সংগ্রাম সিংহরায়, শিলিগুড়ি: জিটিএ প্রশাসনিক বোর্ডের মেয়াদ আরও ছ’মাস বাড়ানো হলেও ডিসেম্বরেই নির্বাচন চাইলেন বোর্ডের বর্তমান চেয়ারম্যান বিনয় তামাং। এই মর্মে রাজ্য সরকারের কাছে একটি আবেদন জানিয়েছেন তিনি। বিনয় আশাবাদী, নির্বাচন হলে জয় হবে তাঁদেরই৷ আপাতত রাজ্যের তরফে বোর্ডের মেয়াদ বর্ধিত করা হয়েছে মার্চ পর্যন্ত৷ তবে তাঁর আগেই নির্বাচন চেয়ে নিজের রাজনৈতিক আত্মবিশ্বাস পরিষ্কার করে দিয়েছেন তিনি৷ এদিন বিনয় বলেন, “আমরা বর্তমান বোর্ডের মেয়াদ ছ’মাস বাড়াতে বলিনি। রাজ্যের তরফেই তা বাড়ানো হয়েছে। আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। তাই নির্বাচনে জিতে বোর্ডে আসতে চাই৷”
এর আগে ২০১৭ এর সেপ্টেম্বর মাসে তৎকালীন জিটিএ প্রধান বিমল গুরুংয়ের নেতৃত্বে জিটিএ বোর্ডের বেশিরভাগ সদস্য পদত্যাগ করেন৷ তারপরই পাহাড়ে উন্নয়নের স্বার্থে প্রশাসনিক বোর্ড তৈরি করে চেয়ারম্যান করা হয় বিনয় তামাংকে। সেই বোর্ড এক বছর সাফল্যের সঙ্গে কাটিয়ে দিয়েছে৷ বোর্ড পরিচালনার পাশাপাশি সংগঠনও গুছিয়ে নিয়েছেন৷
[নিজের বাড়িতেই শিশুর রহস্যমৃত্যু, কারণ নিয়ে ধোঁয়াশায় তদন্তকারীরা]
অন্যদিকে, রাজ্যের তরফে জিটিএর মেয়াদ আরও ছ’মাস বাড়ানোর সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অন্তরালে থাকা প্রাক্তন মোর্চা সুপ্রিমো বিমল গুরুংও। পাশাপাশি জিএনএলএফ ফের ষষ্ঠ তফসিল চালু করার দাবিতে পৃথকভাবে আন্দোলন সংগঠিত করার চেষ্টা করছে বলে পাহাড়ে খবর রটেছে৷ ফলে, নির্বাচনের আগে ফের পাহাড় তপ্ত হতে পারে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা৷ তবে, নির্বাচনে বিনয় তামাং নিজে আত্মবিশ্বাসী হলেও তার জয়ের পথ যে সুগম হবে না তা পরিষ্কার৷ বোর্ড পরিচালনার কারণে পাহাড়ের রাজনীতিতে বেশ খানিকটা এগিয়ে বিনয় শিবির৷ বিনয়ের সঙ্গে শাসক দল তৃণমূলের সমর্থন যেমন রয়েছে, তেমনি গোর্খা লিগ, সিপিএমের মতো দলগুলি নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়ে চলছে৷ তবে অন্য রাজনৈতিক দলগুলির তরফে কোনওরকম বিরোধিতা দেখানো না হলেও মনে করা হচ্ছে বিনয় শিবিরে আস্থা দেখাবে তারা৷
[বাড়িতে মন টেকে না, ঘর পালানো নাবালককে ফেরাল পুলিশ]
এদিকে আড়াল থেকে বিমল গুরুংয়ের ক্ষোভকে আমল দিচ্ছেন না বিনয়৷ ২০১৭–এর সেপ্টেম্বর পৃথক রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন তীব্র করার জন্য তৎকালীন জিটিএ প্রধান বিমল গুরুং-সহ সমস্ত জিটিএ সদস্যরা পদত্যাগ করেন৷ ফলে মাঝপথে দায়িত্ব ছাড়ায় বিপাকে পড়তে হয় জিটিএ বোর্ডকে৷ ফলে, প্রশাসনিক কাজ চালানোর প্রয়োজনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হস্তক্ষেপে নয়া বোর্ড তৈরি হয়৷ তার প্রধান করা হয় স্থানীয় জনপ্রিয় নেতা বিনয় তামাংকে৷ তার সঙ্গে, যাঁরা বিমল গুরুংয়ের সংসর্গ ত্যাগ করে মূলস্রোতে ফিরতে চেয়েছিলেন, তাঁদের সবাইকেই বিভিন্ন ভাবে যুক্ত করা হয় বোর্ডের সঙ্গে৷ এরপর থেকেই রাজ্যের সঙ্গে সহযোগিতা করে কাজ করতে থাকে মোর্চা নেতারা। পাহাড়ে একের পর এক উন্নয়নের কাজ শুরু হয়। স্কুল থেকে শুরু করে বিভিন্ন কারিগরি শিক্ষা, পর্যটন ও আতিথেয়তার ব্যবসায় লগ্নি করতে এগিয়ে আসেন দেশ-বিদেশের একাধিক বিনিয়োগকারীরা৷ রাজ্যের তরফেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া হয়৷ সম্প্রতি দার্জিলিংয়ের মংপুতে পাহাড়ের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিলান্যাস করা হয়৷
The post ডিসেম্বরেই জিটিএ নির্বাচন চান আত্মবিশ্বাসী বিনয়, পালটা হুঁশিয়ারি গুরুংয়ের appeared first on Sangbad Pratidin.
