রাজকুমার কর্মকার, আলিপুরদুয়ার: শিক্ষা নিলেন আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী। গাড়ি, নিরাপত্তারক্ষী ছেড়ে একেবারে আমজনতার সঙ্গে জনসংযোগে সামিল হলেন বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী। অনেক দিনের পুরনো ঠেক কলেজ হল্টে মঙ্গলবার দুপুরে আড্ডায় মাতলেন তিনি। শাসকদলের প্রভাবশালী নেতার ইমিজে ঝেড়ে ফেলে, সকলের প্রিয় ‘গুটিস দা’র হয়ে উঠলেন জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূলের সভাপতি।
[ আরও পড়ুন: গ্রামাঞ্চলে ‘রাম’ নামের মাহাত্ম্যেই ভোট বৃদ্ধি বিজেপির, সমীক্ষায় মিলল চমকপ্রদ তথ্য]
মঙ্গলবার কলেজ হল্টের ঠেকে আসার সঙ্গে সঙ্গে সকলেই সাদরে আহ্বান করেন সৌরভ চক্রবর্তীকে। আড্ডায় বসে আমের জুস ও চিপস সকলের সঙ্গে ভাগ করে খান এলাকার বিধায়ক। সেই সঙ্গে চলে তুমুল আড্ডা ও রাজনৈতিক চর্চা৷ সৌরভ চক্রবর্তী জানান, “অনেক জায়গাতে ইভিএমের কারচুপির নানান বিষয় এখন প্রকাশ্যে আসছে। জয়ী হওয়ার পর অনেক জায়গাতে বিজেপি অকথ্য সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করেছে। এই সবকিছুর তীব্র নিন্দা করছি। কিন্তু এই ফলাফল আমাকে সর্বপরি খুব মর্মাহত করেছে। আমি আবার মাথা নত করে মানুষের কাছে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার ও আমার দলের কোনও ভুল হলে, মানুষ যেন তা ক্ষমা করেন। এই পরিস্থিতি থেকে আমাদের ঘুরে দাঁড়াতেই হবে।”
[ আরও পড়ুন: গুরুংয়ের নেতৃত্ব স্বীকার করলেও, রোশন গিরিকে দূরেই ঠেলে দিচ্ছেন পাহাড়বাসী ]
আলিপুরদুয়ারের ছেলে হলেও, সৌরভ চক্রবর্তী দীর্ঘদিন কলকাতায় রাজনীতি করেছেন। প্রথমে ছাত্র পরিষদ, পরে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি হন তিনি। কিন্তু দলনেত্রীর নির্দেশে ফের আলিপুরদুয়ারে ফিরে যান৷ এক সময় রাজ্য রাজনীতি কাঁপানো দামাল ছেলে সৌরভ, আলিপুরদুয়ারে ‘গুটিস দা’ নামেই পরিচিত। আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক ছাড়াও শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি উন্নয়ন পর্ষদের সভাপতি, জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি একাধিক পেয়েছেন সৌরভ চক্রবর্তী। পেয়েছেন নিরাপত্তার বলয়৷ ফলে ধীরে ধীরে সাধারণ মানুষের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় তাঁর৷ যে শহরে তিনি বড় হয়েছেন, সেই শহরের মানুষদের মধ্যেও নানান প্রশ্ন ওঠে তাঁকে নিয়ে। যার প্রভাব পড়ে লোকসভার ফলাফলেও৷ সেই থেকে শিক্ষা নিয়েই মঙ্গলবার সাধারণ মানুষের দ্বারস্থ হন সৌরভ চক্রবর্তী৷
[ আরও পড়ুন: বৃদ্ধা মাকে স্কুটারে চাপিয়ে তীর্থে এ যুগের ‘শ্রবণকুমার’ ]
এদিন আচমকা গুটিস’কে কাছে পেয়ে অবাক হয়ে যান অনেকেই। কলেজ হল্টের সেই আড্ডাতেই বসে ছিলেন আইএনটিটিইউসির আলিপুরদুয়ার টাউন ব্লকের সভাপতি মনোজ নন্দী বলেন, “গুটিস ভদ্র উচ্চশিক্ষিত গন সংগঠক৷ ওঁ চাইলেই আলিপুরদুয়ারের রাজনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটতে পারে। ওঁর গ্রহনযোগ্যতা অন্য অনেক নেতার থেকে বেশি। যে ভুলটা ওঁর পক্ষে বোঝা সম্ভব হয়েছে, সেটা অনেকে বুঝতেই পারবেন না।’’ তবে সৌরভ চক্রবর্তীর এই ভূমিকাকে নাটক বলে সমালোচনা করেছে বিজেপি।
The post নির্বাচনে খারাপ ফলাফলের জের, নিরাপত্তা ছেড়ে জনসংযোগে ব্যস্ত আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক appeared first on Sangbad Pratidin.
