দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: সদ্য চাকরি হারিয়েছেন এসএসসি ২০১৬ প্যানেলের ২৫ হাজার ৭৫২ হাজার শিক্ষক, অশিক্ষক কর্মচারী। তাঁর চাকরি যাবে না তো! সেই আতঙ্কে আত্মঘাতী ২০১২ প্যানেলের হাই স্কুলের শিক্ষক! ঘর থেকে উদ্ধার ঝুলন্ত দেহ। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলির তেতুলবেড়িয়া গ্রামে। ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য এলাকায়।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত শিক্ষকের নাম প্রণব নাইয়া। বয়স ৪৫ বছর। তিনি স্থানীয় টিএস সনাতন হাইস্কুলের বাংলার শিক্ষক ছিলেন। ২০১২ সালে পরীক্ষা দিয়ে ২০১৫ সালের ১ এপ্রিল চাকরিতে যোগ দেন। কর্মজীবন শুরু করেন মুর্শিদাবাদের বেগমবাড়ি স্কুলে। পরে উৎসশ্রী পোর্টালে বদলির আবেদন করে বাড়ির কাছে টিএস সনাতন হাইস্কুলের যোগ দেন। সবকিছু ঠিকই চলছিল। শেষবার শনিবার তিনি স্কুলে গিয়েছেন (রবিবার থেকে সরকারি স্কুল ছুটি), তখনও তাঁর মধ্যে অস্বাভাবিক কিছু লক্ষ্য করেননি সহ-শিক্ষক ও পরিবারের সদস্যরা। আজ মঙ্গলবার তাঁর দেহ উদ্ধার হয়েছে।
কিন্তু চাকরি হারানোর ভয় প্রণববাবুর কেন? সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি বাতিল হয়েছে ২০১৬ সালের প্যানেলভুক্ত প্রার্থীদের। তিনি তো ২০১২ সালে পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন। প্রণববাবুর বাবার দাবি, যেদিন থেকে চাকরি বাতিলের খবর পেয়েছিলেন, সেই দিন থেকেই কিছুটা চিন্তায় ছিলেন শিক্ষক। প্রণববাবুর বাবা সুভাষচন্দ্র নাইয়া বলেন, "মোবাইলে খবর দেখে চিন্তায় থাকত। আমরা বলেছিলাম, তোর তো চাকরি যায়নি। যদি যায় তাহলে দেখা যাবে। আর চলে গেলেও বা কী? তারপর কী যে হল। সকালে দেহ দেখতে পাই।" প্রণব নতুন বাড়ি তৈরি করছিলেন। সেই সংক্রান্ত কোনও লোন বা অন্য কোনও ঝামেলায় তিনি জর্জরিত ছিলেন কি না, প্রশ্ন করতেই বাবার উত্তর, "না, না! সেই সংক্রান্ত কোনও সমস্যা ছিল না।"
পুলিশের এক কর্তা বলেন, "আমরা একটা খবর পেয়ে দেহ উদ্ধার করে তদন্ত শুরু করেছি। প্রণব নাইয়া ২০১৫ সালে শিক্ষক হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন। এই আত্মহত্যার খবর সামনে আসার পর সোশাল মিডিয়ায় ভুয়ো খবর ছড়ানো হচ্ছে। বলা হচ্ছে চাকরিহারার প্রথম বলি (২০১৬ এসএসসি)। সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করার আগে একবার আমাদের সঙ্গে কথা বলুন। যারা গুজব ছড়াচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"