গৌতম ব্রহ্ম: অঙ্ক কষেই বাজিমাত! রাজ্য সরকারের কোষাগারে ফেরত এল ১০৭২ কোটি টাকা! অর্থবর্ষের শেষে এই লক্ষ্মীলাভে বেজায় খুশি নবান্ন (Nabanna)। বাংলা শস্য বিমা যোজনা। মুখ্যমন্ত্রীর মস্তিষ্কপ্রসূত এই প্রকল্পের সঙ্গে কেন্দ্রের কোনও সম্পর্ক নেই। পুরো প্রিমিয়ামটাই দেয় রাজ্য সরকার। চাষিকে এক পয়সাও দিতে হয় না। এই রাজ্যে বিমার (Insurance) আওতাভুক্ত প্রায় ৭০ লক্ষ কৃষক। এই খাতেই অঙ্ক কষে প্রিমিয়ামের একটা বড় অংশ বিমা কোম্পানির ঘর থেকে ফেরত নিয়ে এল রাজ্যের কৃষি দপ্তর। কেন্দ্রীয় বঞ্চনায় তৈরি হওয়া টানাটানির সংসারে এই প্রাপ্তিকেই বড় করে দেখছে নবান্ন।
শস্য বিমার বিষয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে গাঁটছড়া রয়েছে অ্যাগ্রো ইন্সিওরেন্স কোম্পানি অফ ইন্ডিয়া (এআইসিএল)-র। শর্ত অনুযায়ী প্রিমিয়াম ও ক্ষতিপূরণ বাবদ দেয় অর্থের আনুপাতিক অঙ্ক কষে এই টাকা বিমা সংস্থার থেকে ফেরত পাওয়ার কথা। এই শর্তেই বৃহস্পতিবার নবান্নের লক্ষ্মীলাভ হচ্ছে। ৫৫০ কোটি টাকা ফেরত আসছে বিমা কোম্পানির থেকে। যা প্রশাসনিক মুন্সিয়ানা বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
[আরও পড়ুন: কুসংস্কারের বলি! ক্যানসার আক্রান্ত শিশুকে গঙ্গায় চোবালেন বাবা-মা, শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মৃত্যু]
জানা গিয়েছে, এই নিয়ে তিনবার প্রিমিয়ামের একটা অংশ ফেরত পেল নবান্ন। প্রথম বার ৪৭৯ কোটি টাকা। দ্বিতীয়বার ৪৩ কোটি টাকা। আর এবার সবচেয়ে বেশি। ৫৫০ কোটি টাকা। সবমিলিয়ে ১০৭২ কোটি টাকা। এমনটাই জানিয়েছেন রাজ্যের কৃষি ও পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় (Sovandeb Chatterjee)। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে কৃষকদের ঝুঁকি কমাতে বিমা যোজনা গ্রহণ করা হয়েছে। আসলে আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় অনেক সময় চাষবাসের সমস্যা হয়। কখনও সময়মতো বীজতলা তৈরি করা যায় না। কখনও আবার অতিবৃষ্টি বা অনাবৃষ্টিতে ফলন মার খায়। এমনটা হলে কৃষকরা যাতে অথৈ জলে না পড়েন, তার জন্যই রাজ্যের প্রায় সমস্ত কৃষিজমিকে বিমার আওতায় নিয়ে এসে কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। যাতে প্রকৃতির রোষে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও চাষিরা দ্রুত ক্ষতিপূরণ পান।” মন্ত্রী জানালেন, খুব দ্রুত হিসাব কষে ক্ষতিপূরণ দিয়ে দেওয়া হয়। স্বচ্ছতার সঙ্গে সরাসরি চাষির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পৌঁছে যায়।
[আরও পড়ুন: কেন মোদিকেই চায় জনতা? গানে গানে উত্তর দিয়ে লোকসভার দামামা বাজাল বিজেপি]
বিগত খরিফ মরশুমে প্রায় ১৪ লক্ষ চাষি ৩০০ কোটি টাকার বেশি ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। আগের রবি মরশুমেও মিলেছে ক্ষতিপূরণ। তার মধ্যেই অঙ্ক কষে টাকা ফেরত নিয়ে আসার মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন কৃষি দপ্তরের আধিকারিকরা। আসলে, একশো দিনের কাজ, আবাস যোজনা-সহ বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্রের থেকে রাজ্যের প্রাপ্য ১ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি। মুখ্যমন্ত্রী নিজে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। মঙ্গলবারই রাজ্যের ছ’জন সচিব প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ে গিয়ে বকেয়া আদায়ে বৈঠক করেছেন। তার মধ্যেই এই সুখবর!