সম্যক খান, মেদিনীপুর: সুপ্রিম নির্দেশের পর স্কুলে নেই পিয়ন, নেই ক্লার্কও। গত দু-তিনদিন স্কুল ছুটি থাকায় সেভাবে কোনও সমস্যা হয়নি। কিন্তু সোমবার অর্থাৎ আগামিকাল থেকে গোয়ালতোড়ের পিংবনি হাই স্কুলের ঘণ্টা বাজাতে হবে স্কুলের প্রধান শিক্ষককে। আবার জরুরি কোনও নোটিস ক্লাসে ক্লাসে পৌঁছতে হলেও ভরসা সেই প্রধান শিক্ষক নয়তো অন্য কোনও সহকারি শিক্ষক। কীভাবে কী হবে ভেবেই কুলকিনারা পাচ্ছেন না প্রধান শিক্ষক।
পশ্চিম মেদিনীপুরের গোয়ালতোড়ের পিংবনি হাই স্কুলে শিক্ষক শিক্ষিকার অনুমোদিত পদ ২৫ টি। কিন্তু বর্তমানে ছিলেন ২২ জন। ৩ টি শূন্যপদ অনেক আগে থেকেই আছে। সুপ্রিম নির্দেশে স্কুলের মোট ৯ জনের চাকরি চলে গিয়েছে। তাদের মধ্যে ছয়জন শিক্ষক-শিক্ষিকা আর তিনজন শিক্ষাকর্মী। যে ছয়জন শিক্ষকের চাকরি গিয়েছে তাদের মধ্যে তিনজন শিক্ষিকা। সংস্কৃত, নিউট্রিশন ও বাংলা পড়াতেন তাঁরা। অপরদিকে বায়োলজি, পিওর সায়েন্স এবং অঙ্ক বিভাগের শিক্ষকের চাকরিও গিয়েছে। এই মুহুর্তে বিদ্যালয়টিতে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক শূন্য হয়ে গিয়েছে বায়োলজি এবং কেমিষ্ট্রি। অপরদিকে যে তিনজন শিক্ষাকর্মীর সুপ্রিম নির্দেশে চাকরি গিয়েছে তাদের মধ্যে একজন ছিলেন ক্লার্ক আর দুজন গ্রুপ ডি। এই গ্রুপ ডি-র মধ্যে আবার একজন মেট্রন। শিক্ষাকর্মী এই তিনজনেরই চাকরি চলে যাওয়ায় সবথেকে বেশি বিপদে পড়ে গিয়েছে স্কুলটি।
প্রধান শিক্ষক প্রলয় বন্দোপাধ্যায়ের কথায়, হেড মাস্টার-সহ ১৬ জন শিক্ষক শিক্ষিকাকে নিয়ে তাও কষ্ট করে ক্লাস করে নেওয়া যাবে। ইতিমধ্যে তারা ঠিকই করেছেন যে দুটো ক্লাসকে যুক্ত করে ক্লাস করাবেন। সমস্যা হবে বিষয়ভিত্তিক শূন্য টিচার নিয়ে। কিন্তু সবথেকে বেশি সমস্যা দেখা দেবে ঘণ্টা দেওয়া, জল আনা-এসব ক্ষেত্রে। মাধ্যমিকের রেজাল্ট বের হলে সামনেই একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি। তার উপর মিড-ডে মিল থেকে শুরু করে নানান হিসেব নিকেশের বিষয় রয়েছে। ক্লার্ক, গ্রুপ ডি কর্মী না থাকলে প্রবল সমস্যা। জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ সবকিছুই করতে হবে প্রধান শিক্ষককে। তার উপর স্কুলের আর্থিক তহবিলও তেমন সমৃদ্ধ নয় যে আউট সোর্সিং করে আপাতত কাজ চালিয়ে নেবেন। ফলে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে বঞ্চিত টিচার অ্যাসোসিয়েশনের সভায় মুখ্যমন্ত্রী কী বার্তা দেন তার দিকেই তাকিয়ে প্রধান শিক্ষক।