অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: কলেজের পরীক্ষা চলছে। কিন্তু তাতে কী? স্বপন কোলের মৃত্যুদিনে কলেজের ভিতরেই শহিদ দিবস পালন করতে যায় এসএফআই। তাই নিয়ে তুমুল হট্টগোল হাওড়ার আন্দুল প্রভু জগবন্ধু কলেজে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (TMCP) সঙ্গে এসএফআই কর্মী-সমর্থকদের বচসাও চলে। এসএফআই নেত্রী দীপ্সিতা ধর বলেন, "কলেজে পরীক্ষা চলছে বলে আমরা ঢুকলাম না। নাহলে গেট ভেঙে আমরা কলেজে ঢুকতাম।" এই মন্তব্য নিয়েও তীব্র চাপানউতোর শুরু হয়েছে।
আজ, সোমবার আন্দুল কলেজে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিষয়ের আভ্যন্তরীণ পরীক্ষা চলছিল। একই দিনে ইন্দিরা গান্ধী মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার আসনও পড়েছিল ওই কলেজেই। নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা শুরু হয়। হাওড়া জেলার এসএফআইয়ের কর্মী-সমর্থকরা ওই কলেজের সামনে হাজির হন। ওই কলেজের ছাত্র ছিলেন স্বপন কোলে। ২০০৯ সালে ওই কলেজে এসএফআই ও টিএমসিপির মধ্যে জোর বিবাদ হয়। প্রাণ হারান এসএফআই কর্মী স্বপন। তাই সেখানেই শহিদ দিবস পালিত হবে। এমনই কর্মসূচি নিয়েছিল এসএফআই। এছাড়াও কলেজের অধ্যক্ষের কাছে স্মারকলিপিও দেওয়ার কথা ছিল তাদের। নেত্রী দীপ্সিতা ধর নিজে উপস্থিত ছিলেন সেখানে। আর সেখান থেকেই শুরু হয় বচসা।
পরীক্ষার জন্য ওই কলেজের প্রধান ফটক এদিন বন্ধ ছিল। ফলে দীপ্সিতারা কলেজের ভিতরে ঢুকতে পারেননি। বাইরে তুমুল বিক্ষোভ-স্লোগান শুরু হয়। কলেজের ভিতর থেকে পালটা স্লোগান দিতে থাকেন টিএমসিপি কর্মীরা। দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল বচসা হয়। সমস্যায় পড়েন পরীক্ষার্থীরাও। সুদীপ্ত মাজি নামে ওই কলেজের রাষ্ট্র বিজ্ঞানের ছাত্রের অভিযোগ, তাঁকে কলেজে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় সাঁকরাইল থানার পুলিশ। দুই পক্ষকেই সরিয়ে দেওয়া হয়। পরে এসএফআই কলেজের বাইরেই শহিদ দিবস পালন করে। হাওড়া-আন্দুল রোড কিছু সময়ের জন্য অবরোধও করেছিলেন তাঁরা।
গোটা ঘটনার জন্য টিএমসিপির দিকে অভিযোগের তুলেছেন দীপ্সিতা। পরীক্ষা না চললে কলেজের গেট ভেঙে তাঁরা ঢুকতেন। তাঁর এহেন মন্তব্যে বিতর্কও দানা বেঁধেছে। এদিকে হাওড়া সদর জেলা টিএমসিপির সাধারণ সম্পাদক অভিজ্ঞান মাজির অভিযোগ, দীপ্সিতা ধরের নেতৃত্বে কলেজের বাইরে বহিরাগতরা জড়ো হয়েছিল। কলেজের বাইরে থাকা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবিও ছেঁড়া হয়েছে। পতাকার লাঠি দিয়ে গেটের বাইরে থেকে মারধরের চেষ্টাও হয়।