বাবুল হক, মালদহ: 'বাংলাদেশি' বিতর্কে বাতিল হয়েছে জাতিগত শংসাপত্র। খোয়াতে হয়েছিল পঞ্চায়েত প্রধানের পদ। কিন্তু এসআইআরের (SIR in Bengal) খসড়া ভোটার লিস্ট প্রকাশিত হতেই দেখা গেল, সেখানে নাম রয়েছে বিতর্কিত লাভলি খাতুনের! যা দেখে চক্ষু চড়কগাছ অনেকেরই। খসড়া তালিকায় তাঁর নাম রয়ে গেল কেন? তা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরে রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়।
রশিদাবাদ অঞ্চলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান লাভলি খাতুনের নাম খসড়া ভোটার তালিকায় থাকবে কি না, তা নিয়ে জল্পনা চলছিল। কিন্তু এদিন খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের পর দেখা যায়, লাভলি খাতুনের নাম বাদ যায়নি। কিন্তু লাভলি বাংলাদেশি, এই অভিযোগ দীর্ঘদিনের। পঞ্চায়েত প্রধানের পদও খোয়াতে হয়েছিল তাঁকে। সেই সময় জানা গিয়েছিল, লাভলির আসল নাম নাসিয়া শেখ। পাসপোর্ট ছাড়াই অবৈধভাবে তিনি ভারতে ঢোকেন। তারপর বাবার নাম বদলে ফেলেন। ২০১৫ সালে ভারতে তাঁর ভোটার কার্ড ইস্যু হয়। ২০১৮ সালে ইস্যু হয় জন্ম সার্টিফিকেট। নথিতে নাসিয়ার বাবার নাম শেখ মুস্তাফা লেখা হয়। কিন্তু বাবার আসল নাম জামিল বিশ্বাস বলে অভিযোগ তোলা হয়েছিল। এবিষয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা হয়। উচ্চ আদালতের নির্দেশে চাঁচোল মহকুমা প্রশাসনের শুনানিতে লাভলি খাতুনের জাতিগত শংসাপত্র 'জাল' প্রমাণিত হয়। মহকুমা শাসকের নির্দেশে তাঁকে পঞ্চায়েত প্রধানের পদ থেকে সরানো হয়।
এত কিছুর পরও কেন লাভলির নাম খসড়া তালিকায়? রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের ৫৩ নম্বর বুথের বিএলও মুজিবর রহমান বলেন, "লাভলি খাতুনের নামে এনুমারেশন ফর্ম এসেছিল। উনি আমার বাড়িতে এসে ফর্ম পূরণ করেছিলেন। আমি তাঁর ফর্মটি সাবমিট করেছি মাত্র। সেইটুকুই আমার কাজ। এখন দেখছি, আমার ৫৩ নম্বর বুথের ৩৪ জনের নাম বাদ গিয়েছে। লাভলি খাতুনের নাম বাদ যায়নি। এরপর কী হবে সেটা প্রশাসন জানে।" যদিও মালদহ জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের দাবি, খসড়া ভোটার তালিকায় নাম থাকা মানেই চূড়ান্ত তালিকায় নাম থাকবে, এমনও নয়। ফর্মে অসঙ্গতি লক্ষ্য করলেই শুনানিতে ডাকা হবে।
