shono
Advertisement

‘আমরাও সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি, কিন্তু মূর্তি ভাঙিনি’

সিপিএমের সঙ্গে মতাদর্শের মিল নেই, তবু এ কাজ সমর্থন করেন না মমতা। The post ‘আমরাও সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি, কিন্তু মূর্তি ভাঙিনি’ appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 03:23 PM Mar 06, 2018Updated: 11:56 AM Sep 14, 2019

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়াই করে ত্রিপুরায় ক্ষমতায় এসেছে গেরুয়া শিবির। আর তারপরই ভেঙে খান খান করে দেওয়া হয়েছে লেনিন মূর্তি। ঠিক তার পাশের রাজ্যেই বামেদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ লড়াইয়ের পর ক্ষমতায় এসেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিনের ঘটনায় তীব্র নিন্দা করে তিনি বলেন, সিপিএমের সঙ্গে আমার মতাদর্শগত মিল নেই। কিন্তু ক্ষমতায় এসে কেউ মনীষীদের মূর্তি ভাঙবে, তা কখনওই সমর্থন করি না।

Advertisement

 ‘লেনিন তো বিদেশি এবং আতঙ্কবাদী, ওঁর মূর্তি দেশে কেন?’ ]

এদিন বাঁকুড়ার পাত্রসায়রের জনসভায় মমতা বলেন যে, তিনি শুধু ভোটের সময় আসেন না। জেলায় যাতে ভাল কাজ হয়, সে কারণেই আসেন। সরকারি সাফল্যের খতিয়ান তুলে ধরে তিনি জানান, বাঁকুড়ায় তিনটি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল তৈরি করা হয়েছে। পলিটেকনিক কলেজ ও আইটিআই করা হয়েছে। আটটি কিষাণ বাজার করা হয়েছে। সংখ্যালঘু ও সাঁওতালদের উন্নয়নে জোর দেওয়া হয়েছে। জোর দেওয়া হয়েছে কন্যাশ্রী ও রূপশ্রী প্রকল্পেও। সেইসঙ্গে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেগে তিনি জানান, “দিল্লি সরকার বড় বড় কথা বলে। বলে, ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’। কিন্তু বরাদ্দ গোটা দেশে মোটে একশো কোটি টাকা। একটা কন্যা তাতে তিন টাকাও পাবে না। আর আমরা রাজ্যে শুধু পাঁচ হাজার কোটি টাকা দিয়েছি।” কেন্দ্রের সমালোচনার প্রসঙ্গেই তাঁর মুখে উঠে আসে ত্রিপুরার কথা। জানান, সরকারে এসেই কেউ তাণ্ডব করবে এটা কখনও সমর্থনযোগ্য নয়। বলেন, “আমি একটা সরকারে এসেছি। আমার কাজ নয় কাউকে খুন করা, কারও উপর হামলা করা বা কোনও মনীষীর মূর্তি ভেঙে দেওয়া। গান্ধীজি, নেতাজি, রবীন্দ্রনাথের প্রতি আমাদের যেমন সম্মান আছে, বিরসা থেকে কালাম সকলকেই আমরা সম্মান করি। কারণ আমরা সর্বধর্ম সমন্বয়ে বিশ্বাস করি।” ভাজপার তীব্র সমালোচনা করে মমতার তোপ, “তিনদিন আগেও তো টিমটিম করে জ্বলছিল। বাঁকুড়া, হাওড়ায় যা ভোটার আছে তার অর্ধেকও নেই ত্রিপুরায়। জোর জবরদস্তি করে দখল করেছে। টাকার জোর খাটিয়েছে।” তাঁর প্রশ্ন, একটা দল যখন জিতেছে, তখন সে উন্নয়নে মনোযোগী হবে। মূর্তি ভাঙবে কেন? তিনি বলেন, “আমরাও সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়াই করেই ক্ষমতায় এসেছি। আমরা কিন্তু পিঁপড়ের ডিমের মতো অত্যাচার করিনি। মার্কস, লেনিন আমার নেতা নয়। কিন্তু এক একটা দেশে তাঁদের গুরুত্ব আছে। যে যে পার্টিরই সমর্থক হোক না কেন, হামলা বাঞ্ছনীয় নয়। আমরা বলেছিলাম, বদলা নয়, বদল চাই।” এই প্রসঙ্গে মিডিয়াকেও একহাত নেন মমতা। তীব্র কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “এখন কি কেউ চোখে দেখতে পাচ্ছে না? নাকি মিডিয়াকে কিনে নেওয়া হয়েছে? ভেঙেচুরে তছনছ করে তাণ্ডব করা হচ্ছে। কোথাও প্রতিবাদ নেই। সিপিএমের সঙ্গে আমার আদর্শগত লড়াই আছে। কিন্তু বিজেপির অত্যাচার আমি সমর্থন করি না। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামে বামেদের অত্যাচারও সমর্থন করিনি। প্রতিবাদ তো কাউকেই করতেই। গণতন্ত্র মানে জোর দখল নয়। ক্ষমতায় এসেছ, উন্নয়নের কাজ করো। লড়াই করতে হলে উন্নয়ন দিয়ে করো। উন্নয়নের প্রতিযোগিতায় নাম লেখাও। গড়তে পারলে গড়ো, নইলে মানে মানে সরে পরো। হাতে দড়ি-কলসি ধরিয়ে দেবে জনগণ, তা নিয়ে কী করতে হবে সকলেই জানেন। এত ঔদ্ধত্য ভাল নয়।”

[  ত্রিপুরায় খান খান লেনিনের মূর্তি, টুইট করে বিতর্কে রাজ্যপাল তথাগত রায় ]

সিপিএমের সঙ্গে তাঁর চিরকালের লড়াই। তবু দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতির খাতিরেই মমতা চেয়েছিলেন ত্রিপুরায় ক্ষমতা দখল করুক সিপিএম। রাহুল গান্ধীর সঙ্গে বিকল্প জোটের প্রস্তাবও দিয়েছিলেন। যদিও তা বাস্তবায়িত হয়নি। তবু মমতা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। গতকালই পুরুলিয়ার জনসভা থেকে দিল্লি দখলের ডাক দিয়েছেন। আজ লেনিন মুর্তি ভাঙার তীব্র নিন্দা করে বুঝিয়ে দিলেন, বিজেপির বিরুদ্ধে তাঁর লড়াইয়ের মাত্রা বাড়বে বই কমবে না।

[  বুলডোজার দিয়ে ভাঙা হল লেনিনের মূর্তি, ত্রিপুরা জুড়ে আক্রান্ত বামেরা ]

The post ‘আমরাও সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি, কিন্তু মূর্তি ভাঙিনি’ appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement