তারক চক্রবর্তী, শিলিগুড়ি: মালদহের পরে এবার শিলিগুড়ি (Siliguri)। ফের রাজ্যে এক মহিলাকে বিবস্ত্র করার অভিযোগ উঠল একদল দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে। আদিবাসী সমাজের সালিশি সভায় স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যার সামনেই এক গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ি সংলগ্ন লোয়ার বাগডোগরার ভুজিয়াপানি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। সোমবার ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই নিন্দার ঝড় উঠেছে। তদন্ত শুরু করেছে বাগডোগরা থানার পুলিশ।
ভুজিয়াপানির বাসিন্দা প্রদীপ সরকারের সঙ্গে স্থানীয় এক মহিলা রোশনি খেরওয়ার পরকীয়ার সম্পর্ক জেরে দিন কয়েক আগে এলাকায় ঝামেলা শুরু হয়। বিষয়টি নিয়ে ১৯ জুলাই অর্থাৎ গত বুধবার ভুজিয়াপানির পান্থাবাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সালিশি সভা বসে। সেই সময় প্রদীপ সরকারের স্ত্রী গৌরী ও রোশনির মধ্যে হাতাহাতি বেঁধে যায়। দু’পক্ষকে ছাড়াতে গেলে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পরেন ওই নির্যাতিতা মহিলাও। উল্লেখ্য়, নির্যাতিতা মহিলা গৌরীদেবীর ঘনিষ্ঠ বান্ধবী। ঘটনার পরের দিন হাতাহাতির ঘটনা নিয়ে ফের একটি সালিশি সভা ডাকা হয়।
[আরও পড়ুন: চিনে ‘বিশ্বাস নেই’ ভারতের, ওয়াং ই-কে মুখের উপর জবাব ডোভালের]
অভিযোগ, সেই সালিশি সভায় নির্যাতিতা মহিলা উপস্থিত হতেই তাঁর উপর চড়াও হয় রোশনি ও তাঁর লোকজন। সভায় সকলের সামনেই তাঁকে বিবস্ত্র করে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ছিঁড়ে ফেলা হয় তাঁর পোশাক। সেই সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যা বুলবুলি সিং। কিন্তু তাঁরাও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পদক্ষেপ করেনি বলে অভিযোগ উঠেছে। কোনওমতে নির্যাতিতা মহিলা সেখান থেকে বাড়ি ফেরেন। চিকিৎসার পর সোমবার সকালে বাগডোগরা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
জানা গিয়েছে, নির্যাতিতা ওই আদিবাসী মহিলা অত্যন্ত দরিদ্র ও তাঁর স্বামী বিকলাঙ্গ। তিন সন্তান ও বিকলাঙ্গ স্বামীকে নিয়ে দিনমজুরি করে সংসার চালান তিনি। কাজেই ঘটনার পরেই পুলিশে যাওয়ার সাহস তিনি পাননি। পরে এলাকাবাসীর সাহায্যে থানায় যান তিনি। যদিও নির্যাতিতার বিরুদ্ধে পালটা অভিযোগ দায়ের করেন রোশনি খেরওয়ার।
[আরও পড়ুন: ফের কি নোটবাতিলের রাস্তায় হাঁটবে কেন্দ্র? লোকসভায় জবাব দিল অর্থমন্ত্রক]
নির্যাতিতা মহিলার দাবি, “সকলের সামনে আমাকে বিবস্ত্র করে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। সালিশি সভায় উপস্থিত বেশকিছু পুরষও মারধর করেছে। এখন অভিযোগ করার পর আমাকে প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।” পঞ্চায়েত সদস্যা বুলবুলি সিংয়ের পালটা দাবি, “মারধর বা হাতাহাতি হয়েছে ঠিকই। তবে বিবস্ত্র করে মারধর করা হয়নি। বাকিটা পুলিশ তদন্ত করে দেখুক।” শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের অতিরিক্ত ডেপুটি পুলিশ কমিশনার শুভেন্দ্রকুমার বলেন, “একটি লিখিত অভিযোগ হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”
