shono
Advertisement

Breaking News

Ajodhya hill

১৪ বছরের বনবাস শেষ! ফেসবুকে অযোধ্যা পাহাড়ের ছবিতেই ফিরল স্মৃতি, ঘরে ফিরল পুরুলিয়ার যুবক

স্ত্রী ফিরে পেলেন স্বামী। বৃদ্ধা মা পেলেন ছেলেকে।
Published By: Paramita PaulPosted: 08:30 PM Mar 04, 2025Updated: 08:33 PM Mar 04, 2025

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: এক যুগেরও বেশি সময়। ১৪টা বছর। ফেসবুকে অযোধ্যা পাহাড় ও পাহাড়তলির ছবি-ই ঘরে ফিরিয়ে আনল একদা মানসিক ভারসাম্যহীন যুবককে। স্ত্রী ফিরে পেলেন স্বামী। বৃদ্ধা মা পেলেন ছেলেকে।

Advertisement

তখন ১৪ বছর আগেকার কথা। প্রায় ২০ বছর বয়সের কৃষ্ণকান্ত মাহাতো। বাড়ি পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়তলির বাঘমুন্ডির লহরিয়া শিবমন্দিরের কাছে। সবে বছরখানেক আগে বিয়ে করেন। মানসিক ভারসাম্যহীন থাকায় কোনওভাবে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যান। পরিবারের লোকজন অনেক খোঁজাখুঁজি করেন। থানা-পুলিশও হয়। কিন্তু কৃষ্ণকান্তকে খুঁজে পায়নি পরিবার। তিনি যে এ জেলা, রাজ্য ছাড়িয়ে কোনভাবে রাজস্থানে চলে গিয়েছিলেন। কীভাবে এতটা পথ? দীর্ঘ সময়? সে সব আর সঠিকভাবে মনে পড়ে না কৃষ্ণকান্তর। বাংলা ভাষায় কথা বলাও একপ্রকার ভুলে গিয়েছেন। তবে বাড়ি এসে খুশি তিনি। খুশি স্ত্রী, বৃদ্ধা মা-সহ পরিবার।

হিন্দিতেই কথা বলতে থাকেন কৃষ্ণকান্ত। বাংলা অনুবাদে, "আমি কীভাবে রাজস্থানে গিয়েছি তা আর মনে নেই। জয়সলমীর এলাকায় এখন একটি হোটেলে কাজ করি। আমাদের হোটেল মালিকের মোবাইলে অযোধ্যা পাহাড়, বাঘমুন্ডির লহরিয়া শিব মন্দিরের ছবি দেখে বাড়ির কথা মনে পড়ে যায়। মনে পড়ে যায়, এখানেই থাকতাম আমি। বাড়ির সবাইকে পেয়ে খুব ভালো লাগছে।" কিন্তু কৃষ্ণকান্ত বাড়ি ফিরলেন কীভাবে?

এই বাঘমুন্ডি থানা এলাকার বাসিন্দা, পেশায় শিক্ষক জনার্দন মাহাতো। তিনি বরাবর তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে অযোধ্যা পাহাড়কে নানাভাবে তুলে ধরেন। সেই অযোধ্যা পাহাড়, পাহাড়তলিতে বাঘমুন্ডির লহরিয়া শিব মন্দিরের ছবি প্রথমে দেখেন কৃষ্ণকান্তের হোটেল মালিক। পরে তা নজরে পড়ে কৃষ্ণকান্তের। তিনি হোটেল মালিককে তার বাড়ির কথা বললে তিনি ওই শিক্ষক জনার্দনবাবুর ম্যাসেঞ্জারে সমগ্র বিষয়টি জানিয়ে তার ফোন নম্বর চান। এলাকার বাসিন্দা জয়ন্ত মাহাতো বলেন, "এভাবেই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ হয়ে যায় কৃষ্ণকান্তের। ওঁর নাম যে কৃষ্ণকান্ত তা আমরা জানতাম না। আমরা জানতাম কান্দু। কৃষ্ণকান্তের সঙ্গে তার পরিবারের যোগাযোগ হওয়ার পর ওই এলাকার এক প্রাক্তন সেনা আধিকারিক নিশীথকুমার মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলাপ হয়। কৃষ্ণকান্ত উদ্ধারে তিনি ভীষণভাবে সহযোগিতা করেন।"

১৪ বছর পর স্বামীকে পেয়ে চোখে আনন্দাশ্রু স্ত্রী রমলাদেবীর। তিনি বরাবর আশাবাদী ছিলেন, স্বামী তার কাছে ফিরবেই। তাই নিয়ম করে শাঁখা, সিঁদুর পড়তেন। শ্বশুর বাড়িতে থেকে ঘর সংসার করতেন। স্ত্রী-র কথায়, "একবারের জন্যও মনে হয়নি ও বাড়ি আসবে না। তবে অনেক খোঁজাখুঁজি করেছি। স্বামীকে পাইনি। কিন্তু বিশ্বাস ছিল একদিন ও বাড়ি ফিরে আসবেই।" এখন অনেকটাই সুস্থ কৃষ্ণকান্ত। স্ত্রী, পরিবারকে নিয়ে চোখে মুখে সুখের সংসারের স্বপ্ন!

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • ফেসবুকে অযোধ্যা পাহাড় ও পাহাড়তলির ছবি-ই ঘরে ফিরিয়ে আনল একদা মানসিক ভারসাম্যহীন যুবককে।
  • স্ত্রী ফিরে পেলেন স্বামী। বৃদ্ধা মা পেলেন ছেলেকে।
  • স্ত্রী ফিরে পেলেন স্বামী। বৃদ্ধা মা পেলেন ছেলেকে।
Advertisement