভয়াবহ বিস্ফোরণ (Blast)। কিন্তু আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের জন্য বহুলাংশে ব্যবহৃত সেসব রাসায়নিক বাজি কারখানায় কেন, কীভাবেই বা এল – এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারীরা।

সূত্রের খবর, বিস্ফোরণস্থল থেকে পাওয়া গিয়েছে পটাশিয়াম ক্লোরেট (Potassium Chlorate), বেরিয়াম নাইট্রেট (Barium Nitrate), অ্যালুমিনিয়াম (Aluminium)। প্রথম দুটি রাসায়নিক যৌগ বিস্ফোরক হিসেবে পরিচিত। বিশেষত পটাশিয়াম ক্লোরেটের (KClO3)বিস্ফোরণ ক্ষমতা অনেক বেশি। আইইডি (IED), আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির অন্যতম উপাদান পটাশিয়ামের এই যৌগ। সাদা গুঁড়োর যৌগটি দেখে তা অবশ্য আন্দাজ করার উপায় নেই। কিন্তু আগুনের সংস্পর্শে এলে তা মারাত্মক বিস্ফোরণ ঘটায়। এছাড়া রয়েছে বেরিয়াম নাইট্রেট (Ba(NO3)2)। বেশিক্ষণ উচ্চ তাপমাত্রায় থাকলে আলো-সহ বিস্ফোরণ ঘটে। এটি ডিটোনেটর, বিস্ফোরক, উড়িয়ে দেওয়ার সামগ্রী হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
[আরও পড়ুন: বিদেশ থেকে স্বামীর পাঠানো টাকা প্রেমিককে দান! চাপে পড়ে অর্থ ফেরতের দাবিতে ধরনায় গৃহবধূ]
বাজি কারখানার বিস্ফোরণ স্থল থেকে এই সব পাওয়ার পর তদন্তকারীদের মনে স্বাভাবিক প্রশ্ন, কোথা থেকে এসব এল? বাজি তৈরির জন্য এত বিস্ফোরক উপকরণ লাগে না। তাহলে কি বাজি তৈরির আড়ালে আসলে বিস্ফোরকের কারখানাই কেরামত ও সামসুলের কারখানাটি? নইলে কী কারণে মারণাস্ত্র তৈরির উপাদানগুলি এখানে এত পরিমাণে মজুত ছিল? কোথা থেকেই বা এসব জোগান আসত? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ।
[আরও পড়ুন: আধার-ভোটার-প্যান কার্ডের তথ্যে গরমিল, পেনশন বন্ধ হাজার হাজার বয়স্ক নাগরিকের]
কানাঘুষোয় এও শোনা যাচ্ছে, এসব এলাকার কারখানাগুলি প্রায় গবেষণাগার (Laboratory)! একাধিক রাসায়নিক পদার্থ নিয়ে সেখানে দিবারাত্র কিছু না কিছু চলে। কেরামত আর সামসুল – দু’জনেরই অবশ্য বিস্ফোরণে প্রাণ গিয়েছে। তদন্তকারীদের একাংশের মত, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আসল ঘটনা জানা যেত। যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এসবের নেপথ্যে তৃণমূলে নেতাদের মদত রয়েছে। বসতি এলাকায় এ ধরনের বিস্ফোরকের কারবার এবং এত বড় দুর্ঘটনাক পর ক্ষুব্ধ তাঁরা। সোমবার আশেপাশের একাধিক বন্ধ ইটভাঁটা, কারখানায় ভাঙচুর চালিয়েছেন স্থানীয়রা।