টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: ১৯২ ঘণ্টা পর অবশেষে দেখা মিলল জিনাতের। বাঁকুড়ার রানিবাঁধের কাছে গোঁসাইডিহিতে ক্যামেরাবন্দি বাঘিনী। সূত্রের খবর, ওই এলাকায় তাকে লক্ষ্য করে ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়া হয়। তা তার গায়ে লেগেছে কিনা, তা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে কি অবশেষে বাগে বাঘিনী? বনদপ্তরের তরফে এখনও এ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।
শনিবার দুপুরের দিকে বনকর্মীরা বাঘিনীকে হেঁটে জঙ্গলে ঘেরা রাস্তা পারাপার করতে দেখেন। তাঁরাই বাঘিনীকে লেন্সবন্দি করেন। রাজ্যের মুখ্য বনপাল (দক্ষিণ-পশ্চিম চক্র) বিদ্যুৎ সরকার জানান, যে জায়গায় বর্তমানে বাঘিনী রয়েছে সেখানে খাঁচা পাতা সম্ভব নয়। সে কারণে ওই এলাকাটিকে দুটি স্তরে জাল দিয়ে ঘেরা হয়েছে। নেটের বাইরে জ্বালানো হয়েছে আগুন।
বাঘিনী বাগে আনতে জাল দিয়ে ঘেরা হল গোটা এলাকা
বনদপ্তর সূত্রে খবর, লোকালয় থেকে মাত্র ৫০০ মিটার দূরে রয়েছে বাঘিনী। তার সঠিক গতিবিধি জানতে ড্রোন ক্যামেরার সাহায্য নিচ্ছে বনদপ্তর।
বাঘিনীর খোঁজ পেতে ওড়ানো হল ড্রোন
সূত্রের খবর, বাঘিনীকে লক্ষ্য করে ঘুমপাড়ানি গুলি করা হয়েছে। বাঘিনীর গায়ে গুলি লেগেছে কিনা, সে বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু জানাননি তিনি।
বনকর্মীদের ক্যামেরাবন্দি বাঘিনী জিনাত
প্রসঙ্গত, গত ১৫ নভেম্বর, মহারাষ্ট্রের তাডোবা ও আন্ধেরি ব্যাঘ্রপ্রকল্প থেকে সিমলিপালে আনা হয় জিনাতকে। গত ২৮ নভেম্বর ঘরছাড়া হয় সে। ঝাড়খণ্ডে জামশেদপুর বনবিভাগ হয়ে চাকুলিয়ার জঙ্গলে আসে। বেলপাহাড়ির কাঁকরাঝোড় দিনদুয়েক ছিল বাঘিনী। তারপর ময়ূরঝর্ণা হয়ে পুরুলিয়ায় রাইকা পাহাড়ে যায়। খাবার, জল ও পাহাড় লাগোয়া জঙ্গলে বাসস্থান অনুকূল থাকায় সেখানেই দিব্যি ছিল সে। তবে হাতি তাড়ানোর কৌশল অবলম্বন করেন বনদপ্তরের কর্মীরা। হুলাপার্টি, মশাল, পটকায় বিরক্ত হয়ে লোকালয়ে চলে যায় জিনাত। মানবাজারের ডাংরডির জঙ্গলে ছিল সে। তবে শুক্রবার রাতে জালের নিচ দিয়ে পালায় জিনাত। তারপর থেকে বর্তমানে মুকুটমণিপুরের কংসাবতী জলাধারের কোল ঘেঁষা রানিবাঁধ ব্লকের বন পুকুরিয়া ডিয়ার পার্কের কাছে গোঁসাইডিহিতে চলে যায়।
বাঘিনীর ডেরা বদলের খবর পাওয়ামাত্রই এলাকায় পৌঁছন রাজ্যের মুখ্য বনপাল (দক্ষিণ পশ্চিম চক্র ) বিদ্যুৎ সরকার, বাঁকুড়ার ডিএফও দক্ষিণ প্রদীপ বাউড়ি, এডিএফও মধুরমিলন ঘোষ-সহ বনদপ্তরের আধিকারিক ও কর্মীরা। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্পের আধিকারিক, সুন্দরবন থেকে আসা শুটারের দল।
বাঘিনীকে বাগে আনতে তৎপর বনকর্মীরা
স্থানীয়দের দাবি, বাঘিনীর আতঙ্কে ৫টি পরিবারকে গোঁসাইডিহি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে তাঁদের পর্যাপ্ত জল, খাবারের ব্যবস্থা করা হয়নি বলেই অভিযোগ।