সম্যক খান, মেদিনীপুর: কিশোরী মেয়ের চিকিৎসা ঠিকমতো হচ্ছে না, কোনওমতেই ভালো হচ্ছে না মেয়ে। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (Medinipur Medical College Hospital) ভর্তি কিশোরী মেয়ের চিন্তায় মন্ত্রীর পা জড়িয়ে কান্নাকাটি করেছিলেন বাবা, মা। চাইছিলেন মরণাপন্ন মেয়ের যাতে যথাযথ চিকিৎসা হয়। মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা (Birbaha Hansda) তাঁদের আবেগকে গুরুত্ব দিয়ে সুচিকিৎসার আশ্বাসও দেন। কিন্তু এত কিছুর পরও শেষরক্ষা হল না। রবিবার রাতে হাসপাতালেই মৃত্যু (Death) হল কিশোরীর। মন্ত্রীর আশ্বাসে যে মেয়েকে সুস্থ করে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন, সেই মেয়ের নিথর দেহের সামনে দাঁড়িয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন মা-বাবা। কিশোরীর মৃত্যুর পর রবিবার রাতেই হাসপাতালে সাময়িক উত্তেজনার পরিবেশ ছিল। তবে পরে তৃণমূল জেলা সভাপতির আশ্বাসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
মেদিনীপুরের ঝর্ণাডাঙার বাসিন্দা রিঙ্কু রায়। অ্যাপেনডিক্সের (Appendix) যন্ত্রণায় কাবু হয়ে পড়েছিল তাঁর কিশোরী মেয়ে। শুক্রবার সেই সমস্যা নিয়ে তাকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার রাত ও শনিবার সকালে দুবার অস্ত্রোপচার হয় ১৩ বছরের মেয়েটির। কিন্তু তার পরও শরীর ভালো হচ্ছিল না। তাকে আইসিইউতে (ICU) রাখা হয়। রবিবার সকালে রিঙ্কুদেবীকে জানানো হয়, মেয়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এর পরই কান্নাকাটি পড়ে তাঁর পরিবারে।
[আরও পড়ুন: নতুন বছর ব্রিগেড সমাবেশের অনুমতি পেল না DYFI, পরবর্তী পদক্ষেপ কী?]
এদিকে, রবিবার অন্য কয়েকজন রোগীকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা। তাঁকে কাছে পেয়ে হাত-পা ধরে মেয়ের সুচিকিৎসার আর্জি জানান রিঙ্কুদেবীর স্বামী। বলেন, “মেয়েটাকে বাঁচিয়ে দিন।” পরিবারের অভিযোগ, হাসপাতালে মেয়েটির সুচিকিৎসা হয়নি। তাঁদের এই অবস্থা দেখে বীরবাহা প্রথমে হতবাক হয়ে যান। পরে তিনি অভিভাবকদের জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা দেন। জানান, “আমি হাসপাতালে ঢুকে মেয়েটিকে দেখেছি। চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেছি। চিকিৎসা যাতে ভালো করে হয় তা নিয়েও কথা হয়েছে। মায়েদের অসহায়তা বুঝি আমি।”
[আরও পড়ুন: ভোররাতে ফোনে দেখা করার ‘টোপ’, প্রেমিকের গায়ে আগুন ধরিয়ে দিল যুবতী!]
কিন্তু মন্ত্রীর আশ্বাসের পরও শেষরক্ষা হল না। রবিবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ মৃত্যু হয় ওই কিশোরীর। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, চিকিৎসায় কোনও গাফিলতি হয়নি। অ্যাপেনডিক্সের ব্যথায় মেয়েটির শারীরিক অবস্থা অবনতি হওয়ার কারণেই অস্ত্রোপচার সত্ত্বেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। কিন্তু পরিবার সে কথা মানতে নারাজ। এনিয়ে রাতেই হাসপাতালে উত্তেজনা হয়। বিজেপি ও তৃণমূল নেতারা সেখানে যান। জেলা তৃণমূল সভাপতি সুজয় হাজরা জানান, সন্তানহারা পরিবারের পাশে রয়েছে দল। মৃত্যুর পিছনে ঠিক কার ত্রুটি, তা তদন্ত করে দেখা হবে।