ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: এবার ডেঙ্গুর (Dengue) তথ্য নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত শুরু হল। কেন্দ্রের দাবি, ডেঙ্গু সংক্রান্ত তথ্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে ঠিকমতো পাঠানো হচ্ছে না। সেই কারণে কেন্দ্র সাহায্য করতে চাইলেও তা পারা যাচ্ছে না। এভাবে তথ্য গোপন করলে কোনও সাহায্য করা মুশকিল বলেও স্বাস্থ্যমন্ত্রকের (Ministry of Health) তরফে উষ্মাপ্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রের এই অভিযোগ এবার সরাসরি উড়িয়ে দিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা স্বয়ং। তিনি পালটা তথ্য দিয়ে জানালেন, সপ্তাহে সপ্তাহে জেলাওয়াড়ি তথ্য পাঠানো হয় দিল্লিতে। শুধু ডেঙ্গু নয়, সমস্ত রোগের তথ্যই সুনির্দিষ্ট পদ্ধতিতে পাঠায় পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) স্বাস্থ্যদপ্তর, যা অন্য যে কোনও রাজ্যের ক্ষেত্রে প্রায় হয় না বললেই চলে।
রাজনৈতিক তরজা নয়, ডেঙ্গু নিয়ে এবার প্রকাশ্য সংঘাতে জড়াল কেন্দ্র ও রাজ্যের সরকার। তথ্য ঠিকমতো দেওয়া হচ্ছে না বলে অসহযোগিতা নিয়ে কেন্দ্রের তোলা সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ সিদ্ধার্থ নিয়োগী। তিনি সাফ জানালেন, কেন্দ্রের অভিযোগ একেবারেই ঠিক নয়। শুধু ডেঙ্গু কেন, রাজ্য সরকার কোনও রোগের তথ্যই গোপন করে না। প্রতি সপ্তাহে জেলার স্বাস্থ্যবিভাগের সঙ্গে বৈঠক করে তথ্য সংগ্রহ করে স্বাস্থ্যভবন (Swasthya Bhaban)। তথ্য পাওয়া যায় ব্লক স্তর থেকে। তারপর তা একত্র করে বিভিন্ন বিভাগ অনুযায়ী ডেটা ব্যাংক তৈরি হয়। সেটাই পাঠানো হয় দিল্লিতে। ডাঃ সিদ্ধার্থ নিয়োগীর আরও দাবি, এতটা গুছিয়ে কেন্দ্রের কাছে তথ্য পাঠানোর কাজ অন্য কোনও রাজ্য করে না।
[আরও পড়ুন: অনুব্রত-সুকন্যার পঞ্চম লটারির হদিশ পেল সিবিআই! অ্যাকাউন্টে ঢুকেছিল ৫০ লক্ষ টাকা]
করোনা কালেও এ রাজ্যের স্বাস্থ্যদপ্তরের বিরুদ্ধে তথ্য গোপনের অভিযোগ উঠেছিল। মহামারী মোকাবিলায় রাজ্যের পরিকাঠামো নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়। কিন্তু তারপর কেন্দ্রের প্রতিনিধিদল পরিস্থিতি পরিদর্শনে এসে করোনা মোকাবিলায় রাজ্যের পরিকাঠামোর প্রশংসা করে গিয়েছেন। ফলে কেন্দ্রের অভিযোগ ধোপে টেকেনি। এবার ডেঙ্গুর ক্ষেত্রেও একই অভিযোগ ওঠায় রীতিমত ক্ষুব্ধ স্বাস্থ্য প্রশাসন। কেন্দ্রকে জবাব দিতে তাই নিজেই সরব হলেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী।
[আরও পড়ুন: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি: জামাই কল্যাণময়ের মাধ্যমে দুর্নীতির ৫০ কোটি টাকা পাচার পার্থর, দাবি ইডির]
প্রসঙ্গত এই মুহূর্তে রাজ্যের ডেঙ্গু পরিস্থিতি যথেষ্ট উদ্বেগজনক। পাঁচ, ছ’টি জেলায় রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তর প্রতিনিধি পাঠিয়েছে। ফি দিনই এক, দু’জনের মৃত্যুর খবর মিলছে। শুক্রবারও একজনের মৃত্যু হয়েছে। আর এই তথ্য নিয়েই কেন্দ্র-রাজ্যর মধ্যে সমন্বয়ের সমস্য়া হচ্ছে বলে খবর। রাজ্যের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গিতে মৃত্য়ু হয়েছে ৮ জনের। কেন্দ্রের দাবি, এই সংখ্যা ৭০ ছাড়িয়েছে। অন্যদিকে, আক্রান্তের হিসেব রাজ্যের তথ্য অনুযায়ী ৫২ হাজারের বেশি। অথচ কেন্দ্রের কাছে পাঠানো সংখ্য়া ৫৯২। এ নিয়ে দুপক্ষের চাপানউতোর। সূত্রের খবর, হিসেবের গরমিল মেটাতে দু’পক্ষের প্রতিনিধিরা বৈঠকে বসতে পারেন।