সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ছিল এক, হল শূন্য। একেবারে শিক্ষকহীন হয়ে পড়ল পুরুলিয়ার কাশীপুর ব্লকের আহাত্তোড় জুনিয়র হাইস্কুল! 'সুপ্রিম' রায়ে এমনই দশা পুরুলিয়ার কাশীপুর ব্লকের এই স্কুলটির। এতদিন এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্থায়ী শিক্ষক বলতে ছিলেন একজনই। দুই অতিথি শিক্ষক বা 'গেস্ট টিচার' তাঁকে সহযোগিতা করতেন। এখন তাঁরাই চালাবেন স্কুল। বিকল্প হিসেবে এটাই একমাত্র উপায় বলে জানাচ্ছে পুরুলিয়া জেলা শিক্ষা দপ্তর। প্রয়োজনে আবার 'গেস্ট টিচার' সেখানে নিয়োগ করা হবে, তাও বলা হয়েছে।
পুরুলিয়ার আহাত্তোড় জুনিয়র হাইস্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ুয়ার সংখ্যা ৪৪ জন। স্কুলে একমাত্র স্থায়ী শিক্ষক ছিলেন বাঁকুড়ার কেন্দুয়াডিহির বাসিন্দা অভিষেক প্রসাদ। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট ২০১৬ সালের গোটা প্যানেল বাতিল করে দেওয়ায় চাকরিহারা হয়েছেন তিনি। ফলে পড়ুয়া ও অভিভাবকরা চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন। কাজ হারানো ওই শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। আসলে এই ধাক্কা সামলে কথা বলার মতো পরিস্থিতিতেই নেই তিনি। সুপ্রিম রায়ে অথৈ জলে পড়েছেন।
জানা যাচ্ছে, গত ৪-৫ দিন আগে অভিষেক প্রসাদের বাবার মৃত্যু হয়েছে। প্রায় ছয় মাস আগে তাঁর মায়ের শরীরে ক্যানসার ধরা পড়েছে। চিকিৎসা চলছে তাঁর। এই অবস্থায় চাকরি খুইয়ে কার্যত খাদের কিনারে চলে গিয়েছেন ওই শিক্ষক। কীভাবে সব সামলাবেন, কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছেন না। পুরুলিয়া জেলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক মহুয়া বসাক বলেন, "ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গেস্ট টিচার রয়েছেন, তাঁরাই আপাতত পঠনপাঠনের ভার নেবেন। প্রয়োজনে আরও 'গেস্ট টিচার' নেওয়া হবে।" পুরুলিয়া জেলা শিক্ষা দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ডিআই অফিসের তত্ত্বাবধানে শিক্ষাদপ্তর ওই অতিথি শিক্ষকদের বেতন দিয়ে থাকে। ৫০০০ টাকা করে তাঁরা ভাতা পান। তবে নিয়োগে কিছু বিধি রয়েছে। যাঁরা অবসরপ্রাপ্ত স্নাতক, তাঁরাই ওই পদে কাজ করতে পারবেন। ৬৫ বছর পর্যন্ত তাঁরা এই কাজ করতে পারবেন।