shono
Advertisement
Malda

'নো মোর ব্যাকবেঞ্চার্স', মালদহের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মাদ্রাসায় চালু 'ইউ' আকারে বেঞ্চ সাজিয়ে পাঠদান

হাই মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ পরীক্ষামূলকভাবে এই পদ্ধতি চালু করে এলাকার বাসিন্দাদের প্রশংসা কুড়োচ্ছে।
Published By: Subhankar PatraPosted: 09:29 PM Jul 15, 2025Updated: 10:59 PM Jul 15, 2025

বাবুল হক, মালদহ: থাকবে না কোনও ব্যাকবেঞ্চার্স! বিদ্যালয়গুলিতে 'ইউ' আকারে বেঞ্চ সাজিয়ে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান। কেরলে এই ধাঁচে পঠনপাঠন খুব ভাইরাল। ট্যাগ লাইন হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, 'নো মোর ব্যাকবেঞ্চার্স'! এবার এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে রাজ্যের মাদ্রাসায়। না শহরের কোনও মাদ্রাসা নয়, মালদহের বৈষ্ণবনগরে গঙ্গার ভাঙন দুর্গত এলাকার একটি মাদ্রাসায় পরীক্ষামূলকভাবে এই পদ্ধতিতে পাঠদান চালু করে কার্যত নজির গড়েছে।

Advertisement

কেরলের ধাঁচে পঠনপাঠনের এই ব্যবস্থাপনা এযাবৎ মালদহের কোনও মাদ্রাসায় চালু করা হয়নি। জেলার মাদ্রাসাগুলির মধ্যে প্রথম নজির গড়ল বৈষ্ণবনগরের শিমুলতলা হাই মাদ্রাসা। এমনটাই দাবি কর্তৃপক্ষের। শ্রেণিকক্ষে সেই ভাবেই অর্থাৎ 'ইউ' আকারে বেঞ্চ সাজানো হয়েছে। মালদহের বৈষ্ণবনগরের শিমুলতলা হাই মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ পরীক্ষামূলকভাবে এই পদ্ধতি চালু করে এলাকার বাসিন্দাদের প্রশংসা কুড়োচ্ছে।

শিমুলতলা হাই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মোজাফফর আহমেদ বলেন, "সামনের বেঞ্চে বসা নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে। কখনও মন কষাকষি, তো কখনও হাতাহাতিও হত। পিছনের সারিতে বসলে অনেকেই পাঠে মনোযোগ হারাত। এই সমস্যা দূর করতেই 'নো মোর ব্যাকবেঞ্চার্স' পদ্ধতি চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।" মালদহের জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) বাণীব্রত দাস বলেন, "প্রথাগত বেঞ্চ বিন্যাসে কাউকে না কাউকে পিছনের সারিতে বসতেই হয়। এতে তারা পাঠ বুঝতে পারে না, শিক্ষক-শিক্ষিকারাও সবসময় নজরে রাখতেও পারেন না। এখন থেকে শ্রেণিকক্ষে বেঞ্চ সাজানো হবে ইংরেজি 'ইউ' আকারে। এতে সবাই থাকবে শিক্ষকের সামনেই। কোনও পড়ুয়া অবহেলিত হবে না।

শিমুলতলা হাই মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রীদের কথায়, "এইভাবে বসে ক্লাস করতে পড়তে খুব ভালো লাগছে। সবাই এখন সামনে বসছে। আগে পিছনের বেঞ্চে বসে পড়াশোনা কিছুই বুঝতে পারতাম না। এখন সবার সঙ্গে সামনে বসে ভালোভাবে বুঝতে পারছি।"

মাদ্রাসার শিক্ষকদের বক্তব্য, ক্লাস নিয়ন্ত্রণ করতে তাঁদের সুবিধা হচ্ছে। প্রত্যেক পড়ুয়াকে নজরে রাখা সম্ভব হচ্ছে। মালদহ শহরের বার্লো গার্লস হাই স্কুল এবং অক্রুরমণি হাই স্কুল পরীক্ষামূলক ভাবে এই পদ্ধতি চালু করেছে। ধীরে ধারে মাদ্রাসাগুলিতেও তা চালু হচ্ছে। প্রথম শিমুলতলা হাই মাদ্রাসায় শুরু হয়েছে এই ব্যবস্থা। ভবিষ্যতে আরও কিছু স্কুলে তা চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

উল্লেখ্য, এই ধারনাটি প্রথম উঠে আসে মালয়ালম ছবি ‘স্থানার্থী শ্রীকুত্তান’-এর মাধ্যমে। বিনেশ বিশ্বনাথ পরিচালিত এই ছবিতে চারজন অবাধ্য ছাত্রকে মূল স্রোতে ফেরাতে শ্রেণিকক্ষে ‘নো মোর ব্যাকবেঞ্চার্স' পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়। ২০২৪ সালের নভেম্বরে ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পর কেরলের স্কুলগুলিতে এই ব্যবস্থা চালু হয়। ছবিটিতে দেখানো হয়, কীভাবে পিছনের বেঞ্চে বসার তকমা বা 'ব্যাকবেঞ্চার' শব্দটা একজনকে সারাজীবন বয়ে বেড়াতে হয়। সেই ছবি মুক্তি পাওয়ার পর কেরলের একের পর এক স্কুল বসার পদ্ধতিতে পরিবর্তন এনেছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • থাকবে না কোনও ব্যাকবেঞ্চার্স! বিদ্যালয়গুলিতে 'ইউ' আকারে বেঞ্চ সাজিয়ে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান।
  • কেরলে এই ধাঁচে পঠনপাঠন খুব ভাইরাল। ট্যাগ লাইন হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, 'নো মোর ব্যাকবেঞ্চার্স'!
  • এবার এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে রাজ্যের মাদ্রাসায়। না শহরের কোনও মাদ্রাসা নয়, মালদহের বৈষ্ণবনগরে গঙ্গার ভাঙন দুর্গত এলাকার একটি মাদ্রাসায় পরীক্ষামূলকভাবে এই পদ্ধতিতে পাঠদান চালু করে কার্যত নজির গড়েছে।
Advertisement