শেখর চন্দ্র, আসানসোল: রানিগঞ্জে সোনার দোকানে ডাকাতি ঘটনায় গ্রেপ্তার আরও এক। ধৃতের নাম নাগেন্দ্র যাদব। বিহারের সারান জেলার মোবারকপুরের বাসিন্দা নাগেন্দ্র। ডাকাতির ঘটনার ভাইরাল হওয়া সিসিটিভি ফুটেজে এই নাগেন্দ্রকেই কালো জামা, কালো প্যান্ট, এবং মাথায় হেলমেট পরে দেখা গিয়েছিল। তার হাতেই ছিল ৭.৬৫ এমএম পিস্তল। একটি মোটর বাইকে যে চারজন চেপে পালিয়েছিল তার মধ্যে ছিল এই নাগেন্দ্র। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মোট চারজনকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। ধৃতকে সোমবার আসানসোল আদালতে পেশ করা হবে। ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করা হবে।
ডাকাতির ঘটনায় রবিবার গ্রেপ্তার হয় 'লোকাল সোর্স'। অন্ডাল থানার দক্ষিণখন্ড থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল বছর তিরিশের শশীকান্ত মালী নামে ওই যুবককে। তার বাড়িতেই ২৬ দিন থেকে রেইকি করেছিল মাস্টারমাইন্ড সোনু সিং। তার আগে ডাকাতিতে সরাসরি সুরোজ কুমার সিংকে গিরিডি জঙ্গল থেকে গ্রেপ্তার করে ঝাড়খণ্ড ও আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ। সুরজের গ্রেপ্তারের একদিন পরেই গ্রেপ্তার হয় ডাকাতির ঘটনার মাস্টারমাইন্ড সেই গুলিবিদ্ধ সোনু সিং। এবার পুলিশের জালে নাগেন্দ্র যাদব। তার কাছ থেকে সোনা পাওয়া গিয়েছে। তবে হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্রটি পাওয়া যায়নি।
[আরও পড়ুন: শিয়ালদহমুখী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে মালগাড়ির ধাক্কা, বেলাইন ২টি কামরা, উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী]
উল্লেখ্য, গত ৯ জুন, রবিবার দুপুরে রানিগঞ্জের বিখ্যাত স্বর্ণবিপণির শোরুমে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, মোট সাতজন দুষ্কৃতী ছিল। দুষ্কৃতীদল যখন লুটপাট চালাচ্ছিল তখন কাছাকাছি ব্যক্তিগত কাজে হার্ডওয়ারের দোকানে যান জামুরিয়া থানার শ্রীপুর ফাঁসির আইসি মেঘনাদ মণ্ডল। দোকান থেকে বেরিয়ে চোখ পড়ে তাঁর সোনার দোকানের শোরুমে। লক্ষ্য করেন আগ্নেয়াস্ত্র হাতে এক যুবক ভিতরে ঢুকছে আর বেরচ্ছে। দুঁদে অফিসারের নজর এড়ায়নি। সতর্ক হয়ে যান। নেন পজিশন। দোকানের বাইরে দুই দুষ্কৃতী বেরিয়ে আসতেই গুলি চালান মেঘনাদ। কোমরে গুলি লাগে এক দুষ্কৃতীর। পড়ে যায়। এর পর ৫ দুষ্কৃতী মিলে মেঘনাদকে লক্ষ্য করে লাগাতার গুলি চালাতে থাকে।
ল্যাম্পপোস্টের আড়াল থেকে একাই পালটা গুলির লড়াই চালাতে থাকেন ওই আইসি। ততক্ষণে দুটি মোটর বাইকে সাতজন দুষ্কৃতী পালাতে চেষ্টা করে। একদিকে অত্যাধুনিক অস্ত্র থেকে দুষ্কৃতীদের এলোপাথাড়ি গুলি। হাতে দেখা যায় কার্বাইনও। পালটা মেঘনাদ মণ্ডলের সার্ভিস রিভলবারের টার্গেটে ডাকাতরা। তখনও রানিগঞ্জ থানার পুলিশের দেখা নেই। প্রাণের ভয় না করে, জমি না ছেড়ে শেষ পর্যন্ত ৭ দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে একাই লড়ে গিয়েছেন শ্রীপুর ফাঁড়ির আইসি মেঘনাদ মণ্ডল। তাঁরই গুলিতে আহত হয় এক দুষ্কৃতী। শেষ পর্যন্ত বাধার মুখে পড়ে, রক্তাক্ত হয়ে কোনওমতে দুটি বাইকে সাত দুষ্কৃতী এলাকা ছাড়ে। তখনও বাইকের পিছনে ধাওয়া করেন মেঘনাদ মণ্ডল। সেই জখম ডাকাতকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ।