shono
Advertisement
Bardhaman Murder

ঘরের ভিতর প্রৌঢ় দম্পতির রক্তাক্ত দেহ, চার ঘণ্টার মধ্যে খুনের কিনারা বর্ধমান পুলিশের

প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারনা, সম্পত্তি হাতানোর লোভেই খুন।
Published By: Paramita PaulPosted: 09:36 AM Dec 18, 2024Updated: 09:52 AM Dec 18, 2024

ধীমান রায়, কাটোয়া: নিঃসন্তান বৃদ্ধ দম্পতির সঙ্গে কয়েকদিন ধরে যোগাযোগ করতে পারেননি আত্মীয়স্বজনরা। প্রতিবেশীরাও দিন চারেক বাইরে বের হতে দেখেননি। সদর দরজায় এবং বারান্দায় কোলাপসিবল গেটে তালা দেওয়া ছিল। পুলিশকে জানানোর পর মঙ্গলবার বিকেলে ওই তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকে দেখা যায় দুজনের মৃতদেহ পড়ে রয়েছে। পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার বাজারের রবীন্দ্রপল্লি এলাকায় জোড়া দেহ উদ্ধারের ঘটনা ঘিরে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়।অবশ্য দেহ উদ্ধারের দুই ঘন্টার মধ্যেই ঘটনার কিনারা করে ফেলে পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয়েছে তিন আত্মীয়কে। প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারনা, সম্পত্তি হাতানোর লোভেই এই খুন।

Advertisement

পুলিশ জানায়, মৃতদের নাম অভিজিৎ যশ, বয়স ৭৭ বছর এবং সবিতা যশ, বয়স ৬৫ বছর। আত্মীয়রা ঘরে ঢুকে দেখেন অভিজৎবাবুর দেহ উবু হয়ে পড়ে রয়েছে শোওয়ার ঘরে। মুখে ও গলার কাছে জড়ানো গামছা। তাঁর স্ত্রীর দেহটি উদ্ধার হয় রান্নাঘরে। আত্মীয়দের অভিযোগ, তাঁদের দুজনকে খুন করা হয়েছে। আত্মীয়দের একাংশের অভিযোগ সম্পত্তিগত কারণেই পরিকল্পনামাফিক খুন করা হয়েছে তাদের। ঘটনাস্থলে আসেন পূর্ব বর্ধমান জেলার পুলিশ সুপার সায়ক দাস, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অর্ক বন্দোপাধ্যায় সহ পুলিশ আধিকারিকরা। নিয়ে আসা হয় পুলিশ কুকুর। তদন্তের স্বার্থে দীর্ঘক্ষণ ধরে পুলিশ আধিকারিকরা ঘটনাস্থল খুঁটিয়ে দেখেন। এরপর পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য দেহ দুটি নিয়ে যায়। পাশাপাশি দুই ঘন্টার মধ্যেই পুলিশ ঘটনার কিনারা করে ফেলে।

গ্রেপ্তার করা হয় নিহত সবিতাদেবীর বোনের মেয়ে মহুয়া সামন্তকে। তাকে জেরা করে মহুয়ার দুই ছেলে অনিকেত এবং অরিত্রকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পূর্ব বর্ধমান জেলার পুলিশ সুপার সায়ক দাস বলেন," প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে সম্পত্তির লোভে ওই দম্পতিকে খুন করা হয়েছে। খুনের পাশাপাশি ঘর থেকে মূল্যবান সামগ্রী লুঠ করে নিয়ে যাওয়া হয়। আমরা ফরেনসিক বিভাগকে খবর দিয়েছি। তদন্ত চলছে।"

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিজিৎ যশের বাড়ি ভাতার গ্রামে। তিনি ছিলেন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। ভাতার বাজারের কদমতলায় তিনি বসবাস করতেন। নিচেরতলায় ছিল ব্যবসা। অভিজিৎবাবুর শ্বশুরবাড়ি ভাতার বাজারের অদূরে পালাড় গ্রামে। পালাড় গ্রামে ও ভাতার গ্রামে অভিজিৎবাবুদের আত্মীয়পরিজনরা থাকেন। বছর দুয়েক আগে কদমতলার বাড়ি বিক্রি করে রবীন্দ্রপল্লীতে নতুন বাড়ি তৈরি করে বসবাস করছিলেন। সবিতাদেবীর বাপের বাড়ির তরফের আত্মীয়দের সঙ্গেই দম্পতির ভালো সম্পর্ক ছিল। তাঁরাই খোঁজখবর রাখতেন। অভিজিৎবাবু বয়সের কারণে ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। তবে দুবেলাই তিনি বাজারহাট করতে বের হতেন। পরিচিতদের সঙ্গে গল্পগুজব করতেন। প্রতিবেশীদের একাংশের দাবি, গত শনিবার সন্ধ্যা থেকে অভিজিৎবাবুকে বাইরে বের হতে দেখা যায় নি।

মৃতা সবিতাদেবীর বোন পালাড় গ্রামের বাসিন্দা শ্যামলী কোনার বলেন, "তিন চারদিন ধরে জামাইবাবু ও দিদির সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি। দুদিন ধরে মোবাইলে ফোন করা হলে সুইচড অফ বলছিল। সেজন্য পুলিশের কাছে নিখোঁজ ডায়েরি করতে যাওয়া হয়। পুলিশ আমাদের পরামর্শ দেয় ঘরের মধ্যে দেখতে। এরপর আমার এক নাতনি-সহ কয়েকজন তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকলে দেখা যায় দুজনের মৃতদেহ।" শ্যামলীদেবীর অভিযোগ, "সম্পত্তিগত কারণেই ঘনিষ্ঠ কেউ বা কারা আমার দিদি ও জামাইবাবুকে খুন করেছে। আমরা চাই পুলিশ উপযুক্ত তদন্ত করে দেখুক।" কিন্তু বাড়ির সদর দরজা এবং কোলাপসিবল গেলে বাইরে থেকে তালা দেওয়া অবস্থায় ঘরের মধ্যে দুজনের দেহ উদ্ধারের ঘটনা ঘিরে বেশকিছু প্রশ্নও দেখা দিয়েছে তদন্তকারীদের মনে। পুলিশ জানায় ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • নিঃসন্তান বৃদ্ধ দম্পতির সঙ্গে কয়েকদিন ধরে যোগাযোগ করতে পারেননি আত্মীয়স্বজনরা।
  • প্রতিবেশীরাও দিন চারেক বাইরে বের হতে দেখেননি।
  • সদর দরজায় এবং বারান্দায় কোলাপসিবল গেটে তালা দেওয়া ছিল।
Advertisement