অর্ণব দাস, বারাসত: আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের পরিবারকে নিশানা করেছিলেন মদন মিত্র। কামারহাটির বিধায়ককে পালটা জবাব দিলেন তরুণী চিকিৎসকের বাবা। এদিকে, বৃহস্পতিবার নির্যাতিতার বাড়িতে যান বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। বিজেপি নেতা মারফৎ সিবিআইয়ের ডিরেক্টরকে চিঠিও পাঠিয়েছেন নির্যাতিতার বাবা। সূত্রের খবর, রাজ্যপালের সঙ্গে এদিন দেখা করবেন তরুণী চিকিৎসকের বাবা-মা। ইতিমধ্যেই সোদপুর থেকে কলকাতা উদ্দেশে রওনাও দিয়েছেন তাঁরা।

দিনকয়েক আগে মদন মিত্র নির্যাতিতার পরিবারকে বেলাগাম আক্রমণ করেন। বলেন, "পরিষ্কার করে বলুন কী চাই? টাকা? মনে করলে টাকাই চান। সব কিছু টাকা দিয়ে ঢাকা যায়।" তিনি আরও বলেন, "শুনেছি ডাক্তারদের ৪-৫ কোটি টাকা উঠেছিল। হ্যাঁ, যদি মনে করেন টাকা চান, টাকা চান। সব কিছু টাকা দিয়ে ঢাকা যায়। আমরা শ্রাদ্ধে পড়েছি, কিছু দিতে না পারলে টাকা দিয়ে বলে ওম নমো, ওম নমো, ব্রাহ্মণায়ো অহং দদানি। ছেড়ে দিল টাকা দিয়ে। এটা কী করছেন আপনি? বাংলায় দাঙ্গা লাগাতে চাইছেন আপনারা।"
কামারহাটির বিধায়ক আরও বলেন, "এতদিন আপনারা প্রত্যেক কাছে মা-বাবা ছিলেন। এখন প্রত্যেক সন্তানের কাছে দায়িত্বশীল অন্যায়ে মদতকারী এবং বাস্তব মূল্যের কিছু দাবি জানানোর জন্য, নিজেদের উপকৃত করতে, ক্ষতিপূরণের জন্য চিত্রনাট্য বদলে দিতে চাইছেন।" মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি নিয়ে নির্যাতিতার পরিবারকে তোপ দাগেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক। তাঁর কথায়, "বিচারপতি রায় দিয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেননি। বরং নির্দেশের বিরুদ্ধে গিয়ে মমতা ফাঁসির আবেদন করেছেন। সেটা কেঁচিয়ে দেওয়ার জন্য আপনাদের বিকাশবাবু, যিনি একজন প্রমাণিত, নির্ভুল মিথ্যেবাদী, আপনাদের মুখে মিথ্যে বসিয়ে দিচ্ছে। বিজেপির কথা। সিপিএমের কথা। তাহলে আপনারা বলুন রাজনীতিতে যোগ দিচ্ছেন। অনেক আসন ফাঁকা আছে। দাঁড়িয়ে যান। তাতে অনেকটা ক্ষতিপূরণ হবে। আপনারা কি ছেলেটির ফাঁসি চান? যদি চান, তাহলে আদালতে গেলেন না কেন? আপনারা মা-বাবা হয়ে দাঁড়াতে পারতেন আদালতের কাছে। ফাঁসি না চাইলে সিবিআইকে বারণ করলেন না কেন? আর যদি ফাঁসি আর ফাঁসি নয়ের মাঝামাঝি দাঁড়িয়ে থাকতে চান, তাহলে কোথায় উপনির্বাচনের খোঁজ করুন। তবে জিততে পারবেন না। চান্স নেই।"
মদন মিত্রের লাগাতার আক্রমণের পালটা জবাব দেন নির্যাতিতার বাবা। তিনি বলেন, "উনি আসুন না একদিন। আমার ভাইয়ের মতো হবেন। কোনও সাজেশন থাকলে দিন। টাকার পিছনে আমি কোনওদিন দৌড়াইনি। যখন ১০ টাকা পুঁজি ছিল আমার, সেদিনও দৌড়াইনি। আজও দৌড়াইনি। এই কারণে ভগবান আপনাকে এমন সুন্দর একটা মেয়ে দিয়েছিল। সমাজ আমার মেয়েটাকে বাঁচতে দেয়নি। আমরা সুবিচার পাবই।" এদিন পুলিশ এবং সিবিআইয়ের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগরে দেন নির্যাতিতার বাবা।