সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: দেশ গঠনে রাজনীতিকদের ভূমিকা নিয়ে নতুন করে আলোচনা বাহুল্য। আর সেই ভিত তৈরি হয় ছাত্রাবস্থা থেকে, একথা কে না জানে? তাই ছাত্র রাজনীতি এত গুরুত্বপূর্ণ। আর তার হাত ধরে সংসদীয় রাজনীতিতে পা রেখেছেন অনেকে। এবারের পঞ্চায়েত ভোটে (Panchayat Election) নতুন প্রজন্মের প্রার্থীর সংখ্যা কম নয়। তেমনই তিনজন প্রার্থীকে নিয়ে এই প্রতিবেদন। এঁরা প্রত্যেকেই মানুষের জন্য কাজ করতে চেয়ে রাজনীতির ময়দানে নাম লিখিয়েছেন। জনতা-জনার্দনের রায়ে তাঁরা নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছেন।
হাওড়ার বাগনানের (Bagnan) ঝিন্দন প্রধান। সমাজ সেবায় তাঁর হাতে খড়ি হয়েছে বেশ কয়েক বছর আগে। করোনা (Coronavirus) কালে মানুষের বাড়িতে গ্রাসাচ্ছাদন থেকে শুরু করে পথ্য পৌঁছে দেওয়ার কাজ তিনি করেছেন। পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে পরিবেশ ও বন্যপ্রাণ সচেতনতা বিষয়ে কাজকর্ম করছেন ঝিন্দন। নিজের রক্ত দিয়ে মুমুর্ষু রোগীর পাশে দাঁড়িয়েছেন বেশ কয়েকবার। এবার তাঁর হাতেখড়ি হল রাজনীতিতে। হাওড়ার বাগনান ১ নম্বর ব্লকের খালোড় গ্রাম পঞ্চায়েতের ৯৫ নম্বর আসনের তৃণমূল (TMC) প্রার্থী ঝিন্দন প্রধান এবার সোজা রাজনীতির আঙিনায়। বছর চব্বিশের তরুণী বাগনান এলাকার সর্বকনিষ্ঠা প্রার্থী। তিনি হাওড়া জেলার কনিষ্ঠ প্রার্থীদের মধ্যে অন্যতম। ঝিন্দন ভূগোল নিয়ে এমএসসি পাস করেছেন। বর্তমানে বিএড পড়ছেন। পঞ্চায়েত ভোটের ময়দানে নেমে ইতিমধ্যে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ীও হয়েছেন। তবু জনস্বার্থে এলাকায় অন্যান্য প্রার্থীদের সঙ্গে যাচ্ছেন প্রচারে।
[আরও পড়ুন: নিজের জন্মদিনে গ্রাহকদের অভিনব উপহার! জোম্যাটোর ডেলিভারি বয়ের ‘কাণ্ডে’ মুগ্ধ নেটদুনিয়া]
কলেজ জীবনে ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আর সেখান থেকেই এবার তৃণমূল প্রার্থী হিসাবে পঞ্চায়েত ভোটের লড়াইয়ে নেমেছেন হাওড়ার সায়ন সর্দার। হাওড়া সদরে তিনিই কনিষ্ঠতম প্রার্থী। কলকাতার আশুতোষ কলেজে বাংলা অনার্সের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র সায়নকে ডোমজুড়ের সলপ-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের ৪৫ নম্বর বুথের প্রার্থী করেছে তৃণমূল। নতুন লড়াই নিয়ে ২২ বছরের কলেজ পড়ুয়া কিছুটা স্নায়ুচাপে। তবে এলাকার বিধায়ক এবং তৃণমূলের হাওড়া সদরের সভাপতি কল্যাণ ঘোষ তাঁকে ‘গাইড’ করেছেন। কেন পড়াশোনা শেষ না করেই নির্বাচনী ময়দানে পা রাখার সিদ্ধান্ত? সায়নের জবাব, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ১০০ দিনের কাজের টাকা আটকে রাখা, বিভিন্ন খাতে রাজ্যকে বঞ্চনার কথা – মানুষের কাছে তুলে ধরা জরুরি। নিজেদের প্রাপ্য আদায় নিয়ে জনসচেতনতার লক্ষ্য়েই এই পদক্ষেপ তাঁর। সায়নের বাবা চান, ছেলে রাজনীতি করে মানুষের পাশে দাঁড়াক।
[আরও পড়ুন: বাংলার ‘হুমায়ুন নামা’, নেহরু জমানা থেকেই চলছে দলবদলের রাজনীতি!]
এদিকে, উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত (Barasat) থেকে বাম প্রার্থী মৌসুমী সরকার। তিনি বারাসত ১ নম্বর ব্লকের দত্তপুকুর থানার বামনগাছির ছোট জাগুলিয়া এলাকার ১৮ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির আসনে লড়ছেন। জেলায় তিনিই সর্বকনিষ্ঠ সিপিএম (CPM) প্রার্থী। বছর পঁচিশের তরুণী নিজে অত্যন্ত সমাজ সচেতন। আর সেই সচেতনতা তিনি জনসাধারণের মধ্যে ছড়িয়ে দিতেই নেমেছেন ভোট ময়দানে। প্রথমবার প্রার্থী হয়ে মৌসুমী বলছেন, ”ভাল তো লাগছে। তবে আরও বেশি ভাল লাগবে ভোটে জিতে মানুষের জন্য কিছু কাজ করতে পারলে।” মৌসুমীর মূল লক্ষ্য শিক্ষাক্ষেত্রকে স্বচ্ছ করা। তাঁর কথায়, ”শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে যে দুর্নীতি দেখছি, তাতে টাকা দিয়ে সকলে শিক্ষকের চাকরি পাচ্ছেন। এঁরা কি কখনও প্রকৃত শিক্ষক হয়ে প্রকৃত মানুষ গড়তে পারবেন? আমাদের লক্ষ্য, শিক্ষাকে দুর্নীতি মুক্ত করা। সকলের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দিতে চাই, সচেতন করতে চাই।” ঝিন্দন-সায়ন-মৌসুমী, নানা শিবিরের এই তিন সেনাপতির জন্য শুভকামনা রইল আমাদের।