সৈকত মাইতি, হলদিয়া: নন্দীগ্রাম সমবায় ভোটে জয়ের আনন্দে মাতোয়ারা হয়েই খুনের ঘটনা ঘটেছে। নখ কাটার ধারলো নরুন চালিয়ে এফোঁড়-ওফোঁড় করে দেওয়া হয়েছে মৃত তৃণমূল কর্মী বিষ্ণুপদ মাইতির ফুসফুস। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলেছে বলে দাবি পুলিশের। এতে আরও তৎপর হয়ে ধরপাকড় শুরু করে পুলিশ। সোমবার রাতে সোনাচূড়া থেকে উত্তম মাইতি এক ব্যক্তিকে এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয়। জেরায় সে সমস্ত অপরাধ কবুল করে। এমনই খবর পুলিশ সূত্রে।
ঘটনার প্রেক্ষাপট খানিকটা এরকম। রবিবার ছিল তমলুক কো-অপারেটিভ এগ্রিকালচার অ্যান্ড রুরাল ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের ভোট। তাতে নন্দীগ্রাম এক নম্বর ব্লকের কাঞ্চননগর হাই স্কুল ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে বোমাবাজির ঘটনা নিয়ে বিজেপি-তৃণমূল একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে। তখন থেকে উত্তেজনার পরিবেশ ছিল নন্দীগ্রামে। এই কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের ভোটে হলদিয়া, সুতাহাটা, মহিষাদল, ময়না,তমলুক, চণ্ডীপুর-সহ মোট বারোটি শাখায় ৬৯টি আসনে ভোট হয়েছিল। তার মধ্যে ৫৬টি আসনে জয়ী হয়ে তৃণমূল কংগ্রেস নিরঙ্কুশ বোর্ড গঠনের ক্ষমতা অর্জন করে। শুধুমাত্র নন্দীগ্রাম এক এবং দুই নম্বর ব্লকে বিজেপি ১৩টি আসনে জয়ী হয়ে। সেই জয় উদযাপনের সময়েই ঘটে যায় ভয়ংকর ঘটনা। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে খুন হন তৃণমূল কর্মী বিষ্ণুপদ মাইতি।
সোমবার তমলুক মেডিক্যাল কলেজের মর্গে তাঁর ময়নাতদন্ত হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, রিপোর্টে উল্লেখ, নখ কাটার ধারালো নরুনের আঘাতে বাঁদিকের ফুসফুসে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মৃত্যু হয়েছে। এর পর রাতে সোনাচূড়ায় অভিযান চালিয়ে পুলিশের বিশেষ দল গ্রেপ্তার করে উত্তম মাইতি নামে এক ব্যক্তিকে। সে-ই মূল অভিযুক্ত বলে দাবি করে পুলিশ জানিয়েছে, জেরায় সে কৃতকর্মের কথা স্বীকার করেছে। জয়ের আনন্দে নখ কাটার ধারালো নরুন দিয়ে আঘাতেই যে মৃত্যু হয়েছে তৃণমূল কর্মী বিষ্ণুপদর, তা নিয়ে মোটের উপর নিশ্চিত তদন্তকারীরা। তবে এই তথ্য প্রকাশ্যে আসার পর শোরগোল রাজনৈতিক মহলে। আতঙ্ক আরও বেড়েছে এলাকায়। বুধবার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে নন্দীগ্রাম যাচ্ছে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের নেতৃত্ব প্রতিনিধিদল।