বাবুল হক, মালদহ: লোকসভা ভোটে রাজ্যে সামগ্রিক ফলাফল ভালো হলেও মালদহ জেলার দুই লোকসভা আসনে মুখ থুবড়ে পড়েছে তৃণমূল। মালদহ দক্ষিণে কংগ্রেস প্রার্থী ও উত্তরে বিজেপি প্রার্থীর কাছে হেরেছেন ঘাসফুল শিবিরের প্রার্থীরা। এই হারের পর জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সির বিরুদ্ধে সোচ্চার হন দলেরই একাংশ। এবার তাঁর বিরুদ্ধে টাকার বদলে চাকরি দেওয়ার অভিযোগে পোস্টার পড়ল মালদহের মালতিপুর এলাকায়। পরে সেই পোস্টার ছিঁড়ে দেন তাঁর অনুগামীরা। যা নিয়ে উত্তপ্ত মালদহ।
এবার নির্বাচনে (2024 Lok Sabha Election) বাংলায় সবুজ ঝড় দেখা গিয়েছে। বেশ কিছু হেরে যাওয়া আসন উদ্ধার করেছে তৃণমূল (TMC)। তবে কোনও দিনও জিততে না পারা মালদহ (Malda) জেলার দুই আসনে এবারও হেরেছে তারা। এই হারের জন্য জেলা চেয়ারম্যান ও জেলা সভাপতি আব্দুরকেই দায়ী করেন নিচুতলার কর্মীরা। সোশাল মিডিয়ায় অনেকেই তাঁর বিরুদ্ধে পোস্ট করতে থাকেন। যা নিয়ে জেলা রাজনীতিতে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। বার্তা দেয় শীর্ষ নেতৃত্বও। সেই রেশ কাটতে না কাটতে আব্দুর রহিম বক্সির নামে তাঁর বিধানসভা এলাকা মালতিপুরের তৃণমূল কার্যালয়ের সামনে শনিবার রাতে পোস্টার পড়ে। সেখানে তাঁকে অশ্লীল ভাষায় আক্রমণ করে লেখা, "চাকরির নাম করে টাকা তোলা মালদহ তৃণমূলের জেলা সভাপতিকে হঠাও। মালদহ জেলা তৃণমূলকে বাঁচাও।"
[আরও পড়ুন: গুলি চালিয়ে গাড়ি লুট, আসানসোল শুটআউটেও রানিগঞ্জের ডাকাতদলের যোগ?]
এর পরেই জেলাজুড়ে তৃণমূলের (TMC) গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আরও একবার প্রকাশ্যে এসেছে বলে দাবি বিরোধীদের। বিজেপির (BJP) এক স্থানীয় নেতা বলেন, "মালদহ জেলায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা সবারই জানা। জেলা সভাপতি রহিম বক্সির (Abdur Rahim Boxi) বিরুদ্ধে অশ্লীল পোস্টারও পড়েছে। সেই পোস্টার ফেলেছে তৃণমূলের একাংশই। এখানে তৃণমূলের এক অংশ, অন্য অংশকে মানতেই চাইছে না। মালদহ জেলায় গ্রহণযোগ্য নেতৃত্বও তৈরি হচ্ছে না। আর তৃণমূলের তো এটাই সংস্কৃতি। যাকে পছন্দ হবে না, তাঁর নামে অশ্লীল কথা বলবে।"
সিপিএমের এক নেতা জমিল ফিরদৌস বলেন, "নবান্নের ১৪ তলা থেকে নিচুতলা পর্যন্ত তৃণমূল দুর্নীতিতে ভরা। চাকরি থেকে ১০০ দিনের কাজ, সব ক্ষেত্রেই দুর্নীতি হয়েছে।" দলের একাংশই যে এই পোস্টার লাগিয়েছে, পক্ষান্তরে তা মেনে নিয়ে তৃণমূলের এক নেতা বলেন, "মালদহ জেলায় আমাদের ফলাফল যে খারাপ হয়েছে তা মেনে নিতেই হবে। সেই হারের কারণ, দল নিজের মতো আলোচনা করবে। এটা দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সেটা সবার সামনে রাখা ঠিক না। এটা যাঁরা করেছেন, আমি বলব দলবিরোধী কাজ করেছেন।"