বাবলু হক, মালদহ: তৃণমূল নেতা দুলাল সরকার খুনের ঘটনায় একের পর এক তথ্য সামনে আসছে। পলাতক অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশিও চলছে। দুলাল সরকার খুনের তদন্তে মালদহে গেলেন সিআইডির সাইবার বিশেষজ্ঞ। অভিযুক্তদের মোবাইল ফোন থেকে তথ্য সংগ্রহ করার কাজ শুরু হয়েছে।
অভিযুক্তদের মোবাইল ফোনই এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তদন্তকারীদের কাছে। তাঁরা খুনের আগে ও পরে কাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন? কাদের সঙ্গে ফোনে দীর্ঘক্ষণ কথা হয়? মেসেজে কাদের সঙ্গে কথা হয়েছিল? সেই সব বিষয় এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তদন্তকারীদের কাছে। পলাতকদের লোকেশন ট্রেস করার চেষ্টাও চালাচ্ছে পুলিশ। তদন্তকারীদের চোখে ধুলো দেওয়ার জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন দুষ্কৃতীরা।
জানা গিয়েছে, তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার জন্য লোকেশন বদল করা হচ্ছে। তাঁদের লোকেশন কখনও নেপাল, কখনও উত্তরপ্রদেশ, কখনও বিহার আবার কখনও শিলিগুড়ি সহ বিভিন্ন জায়গায় দেখাচ্ছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করার জন্য বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছে। অন্যতম অভিযুক্ত আশরফ খানের মোবাইল থেকে চক্রান্তকারীদের ফোন করা হয়েছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। শনিবার সাইবার বিশেষজ্ঞ মমতা চক্রবর্তী নিজে ঘটনার তদন্তে মালদহ গিয়েছিলেন। ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে আটক করা মোবাইল ফোনগুলি পরীক্ষা করা হয়। মোবাইলের কথোপকথন ও চ্যাটও খতিয়ে দেখা হয়।
তৃণমূল কংগ্রেস নেতা দুলাল সরকার খুনে সামনে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। শাসকদলের জেলা তৃণমূল সহ-সভাপতি খুনে মূল অভিযুক্ত নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারির ডেরাতেই প্রায় দু’মাস শুটাররা ছিল। ‘অপারেশন’ সফল করতে দু’টি প্ল্যান তৈরি করেছিল সুপারি কিলাররা। প্ল্যান ‘এ’ ফেল করলে তৈরি ছিল দ্বিতীয় পরিকল্পনাও। খুনের দিন বাইক থেকে নেমে পিছনে দাঁড়িয়ে ছিলেন আশরফ নামে এক দুষ্কৃতী। বাকিদের গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে শার্প শুটার বলে পরিচিত আশরফ গুলি চালাত বলে পুলিশ সূত্রের দাবি। ঘটনায় এখনও অবধি মোট ৭জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে দাবি, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে। পুলিশের দাবি, ঘটনার নীল নকশা তৈরি করেছেন নরেন্দ্রনাথ ঘনিষ্ঠ স্বপন। পলাতক রোহন বিহারের দুষ্কৃতীদের ভাড়া করেন। তাঁর মাধ্যমেই অর্থনৈতিক লেনদেন হয়েছে। জানা গিয়েছে, দুষ্কৃতীরা ধারাবাহিকভাবে নজর রেখেছিলেন দুলালের উপর। মওকা পেতেই ২ জানুয়ারি তাঁকে খুন করা হয়।
