বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: ময়নাগুড়ির (Moynaguri)কাছে গুয়াহাটিগামী বিকানের এক্সপ্রেস বেলাইন হওয়ার আগে বিকট শব্দ শোনা গিয়েছিল। তারপরেই হুড়মুড়িয়ে লাইন থেকে ছিটকে পড়ে একের পর এক বগি। প্রত্যক্ষদর্শীদের সবার মুখেই কমবেশি এই একই কথা শোনা গিয়েছে। কিন্তু ওই শব্দ ঠিক কীসের? তাহলে কি লাইনে ফাটল ধরেছিল আগেই? না কি খোলা ছিল রেললাইনের রেল ও স্লিপারের জোড়ের প্যান্ড্রোল ক্লিপ? আর এর সুবাদেই ভয়াবহ এই দুর্ঘটনার নেপথ্যে নাশকতার (Sabotage) আশঙ্কা জোরাল হয়ে উঠছে।
লাইনে ফাটল বা স্লিপারের ক্লিপ খোলা থাকা রেললাইনে নিত্য টহলরত কর্মীদের চোখে পড়ার কথা। প্রশ্ন উঠছে, ওই লাইন পরীক্ষা কি ইদানীং আদৌ হয়েছিল ঠিকঠাক? না কি নাশকতার ছক ধরাই পড়েনি? রেলের তরফে ইতিমধ্যেই ঘটনার উচ্চপর্যায়ের তদন্তের কথা বলা হয়েছে। নাশকতার তত্ত্ব সরাসরি খারিজ না করে পুলিশও সব দিক খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। উত্তরবঙ্গ পুলিশের আইজি (IG) দেবেন্দ্র প্রকাশ সিং জানিয়েছেন, “প্রাথমিক তদন্তে নাশকতার কোনও প্রমাণ মেলেনি। তবে এই ঘটনার তদন্ত করা হবে। সব কিছুই তখন খুঁটিয়ে দেখা হবে।” ময়নাগুড়ির ওই এলাকায় একসময় কেএলও (KLO)জঙ্গিরা দাপিয়ে বেড়াত। এই দুর্ঘটনার নেপথ্যে তাদের কোনও হাত আছে কি না, সেই সংশয়ও ওড়ানো যাচ্ছে না।
[আরও পডুন: North Bengal Train Accident: ‘যেন আকাশ ভেঙে পড়ল’, মৃত্যুমুখ থেকে ফিরেও আতঙ্ক পিছু ছাড়ছে না দুর্ঘটনাগ্রস্ত রেলযাত্রীর]
সেই কথা মাথায় রেখেই এদিনের দুর্ঘটনা নিয়ে পুলিশ মহলেও চর্চা চরমে। যদিও এই বিষয়ে কেউ মুখ খুলতে চাননি। সম্প্রতি কেএলও নেতা জীবন সিংয়ের উত্তেজক কথাবার্তার ভিডিও ভাইরাল (Video viral)হয়। কেএলও ফিরে আসবে বলে হুমকিও শোনা গিয়েছিল সেখানে। আবার জীবনের আত্মসমর্পণ নিয়ে অসমে সরকারের সঙ্গে টানাপোড়েনের কথাও সম্প্রতি শোনা গিয়েছে।
[আরও পডুন: Kolkata Metro: মেট্রোয় ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা, অফিস টাইমে ব্যাহত পরিষেবা]
এসবের প্রেক্ষিতেই ময়নাগুড়ির রেল দুর্ঘটনার নেপথ্যে নাশকতার তত্ত্ব সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট মহল। এদিন দুর্ঘটনা ঘটার কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান রেল আধিকারিক-সহ রেল পুলিশের আধিকারিকরা। শুক্রবার সকালে নাশকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ও।