অমিতলাল সিং দেও, মানবাজার: বছর পার, এখনও বিস্তীর্ণ রাইকা পাহাড়ে পা রাখলে গা ছমছম করে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের ভয়ে। বনদপ্তরের তথ্য বলছে ২০১৮ সাল থেকেই প্রায় প্রতি বছর শীতের সময় পুরুলিয়া (Purulia)-সহ জঙ্গলমহলের বিস্তীর্ণ এলাকায় বাঘের দেখা পাওয়া যায়। তাই জিনাত এবং কিলা-র আগমন কোনও ব্যতিক্রমী ঘটনা নয়। জিনাত আর কিলাকে স্থানীয় মানুষ দেখার পরেও বাঘের করিডোর বানানোর প্রতিশ্রুতি ছাড়া আর কোনও কাজ চোখে পড়ছে না বলে অভিযোগ স্থানীয় মানুষের। দাবি, শুধু হয়েছে নতুন টাইগার ল্যান্ডস্কেপের ঢালাও প্রচার।
কিন্তু বছর প্রায় শেষ হয়ে এলেও কাজের কাজ হয়নি কিছুই বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। বান্দোয়ানের রাইকা পাহাড়, যেখানে দীর্ঘদিন জিনাত ও তার সঙ্গী কিলা ডেরা বেঁধেছিল, সেই এলাকা ঘুরে দেখেছিলেন মুখ্য বনপাল। তিনি জানিয়েছিলেন, "আগামীদিনে ওই জঙ্গলকে 'ইনভায়োলেট' (বন্যপ্রাণ-র জন্য সুরক্ষিত) ঘোষণা করা হবে।" পাশাপাশি বাঘ বিশেষজ্ঞরা জানান, এই জঙ্গল বাঘের পক্ষে আদর্শ। ফলে যে কোনও সময় ফের রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার দেখা যেতে পারে এখানে।
নিজস্ব ছবি
এরপরেও ওই বন্যপ্রাণী মোকাবিলায় বনকর্মীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়নি বলে জানা গিয়েছে। কিভাবে ঘুমপাড়ানি গুলি ছোঁড়া হয় তার প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। বন্যপ্রাণ মোকাবিলায় টহল ও উদ্ধারের বিশেষ গাড়িও নেই। শুধু কয়েকটি ওয়াকিটকি, কয়েকশো মিটার জাল, বাঁদর ধরার কয়েকটি খাঁচা আর বহুকাল আগের ট্র্যাপ ক্যামেরা রয়েছে। রাইকা পাহাড় এলাকায় কয়েকটি সৌর বাতি দিয়ে দায় সেরেছে বনদপ্তর।
[caption id="attachment_1108262" align="aligncenter" width="900"]ছবি: অমিতলাল সিং দেও।[/caption]
এলাকার মানুষের সঙ্গে বাঘ নিয়ে কোনও আলোচনা করেনি বনদপ্তর এমনটাই দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। যে পথে জিনাত এবং তার সঙ্গী কিলা এসেছিল সেই পথের কোন ম্যাপিং হয়নি বলে অভিযোগ। বলা হয়েছিল, এই ব্যাঘ্র করিডরকে আরও উন্নত করতে কিছু ভেষজ গাছ লাগানো হবে। বছর ঘুরলেও তা বাস্তবের রূপ পায়নি বলে দাবি করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, "এই পুকুরেই তো বাঘ জল খেতে আসতো। এখনও ভয় করে এই এলাকায় আসতে। কিন্তু জঙ্গলে তো আমাদের যেতেই হবে। না হলে পেট চলবে কি করে?" বাঘের ভয় নিয়েই জঙ্গলের পথে প্রতিদিন চলে তাঁরা। বাঘের ভয়েই সন্ধ্যা নামে রাইকায়।
