shono
Advertisement

‘টোকে ওয়াইন’! প্রতি চুমুকেই নেশার চমক, তুঙ্গে চাহিদা

যৌবনের চাহিদায় বাজি বন্যপ্রাণ৷ The post ‘টোকে ওয়াইন’! প্রতি চুমুকেই নেশার চমক, তুঙ্গে চাহিদা appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 09:07 PM Oct 28, 2016Updated: 03:56 PM Oct 28, 2016

ব্রতীন দাস ও বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি:  ‘টোকে হুইস্কি’! নাকি ‘টোকে ওয়াইন’! প্রতি চুমুকেই নেশার চমক৷ আসর যত জমে উঠবে, শরীরে ততই বাড়বে উত্তেজনা৷ যৌবনের খিদে৷ শুধু কি তাই? তক্ষক চোবানো সুরায় আলসার, বাত, হাঁপানির মতো রোগ থেকেও না কি মুক্তি মেলে! দূর হয় মারণ রোগ ক্যানসারের আশঙ্কাও! চিকিৎসা বিজ্ঞান দ্বারা প্রমাণিত না হলেও শুধুমাত্র প্রচারের জোরেই কোটি কোটি ব্যবসা৷

Advertisement

পাচারকারীদের হাত ধরে হংকং, চিন, তাইওয়ানের পানশালার অতিথি গোল্ডেন তক্ষক কিংবা লেপার্ড তক্ষক৷ আর তার জেরে পাল্টে গিয়েছে সুরার ‘ব্র্যান্ড নেম’৷

কেমন করে তৈরি হচ্ছে ওই সুরা?

সরীসৃপটিকে বড় কাঁচের পাত্রে নামী কোম্পানির হুইস্কি অথবা ওয়াইনে চুবিয়ে রাখা হচ্ছে৷ যাকে ‘ম্যারিনেট’ করা বলে৷ কখনও দশ দিন৷ কখনও আবার এক মাস৷ এর পরই বোতলবন্দি সুরার নাম পাল্টে হচ্ছে ’টোকে হুইস্কি’ কিংবা ‘টোকে ওয়াইন’৷ আর তা বিকোচ্ছে চড়া দামে৷

বিভিন্ন তদন্তকারী সংস্থার রিপোর্ট, তক্ষকের মাংসের চাহিদা সবচেয়ে বেশি চিন, তাইওয়ান, হংকং এবং ভিয়েতনামে৷ ভিন্ন স্বাদের জন্য এই চারটি দেশের বাজারে ডুয়ার্স এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ‘টোকে গেকো’ প্রজাতির তক্ষকের কদর আকাশ ছোঁয়া হতেই বেড়েছে পাচার৷ চিনের রোস্তোরাঁয় রমরমিয়ে বিকোচ্ছে তক্ষকের কাবাব৷

২০০৯ সাল থেকেই উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছে যায় তক্ষক পাচার৷ ‘গ্লোবাল ওয়াইল্ড লাইফ মনিটরিং নেটওয়ার্ক’-এর সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, ২০১১ সালে শুধুমাত্র ইন্দোনেশিয়া থেকে ১.২ মিলিয়ন ‘ড্রাই’ তক্ষক রফতানি হয়৷ সম্প্রতি তাইওয়ানের চোরাকারবারিরা বিভিন্ন দেশ থেকে ১৫ মিলিয়ন তক্ষক সংগ্রহ করে৷ যার বেশিরভাগই বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে নেপাল, ভুটান ও মায়ানমার হয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং ডুয়ার্সের জঙ্গল থেকে পাচার হয়েছে৷

পরিস্থিতির কথা অস্বীকার করছেন না উত্তরবঙ্গের বনপাল (বন্যপ্রাণ) সুমিতা ঘটক৷ তিনি বলেন, “তক্ষক খুবই ছোট প্রাণী৷ ছোট বাক্সে পাচার হচ্ছে৷ বেশ কিছু উদ্ধারও হয়েছে৷ কিন্তু কে, কখন কোথায় ধরে পাচার করছে সেটা সব সময় টের পাওয়া যায় না৷ তবে শুনেছি চিনে প্রাণীটির উচ্চমূল্যের বাজার রয়েছে৷” এ বিষয়ে স্পষ্ট তথ্য রয়েছে ওয়াইল্ড লাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল ব্যুরোর কাছে৷

শুরুতে চিনে ক্যানসার, এডস, বাত, হাঁপানি-র ‘ট্রাডিশনাল’ ওষুধ তৈরির কাজে তক্ষকের দেহাংশ ব্যবহার হত৷ সরীসৃপটিকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় শুকিয়ে পাউডার, ক্যাপসুল তৈরি হচ্ছে৷ রাগ প্রতিরোধের জন্য চিন, ভিয়েতনাম, তাইল্যাণ্ড এবং মালয়েশিয়ার মতো দেশে সরাসরি তক্ষকের মাংস খাওয়ার প্রবণতাও বেড়ে গিয়েছে৷ ‘যৌবন ধরে রাখা’-র মতো প্রচারের চমকেও খদ্দের টানতে পানশালায় ঢুকে পড়ছে তক্ষক৷ নেশার তৃপ্তির সঙ্গে দুরারোগ্য রোগ মুক্তির আশায় নতুন প্রজন্মের মধ্যে একাধিক দেশেই রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে  ‘টোকে হুইস্কি’ এবং ‘টোকে ওয়াইন’-এর মতো ‘হট ড্রিংস’৷ বাড়ছে তক্ষকের চাহিদা৷

গোয়েন্দারা জেনেছেন, ২০০৯ সালের আগে মূলত জাভা থেকেই তক্ষক পাচার হত৷ কিন্তু যথেচ্ছ শিকারের ফলে সেখানে প্রাণীটি বিলুপ্তপ্রায় হতে পাচারকারীদের নজর পড়েছে ভারতে৷

The post ‘টোকে ওয়াইন’! প্রতি চুমুকেই নেশার চমক, তুঙ্গে চাহিদা appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement