অর্ণব দাস, বারাকপুর: সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে আগেই বহুবার সরব হয়েছেন আর জি করের নির্যাতিতা তরুণী চিকিৎসকের মা-বাবা। এবার তদন্তকারী টিমের বিরুদ্ধেই সিবিআইয়ের ডিরেক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ জানালেন। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি রাজ্য সভাপতি নিহতের পরিবারের সঙ্গে সোদপুর নাটাগড়ের বাড়িতে দেখা করতে গিয়েছিলেন। তখন সুকান্তর হাতেই অভিযোগ পত্র তুলে দেন তরুণী চিকিৎসকের বাবা।

তিনি বলেন, "সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে আমাদের যে অভিযোগ আছে সুকান্ত মজুমদারকে জানিয়েছি, যাতে উনি উপরমহলে অভিযোগ পৌঁছে দেন। সিবিআইয়ের তদন্তকারী টিমের বিরুদ্ধে এই সংক্রান্ত একটি অভিযোগপত্র তাঁর মারফৎ সিবিআইয়ের ডিরেক্টরকে পাঠিয়েছি। উনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।" তাৎপর্যপূর্ণভাবে কেন্দ্রীয় এজেন্সি নিয়ে নিয়ে পরিবারের অভিযোগের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার।
সুকান্তর বক্তব্য, "পুলিশ ও সিবিআইয়ের একজন অফিসারের সম্পর্কে তদন্ত নিয়ে পরিবারের যে অসন্তোষ আছে, সেটা আমাকে বলেছেন। আমরাও তদন্তে দু-একজনের ভূমিকায় খুশি নই। সেটাও পরিবারকে জানিয়েছি। সিবিআইয়ের একজন তদন্তকারী অফিসারের সম্পর্কে আদালতের রায়েই বলা হয়েছে, সিবিআই তদন্তে বাড়তি কিছু করেনি। কলকাতা পুলিশের তদন্তকেই ম্যাগনিফাইং গ্লাসের নিচে রেখে তদন্ত করছেন। এই বিষয়টিও আমাদের নজরে এসেছে। মোদিজীর মন্ত্রিসভার সদস্য হিসেবে উপযুক্ত জায়গায় বিষয়গুলি পৌঁছে দেব।"
এদিনও প্রতিবেশী কাকু সঞ্জীব মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ করার অভিযোগ তোলেন নিহতের বাবা। তিনি বলেন, "ঘটনার দিনই প্রতিবেশী সঞ্জীব মুখোপাধ্যায় কলকাতা পুলিশের ডিসি নর্থকে আমাদের বাড়িতে নিয়ে এসে টাকার অফার করেছিল। একটা প্যাকেট দিতে চেয়েছিল, কি আছে জিজ্ঞাসা করাতে বলেছিল টাকা আছে। আমাদের কাজে লাগবে।" পরিবারের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে ভয় দেখানোর মত মারাত্মক অভিযোগ তুলে টাকা দেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতির সংযোজন, "যখন মেয়ের মৃতদেহ পাশে মা কাঁদছে, তখন প্রতিবেশী সঞ্জীব মুখোপাধ্যায় হাসতে হাসতে বাবাকে টাকা দিয়ে কেনার চেষ্টা করেছিলেন। তাই আমার মনে হয় এই নারকীয় ঘটনার পিছনে বৃহৎ ষড়যন্ত্র রয়েছে। চেস্ট মেডিসিনের অন্যান্য ডাক্তাররাও এরসঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন।"
যদিও অভিযোগ সম্পর্কে প্রতিবেশী কাকুর সঞ্জীব মুখোপাধ্যায়ের স্পষ্ট জবাব, "নির্যাতিতার মা-বাবা আমাকে নিয়ে ৬ বার মন্তব্য বদলেছেন। আগে কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা সেটা তাঁরা বলুক। আর আমার যা বক্তব্য আগেই সেটা আদালত, সিবিআইকে জানিয়েছে। আগামী দিনেও আদালতকেই জানাব। কোনও প্ররোচনায় পা দিয়ে সংবাদমাধ্যমে মন্তব্য করব না।" হাই কোর্টে মামলা ফেরত আনতে এদিনই নিহতের পরিবার তরফে হলফনামা জমা দেওয়া হয়েছে। নিহত চিকিৎসকের বাবার আশা, "আগামী সোম বা মঙ্গলবারের মধ্যে মামলা হাই কোর্টে চলে আসবে।"