নন্দন দত্ত, সিউড়ি: শুধু কি জন্ম দিলেই মা হওয়া যায়? তা তো নয়। পৃথিবীজুড়ে কতশত মাতৃত্বের কাহিনী রয়েছে। তার সবটাই গর্ভধারিণী মায়ের নয়। এর বাইরে কতভাবেই মা হওয়ার নজির গড়েছেন কতজন! সেই তালিকা আরও দীর্ঘ হল সিউড়ির (Suri) নার্সের রিয়া দাসের কীর্তিতে। জ্বরে (Fever) কাঁপতে থাকা মায়ের ৭ দিনের সন্তানকে স্তন্যপান করিয়ে বুঝিয়ে দিলেন, তিনিও মা। নার্সের এই মানবিক পদক্ষেপে গর্ববোধ করছেন তাঁর সহকর্মীরা। সেবিকার পেশা যে আসলে মানুষের সেবা করাই, সেটাই প্রমাণ করলেন রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রিয়া দাস।
অসুস্থতা নিয়ে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (Rampurhat Medical College Hospital) ভর্তি হয়েছে ৭ দিনের এক শিশু। এত ছোট শিশুর সঙ্গে মাও ছিলেন হাসপাতালে। শীতের রাতে সেই মা অসুস্থ হয়ে পড়েন। ১০৬ জ্বর নিয়ে কাঁপতে থাকেন। বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হতে থাকে। এদিকে, মায়ের দুধ না পেয়ে খিদেয় চিৎকার করতে থাকে ৭ দিনের শিশু। তখনই ত্রাতা হয়ে আসেন কর্তব্যরত নার্স রিয়া দাস। খিদের যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকা শিশুকে সেখান থেকে নিয়ে গিয়ে স্তন্যপান করান রিয়া। তাতেই শান্ত হয় অসুস্থ শিশু।
[আরও পড়ুন: স্বাধীনতার জন্য ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়েছে ইংরেজরাই, নাগপুরের সভায় একী বললেন রাহুল!]
নার্স (Nurse) রিয়া দাসের বক্তব্য, ”ওই শিশুর মায়ের বয়সও খুব কম। তার উপর ওর প্রবল জ্বর। রাতে জ্বরে কাঁপছিলেন। বাচ্চাটাও খুব চিৎকার করছিল। আমার মনে হল, ওর খুব খিদে পেয়েছে। তাই আমি ওকে তুলে নিয়ে গিয়ে দুধ খাওয়ালাম, মায়ের চিকিৎসাও করলাম। আসলে আমার বাড়িতেও তো ছোট বাচ্চা আছে। তাই ওদের কষ্ট বুঝতে পারি।” রিয়া দাস সিউড়ির বাসিন্দা। ১০ মাসের এক শিশুকন্যার জননী। প্রতিদিন ৫০ কিলোমিটার দূরত্ব পেরিয়ে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান। বৃহস্পতিবার তাঁর নাইট ডিউটি ছিল। তখনই তিনি হয়ে উঠলেন অন্য মা!
[আরও পড়ুন: ‘হাত’ ছাড়া নিয়ে উদ্বিগ্ন বঙ্গ সিপিএম, কংগ্রেসকে কৌশলে চাপ আলিমুদ্দিনের]
রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সিস্টার ইন চার্জ ঝর্ণা দাস বলেন, ”নার্সিং সেবামূলক কাজ, চাকরি ঠিক নয়। এটা আরও একবার বুঝিয়ে দিলেন রিয়া দাস। অসুস্থ মায়ের চিন্তা ঘুচিয়ে শিশুকে স্তন্যপান করিয়ে ও নজির রাখল।” এমএসভিপি পলাশ দাসের বক্তব্য, ”রিয়ার জন্য আমরা গর্বিত। ফের মানবিকতার নজির রাখলেন উনি। স্তন্যপান করিয়ে অন্য মা হয়ে উঠলেন।”