shono
Advertisement

Gram Banglar Durga Puja: জঙ্গলে পাওয়া পিতলের মূর্তিতেই আরাধনা, ভিন্ন রীতিতে আজও দুর্গাপুজো হয় নাড়াজোল রাজবাড়িতে

এই পুজো ঘিরে রয়েছে বহু গল্প।
Posted: 02:25 PM Oct 16, 2023Updated: 03:01 PM Oct 16, 2023

শ্রীকান্ত পাত্র: শিকার করতে গিয়ে মায়ের দর্শন। এবং তাঁকে সাদরে ঘরে তুলে বরণ করে নেওয়া। দাসপুরের নাড়াজোল রাজবাড়ির আদিপুরুষ উদয়নারায়ণ ঘোষের সেই শিকারের গল্প এবং মায়ের স্বপ্নাদেশ ও পুজো শুরুর কথা এখনও ফেরে নাড়াজোলের মানুষের মুখে মুখে। সেটা ৮২০ বঙ্গাব্দ। এই পুজোই নিরবচ্ছিন্নভাবে আজও চলে আসছে নাড়াজোল রাজবাড়িতে।

Advertisement

শোনা যায়, নাড়াজোল রাজবাড়ির আদিপুরুষ বর্ধমান রাজার নায়েব উদয়নারায়ণ ঘোষ শিকার করতে নাড়জোলের জঙ্গলে এসেছিলেন। সন্ধের মুখে বাড়ি ফেরার পথে হঠাৎ তিনি দেখতে পান একটি বক তাড়া করছে একটি বাজপাখিকে। এই অভিনব দৃশ‌্য দেখে থমকে যান নায়েবমশাই। বাড়ি ফিরে আসেন। সেই দৃশ‌্যই তাঁকে তাড়া করে বেড়িয়েছিল সারা রাত। সেই রাতেই নায়েবমশাই স্বপ্ন দেখেন ওই জঙ্গলেই রয়েছে মা দুর্গার অষ্টধাতুর মূর্তি। পরদিন সকালে নায়েবমশাই জঙ্গলে গিয়ে পিতলের হাঁড়ির মধ্যে দেবী মূর্তি খুঁজে পেয়েছিলেন। প্রায় ছয় ইঞ্চি মাপের সেই অষ্টধাতুর মূর্তি সযত্নে বাড়িতে এনেছিলেন নায়েব উদয়নারায়ণ ঘোষ। আবার স্বপ্নাদেশ পান তিনি। এবার পুজোর নিদান দেন স্বয়ং দেবী। মায়ের সেই আদেশেই নায়েবমশাই নাড়াজোলে বাড়ি তৈরি করেন। সেই বছরই বাড়িতে চালু করেন দুর্গা পুজো। তিনিই নাড়াজোল রাজপরিবারের প্রতিষ্ঠাতা। বর্ধমান রাজার আনুকুল্যে সততার মূল‌্য হিসাবে নাড়াজোল-সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের জমিদারি লাভ করেন নায়েবমশাইয়ের। পেয়ে যান খান উপাধি। আজও নাড়াজোল রাজবাড়ির ঢোকার মুখে রয়েছে রাজবাড়ির জয়দুর্গা মন্দির। রয়েছে সেই অষ্টধাতুর মুর্তি যা আজও পুজো হয় ওই মন্দিরেই। তবে এই দেবীর সঙ্গে নেই লক্ষ্মী, সরস্বতী, বা কার্তিক গণেশ। মা চতুর্ভুজা। মায়ের পুজো হয় বৃহৎ নন্দীকেশ্বর মতে।

[আরও পড়ুন: দোকানে কৌটো বোমা! বিস্ফোরণের তীব্রতায় প্রায় ১৮ ফুট দূরে ছিটকে পড়লেন দম্পতি]

সাধারণ নিয়মে যে শারদীয়া পুজো হয় তার ১৫ দিন আগে থেকেই মায়ের পুজো শুরু হয়। এই মন্দিরের মা নিরামিষাশী। রাজপরিবারের বিশাল কাঁসার থালায় সাজিয়ে দেওয়া হয় ২৫ কিলো চালের নৈবেদ‌্য। ২৫ কিলো চালের মোয়া মুড়কি দিতে হয়। সঙ্গে বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি মিষ্টি চাঁদসাই আর লুচি। রাজা নেই তাতে কী। কিন্তু রাজপ্রথা তো রয়েছে। সেই প্রথা মেনে ষষ্ঠীতে রাজবাড়ির পদ্মদীঘিতে ঘট ভরতে যান পরিবারের সদস‌্যরা। দুই রাজপ্রহরী দুই হাতে তলোয়ার নিয়ে পাহারা দিয়ে নিয়ে যান তাঁদের। সপ্তমী থেকে দশমী পর্যন্ত জ্বলে হোমাগ্নি। আবার রাজবাড়ির প্রথা মেনেই মায়ের কাছে ব্রাত‌্য রাজ পরিবারের মহিলারা।

তাঁরা পুজোর কোনও কাজে অংশ নিতে পারেন না। দিতে পারেন না পুষ্পাঞ্জলি। বরাবরই তাঁরা ব্রাত‌্য এই পরিবারেরর দুর্গা পুজোয়। এমনকী মায়ের প্রসাদও নিতে পারেন না রাজবধূরা। পুরোহিতরাও মায়ের প্রসাদ নিতে পারেন না। এটাই রাজপরিবারের প্রথা। যা চলে আসছে বহু বছর ধরে। রাজবাড়ির প্রথা মেনে মায়ের বিসর্জনও হয় না। রাজ পরিবারের বিশ্বাস মন্দিরের দেবী মা খুবই জাগ্রত। পরিবারের সদস‌্য সন্দীপ খান বলেন, “অষ্টধাতুর দেবী মূর্তিটি তিনবার চুরি হয়ে যায়। কিন্তু দুষ্কৃতিরা মাকে কোথাও নিয়ে যেতে পারেনি। তারাই আবার বাড়ির কাছাকাছি জায়গায় ফেলে রেখে গিয়েছিল। মা নিজেই আমাদের স্বপ্নাদেশ দিয়ে সন্ধান দিয়েছিলেন। আমরা তাঁকে ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে আসি। মা জাগ্রত বলেই এটা সম্ভব হয়েছে।”

[আরও পড়ুন: দম্পতিকে আত্মহত্যায় ‘প্ররোচনা’, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে আদালতে হাজিরা ‘অভিযুক্ত’ TMC নেতার]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup রাজধানী এক্সপ্রেস toolbarvideo ISL10 toolbarshorts রোববার