রাজকুমার, আলিপুরদুয়ার: অভিনব কায়দায় বিদ্যুৎ চুরিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছিলেন রাজ্য বিদ্যুৎ দপ্তরের আধিকারিকরা। কিন্তু 'চোর' যদি চলে ডালে ডালে, বিদ্যুৎ দপ্তর চলেছে পাতায় পাতায়! বিদ্যুৎ চুরি রুখে প্রচুর লক্ষ্মীলাভের পথে দপ্তর। পরিসংখ্যান বলছে, চলতি অর্থবর্ষে 'চোর' ধরে বিদ্যুৎ দপ্তর আয় করেছে ৮২ লক্ষ টাকা।

জেলা বিদ্যুৎ দপ্তর সুত্রে জানা গিয়েছে, আলিপুরদুয়ার জেলার ৬টি ব্লক ও দুই পুরসভা এলাকাতে বিদ্যুৎ চুরি ঠেকাতে বিশেষ অভিযান চালিয়েছেন দপ্তরের আধিকারিকরা। গোটা জেলায় বিদ্যুৎ চুরি নিয়ে মোট ৯০টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এছাড়া যাঁদের বিরুদ্ধে বিদ্যুৎ চুরির অভিযোগ রয়েছে তাঁদের ১ কোটি টাকার বেশি জরিমানা করেছে বিদ্যুৎ দপ্তরের সিকিওরিটি অ্যান্ড লস প্রিভেনশন উইং। এর মধ্যে ৮২ লক্ষ টাকা ইতিমধ্যেই ২০২৪-২৫ সালেই উদ্ধার করেছে বিদ্যুৎ দপ্তর। এই ঘটনাকে বড় সাফল্য বলেই দেখাচ্ছে জেলা বিদ্যুৎ দপ্তর। WBSEDCL-এর ডিভিশনাল ম্যানেজার অংশুমান সরকার বলেন, “জেলাজুড়ে বিদ্যুৎ চুরি ঠেকাতে আমরা অভিযান চালাচ্ছি। বিদ্যুৎ চুরি ঠেকাতে বিদ্যুৎ দপ্তরের সিকিউরিটি অ্যান্ড লস প্রিভেনশন উইং ১ কোটি টাকার উপরে ফাইন করেছে। এবং এর মধ্যে ৮২ লক্ষ টাকা আমরা আদায়ও করেছি। ফলে বিদ্যুৎ চুরি ঠেকাতে আমরা অত্যন্ত তৎপর।''
আসলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলে গিয়েছে বিদ্যুৎ চুরির ধরনও। এতদিন রাস্তার বিদ্যুতের তার থেকে হুক করে বিদ্যুৎ চুরির কথা জানত বিদ্যুৎ দপ্তর। কিন্তু এবার অভিনব কায়দায় বিদ্যুৎ চুরি ধরল আলিপুরদুয়ার জেলা বিদ্যুৎ দপ্তর। ফালাকাটাতে মিটারের ভিতরে বিদ্যুৎ সংযোগে কারচুপি করে চুরি করা হয়। বাইরে থেকে দেখলে এই চুরি ধরা মুশকিল। তবে শুধু অভিনব কায়দায় নয়, পুরনো চিরাচরিত কায়দাতেও হুকিং করে বিদ্যুৎ চুরি ঠেকাতেও অত্যন্ত তৎপর জেলা বিদ্যুৎ দপ্তর। এমনই জানিয়েছেন আধিকারিকরা।
বিদ্যুৎ চুরি ঠেকাতে বিদ্যুৎ দপ্তরের ‘হাসির আলো’ প্রকল্পে জোর দেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পে তিনমাসে কোনও গ্রাহক ৭৫ ইউনিট বিদ্যুৎ খরচ করলে, তার বিদ্যুৎ বিল সম্পূর্ণ মকুব করে দেয় সরকার। এই গ্রাহকদের কোনও বিদ্যুৎ বিল দিতে হবে না। বিদ্যুৎ দপ্তরের ডিভিশনার ম্যানেজার অংশুমান সরকার বলেন, “হাসির আলো নতুন প্রকল্প। এই প্রকল্পে ৩০০ ওয়াট লোডের সংযোগ নিয়ে সর্বোচ্চ তিন মাসে ৭৫ ইউনিট বিদ্যুৎ খরচ করলে তাঁদের কোনও বিল দিতে হয় না। আমরা এই প্রকল্পের প্রচার চালাচ্ছি।''
দেখুন ভিডিও: