shono
Advertisement

Breaking News

8 মাস পর কোমা থেকে জাগাল রাগসংগীত, মিউজিক থেরাপিতে সুস্থতার পথে মালদহের মহিলা

গান গেয়েও মানুষকে বাঁচানো যায়! The post 8 মাস পর কোমা থেকে জাগাল রাগসংগীত, মিউজিক থেরাপিতে সুস্থতার পথে মালদহের মহিলা appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 09:45 AM Aug 11, 2019Updated: 09:45 AM Aug 11, 2019

অভিরূপ দাস: চোখের পাতা পড়ত না। নড়ত না হাত-পা। আসবাবপত্রের মতো স্থবির হয়ে গিয়েছিলেন মধ্যবয়সি মহিলা। টানা ১২২ দিন কোমায় থাকার পর ঘুম ভাঙিয়ে দিল রাগসংগীত।

Advertisement

[আরও পড়ুন: আরামবাগে ঝোপ থেকে উদ্ধার তৃণমূল কর্মীর দেহ, উঠছে খুনের অভিযোগ]

মালদহের বছর পঁয়তাল্লিশের বেরাফুল বিবির প্রায়ই মাথা ব্যথা করত। প্রথমটায় তেমন গা করেননি। কিন্তু তা থেকেই যে এমনটা হয়ে যাবে কে জানত। মাথার ভিতর ক্রমাগত রক্তক্ষরণ, চিকিৎসা পরিভাষায় একে বলে ‘অ্যানুরিজম ব্লিডিং’। এ বছরের শুরুতে আচমকাই রক্তনালি ফেটে গিয়ে সংজ্ঞা হারান তিনি। বাড়ি থেকে তাঁকে তড়িঘড়ি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা।
প্রথমটায় চিকিৎসক ভেবেছিলেন গ্যাসের কারণেই জ্ঞান হারিয়েছেন তিনি। ওষুধ দিয়ে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু বাড়িতে এসে বাথরুমে ফের পড়ে যান বেরাফুল। কথা বলতে পারছিলেন না। পরিবারের লোকেরা বুঝতে পারেন, শরীরের অভ্যন্তরে ভয়ংকর কিছু হয়ে গিয়েছে। অ্যাম্বুল্যান্সে করে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়। শীঘ্র তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় পার্কসার্কাসের বেসরকারি স্নায়ুরোগের হাসপাতালে। ততক্ষণে হাত-পা নাড়ানো বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ৬ জানুয়ারি অস্ত্রোপচার হয় তাঁর। মাথার জমাট বাঁধা রক্ত বের করা হয়। কিন্তু কোথায় কী? অপারেশনের পরেও হৃদয়ের ধুকপুকানি ছাড়া প্রাণের চিহ্ন ছিল না শরীরে। বেরাফুল বিবির স্বামী মহম্মদ এনামুল হক জানিয়েছেন, কাঠের গুঁড়ির মতোই পড়ে থাকতেন তাঁর স্ত্রী। নড়াচড়া তো দূরের কথা, চোখ খুলতে পারতেন না। তবে কি সারাজীবন এরকম জড়বস্তুর মতোই থেকে যাবেন স্ত্রী? এনামুল জানিয়েছেন, “স্ত্রীকে নিয়ে একসময় ভেলোর যাওয়ার কথা স্থির করি। কিন্তু হাসপাতালের নিউরো রিহ্যাব বিভাগের চিকিৎসক ডা. সুপর্ণ গঙ্গোপাধ্যায় আমায় ধৈর্য ধরতে বলেন।”
এরপর লড়াই শুরু। ১২২ দিনের মিউজিক থেরাপি। সঙ্গে কোমা স্টিমুলেশন প্রোগ্রাম। শত ডাকাডাকিতেও যিনি ফিরে তাকাতেন না, তিনিই আজ নিজের হাতে দুধ-পাউরুটি খান। ওয়াকারে ভর দিয়ে হাঁটছেনও। কলকাতায় দীর্ঘতম কোমা ভাঙিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন ডা. সুপর্ণ গঙ্গোপাধ্যায়। কী করে তা সম্ভব হল? ডা. গঙ্গ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “মিউজিক থেরাপি আর কোমা স্টিমুলেশন প্রোগ্রাম এই দুই ক্রাচে ভর দিয়েই আর পাঁচজনের মতোই হাঁটতে পারছেন বেরাফুল বিবি।

[আরও পড়ুন: বাড়ছে জনসচেতনতা, পুরুলিয়ায় প্রশাসনের কর্তাদের বসিয়ে পাঠ দিলেন মহিলারা]

মিউজিক থেরাপিতে দীর্ঘদিন রাগসংগীত শোনানো হয় রোগীকে। টানা এই প্রক্রিয়ায় আস্তে আস্তে শ্রবণেন্দ্রিয়ের সক্রিয়তার মাধ্যমে রোগী চাঙ্গা হতে থাকেন। এছাড়াও রয়েছে একগুচ্ছ কোমা স্টিমুলেশন প্রোগ্রাম। স্থির হয়ে যাওয়া চোখের মণির উপরে আলো ফেলে মণির নড়াচড়া বাড়ানো হয়। স্পিচ থেরাপির মাধ্যমে আস্তে আস্তে কথা বলে রোগী। কোমা স্টিমুলেশন প্রোগ্রামে ধীরে ধীরে ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়কে কাজের মধ্যে ফিরিয়ে আনা হয়। কোনও মারাত্মক স্ট্রোকের পর রোগী সাধারণত চলাফেরার ক্ষমতা হারান। শল্য চিকিৎসকের কাজ থাকে অপারেশনের টেবিল পর্যন্তই। রোগীর পরবর্তী দায়িত্ব থাকে রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের উপরেই। ডা. গঙ্গোপাধ্যায় বলছেন, “রোগীর পরিবার ধৈর্য না ধরলে এমনটা সম্ভব হত না।” শেষে সংগীতই উজ্জীবিত করে তুলল স্থবির নারীকে৷

The post 8 মাস পর কোমা থেকে জাগাল রাগসংগীত, মিউজিক থেরাপিতে সুস্থতার পথে মালদহের মহিলা appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement