অভিষেক চৌধুরী, কালনা: সাতসকালে ভয়ংকর কাণ্ড। বালিবোঝাই ট্রাক ভেসেল থেকে গড়িয়ে পড়ল ভাগীরথী নদীতে। বরাতজোড়ে প্রাণে বাঁচলেন চালক ও খালাসি। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যায় কালনা (Kalna) থানার পুলিশ। গাড়ির চালক ও খালাসিকে আটক করেছে পুলিশ। শুরু হয়েছে তদন্ত।
স্থানীয় ও ফেরিঘাট কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, অন্যান্যদিনের মতোই সোমবার কালনা ফেরিঘাট থেকে শান্তিপুর (Santipur) ফেরিঘাট পর্যন্ত ভেসেল করে মালবোঝাই ট্রাক ও যাত্রীরা পারাপার করছিল। সকাল সাতটা নাগাদ একটি বালিবোঝাই ট্রাক আসানসোল থেকে ওঠে ভেসেলে। চাকদহের দিকে যেত ট্রাকটি। ভেসেলের উপর তুলে লরিটিকে ঠিক জায়গায় দাঁড় করানোর চেষ্টা করেন চালক। কিন্তু বারবার ব্রেক কষলেও বারো চাকার ট্রাকটিকে দাঁড় করানো যায়নি। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ভেসেল থেকে ট্রাকটি সোজা গিয়ে পড়ে ভাগীরথী নদীতে। নদীতে তলিয়ে যায় চালক ও খালাসি।
[আরও পড়ুন: রাজ্যের সরকারি হাসপাতালের খাবারে মিলল কেঁচো! তদন্তের নির্দেশ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের]
এই ঘটনায় হতবাক হয়ে যান অনেকেই। এদিকে নদী থেকে ‘বাঁচাও-বাঁচাও’ বলে চিৎকার শুরু করেন চালক ও খালাসিরা। এই আর্তি কানে যেতেই স্থানীয় মাঝিরা লঞ্চ নিয়ে মাঝ নদী থেকে তাঁদের উদ্ধার করে। ট্রাকচালক শাহবাজ হোসেন মণ্ডল তাঁর ভয়ংকর অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে বলেন, “ভেসেলে উঠে গাড়িটা একটু আগে করি। ব্রেক কষেছি, ব্রেক ধরেনি। এরপরই ট্রাক-সহ জলের তলায় চলে যাই। কেবিনে জল ঢুকে যাওয়ায় আমরা নিশ্বাস নিতে পারছিলাম না। পাঁচ-সাত মিনিট জলের তলায় ছিলাম। পরে জলের ভিতরই ডানদিকের গেট খুলে বের হই।”
এই দুর্ঘটনা ঘিরে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে। ট্রাকটিতে বেআইনিভাবে অতিরিক্ত মাল বোঝাই ছিল কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই বিষয়ে ঘাটমালিক জয়গোপাল ভট্টাচার্য বলেন, “একটি মালবোঝাই ট্রাক সর্বোচ্চ ৩৪ টন নিয়ে ভেসেলে উঠতে পারে। কাঁটায় ওজন করা স্লিপে ওই ট্রাকটিও সেই ওজনেরই ছিল। বেশি ছিল না। ব্রেক ফেল করাতেই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানায় গাড়ির চালক।” খবর পেয়েই ঘটনাস্থল থেকে গাড়ির চালক ও খালাসিকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। এই ঘটনার পর বেশ কিছুক্ষণ ফেরি চলাচল বন্ধ থাকলেও পরে তা ঠিক হয়। তলিয়ে যাওয়া ট্রাকটির খোঁজে শুরু হয়েছে তল্লাশি।