সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: সাতসকালে পাড়ার মোড়ে জমিয়ে হচ্ছে ‘চায়ে পে চর্চা’ (Chai Pe Charcha)। গ্রামের মানুষের সঙ্গে চা খেতে খেতে সেই চর্চায় যোগ দেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব ও পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধিরা। গ্রামবাসীদের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় তাঁরা শোনেন প্রত্যেকের অভাব-অভিযোগ। একই সঙ্গে ‘দুয়ারে সরকারে’র নিয়মকানুনের যাবতীয় খুঁটিনাটি সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সেই আড্ডায় তাঁরা অবহিতও করা হয়েছে। মানুষের সঙ্গে তৃণমূলের আরও নিবিড় যোগাযোগে এমনই অভিনব কর্মসূচি নিয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার ২ নম্বর ব্লকের তৃণমূল (TMC) নেতৃত্ব। সাড়াও পড়েছে ব্যাপক।
প্রতিদিন সকালে একরকম নিয়ম করেই এই ‘চায়ে পে চর্চা’ হচ্ছে ডায়মন্ড হারবারের সরিষা অঞ্চলের বুথে বুথে। চর্চার জায়গা কখনও কোনও খোলামেলা চায়ের দোকান, কখনও বা ফাঁকা কোনও মাঠ। কিন্তু এমন ভাবনা কেন? স্থানীয় ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক সামিম আহমেদ জানান, ১৬ আগস্ট থেকে শুরু হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee) স্বপ্নের পরিকল্পনা ‘দুয়ারে সরকার’ (Duare Sarkar)। সেখানে বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য কী কী সুবিধা রয়েছে, কারা সেই সুবিধা পাবেন, তার জন্য কী করা উচিত — এসব যাবতীয় তথ্য মানুষকে জানাতেই আয়োজিত হয়েছে ‘চায়ে পে চর্চা’।
[আরও পড়ুন: Coronavirus: গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নিম্নমুখী সংক্রমণ ও মৃত্যু, সুস্থতার হার ৯৮.১৫ শতাংশ]
তিনি আরও জানান, বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা নেওয়ার ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ যেন তাঁদের অধিকার থেকে বঞ্চিত না হন, কোনও অসাধু ব্যক্তি বা কোনও সংস্থার দ্বারা প্রতারিত না হন, সেই কারণেই আগেভাগে এই চর্চা করে সকলকে সতর্ক করা হচ্ছে। জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রীর সতর্কবার্তাও। বিশেষ করে ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্পে সরকার পরিচালিত একমাত্র ‘দুয়ারে সরকার’ শিবির থেকেই আবেদনের ফর্ম সংগ্রহের কথা জানানো হচ্ছে। মানুষকে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে, ‘লক্ষ্মীর ভান্ডারে’র জন্য ইউনিক নম্বর দেওয়া ফর্মই একমাত্র গ্রাহ্য করবে সরকার। সেই ফর্মের জন্য কাউকে যেন কোনও পয়সা উপভোক্তারা না দেন, সে ব্যাপারেও চায়ের আড্ডায় গ্রামের মানুষকে সতর্ক করা হচ্ছে।
এছাড়াও সেই আড্ডায় পঞ্চায়েতের কাজকর্ম সংক্রান্ত কারও কোনও অভিযোগ বা উন্নয়নমূলক কাজের নতুন কোনও প্রস্তাব কিংবা কোনও দাবির কথা গুরুত্ব দিয়ে শুনছেন পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধিরা। তৃণমূলের এই ‘চায়ের আড্ডার’ কর্মসূচি সরিষা অঞ্চল দিয়ে শুরু হলেও ডায়মন্ড হারবার ২ নম্বর ব্লকের প্রতিটা অঞ্চলেই সেই কর্মসূচি চলবে বলে জানান সামিম আহমেদ।