shono
Advertisement

ছাত্রমৃত্যুতে ফের উত্তাল বিশ্বভারতী, উপাচার্যের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ, ক্লাস বয়কট পড়ুয়াদের

টানা উপাচার্যের বাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ মৃতের পরিবারের।
Posted: 10:28 AM Apr 22, 2022Updated: 12:47 PM Apr 22, 2022

ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: বিশ্বভারতীর (Vishva Bharati) ছাত্রাবাস পাঠভবনে ছাত্রের মৃত্যুর জেরে ফের উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ল ক্যাম্পাসে। ফের বিতর্কের মুখে উপাচার্য (VC) বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, ছাত্রের পরিবারকে মৃত্যুর খবর জানানো হয়নি। এই অভিযোগে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে মৃত ছাত্রের পরিবার। শুক্রবার সকালে যোগ দেন তার বাবা ও ঠাকুমা। টানা চলছে ঘেরাও। এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস বয়কটের ডাক দিয়েছেন পড়ুয়ারা। বন্ধ সমস্ত বিভাগের পঠনপাঠন।

Advertisement

ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার সকালে। উত্তরশিক্ষায় দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র অসীম দাসের ঝুলন্ত মৃতদেহ (Hanging body) উদ্ধার হয় ছাত্রাবাসের নিজের ঘর থেকে। তড়িঘড়ি তাকে বিশ্বভারতীর নিজস্ব পিয়ারসন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়৷ ছিলেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীও। চিকিৎসকরা অসীমকে মৃত বলে ঘোষণা করার পরই রীতিমতো উতপ্ত হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস। মৃতের পরিবারের সদস্যরা বিক্ষোভ দেখাতে থেকে। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে খুন, প্রমান লোপাট এবং ষড়যন্ত্রের অভিযোগ দায়ের মৃত ছাত্রের বাবা। তদন্ত শুরু শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ। এই ঘটনায় শোকের ছায়া বিশ্বভারতীতে। আশ্রমিক থেকে প্রাক্তনীদের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের চুড়ান্ত গাফিলতি রয়েছে। উত্তরশিক্ষা ছাত্রাবাসে কোনও হস্টেল সুপার নেই। ওয়ার্ডেনও অস্থায়ী।

[আরও পড়ুন: নাবালিকার ‘ধর্ষণে’ সহযোগিতা! গাইঘাটায় বিজেপি নেত্রী-সহ গ্রেপ্তার ৪]

জানা গিয়েছে, নানুর থানার বনগ্রামের বাসিন্দা অসীম দাস বিশ্বভারতীর পাঠভবনের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র। উত্তরশিক্ষা ছাত্রাবাসে থেকে সে পড়াশোনা করত৷ দ্বিতীয় শ্রেনী থেকে সে পাঠভবনে হস্টেলে থেকে পড়াশুনা করে আসছে। গত এক সপ্তাহ আগে এই হস্টেল ছাত্রদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, অসীম তার বেশ কয়েকজন সহপাঠীর সঙ্গে হস্টেলের একটি ঘরে থাকছিল। বৃহস্পতিবার সকালে অসীম-সহ তার বন্ধুরা ক্লাসে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিল। অন্য বন্ধুরা ৬.৪৫ গৌরপ্রাঙ্গনে প্রার্থনা করতে গেলেও অসীম যায়নি।

তারপরে সে ক্লাসে না আসায় বন্ধুরা হস্টেলে ফিরে এসে দেখে ফ্যানে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছে। তার পড়াশোনায় পাঠভবনের পোশাক সাদা পাজামা পরে আছে। গায়ে হলুদ পাঞ্জাবি না থাকলেও গায়ে কালো গেঞ্জি ছিল। সহপাঠীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে ছাত্রাবাসের ওয়ার্ডেন দেবাশিস মুখোপাধ্যায়-সহ আনান্য শিক্ষক ও নিরাপত্তারক্ষীরা অসীম কে নীচে নামিয়ে বিশ্বভারতীর নিজস্ব পিয়ার্সন মেমোরিয়াল হাসপাতালে নিয়ে আসে ৷ তড়িঘড়ি হাসপাতালে উপস্থিত হন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহটি বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠায়। এর আগেও পাঠভনবন ছাত্রীবাসে ছাত্রীর আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে ছিল।

এদিকে মৃতদেহ বোলপুর মহকুমা হাসপাতাল চত্ত্বরে আসতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন ছাত্রের বাবা-মা ও আত্মীয় পরিজন। অসীমের বাবা সঞ্জীব দাস অভিযোগ করেন, ”হাসপাতালে এসে জানতে পারি ছেলে মারা গিয়েছে। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ পুলিশ না ডেকে মৃতদেহ নামিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। এমনকি কর্তৃপক্ষ আমাদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করেনি।”

[আরও পড়ুন: দেশের কোভিড গ্রাফ ফের ঊর্ধ্বমুখী, পরিস্থিতি মোকাবিলায় ছাড়পত্র পেল শিশুদের ভ্যাকসিন]

এদিকে, মৃতদেহ ময়নাতদন্ত না করে অসীমের পরিবারের লোকজন মৃতদেহ নিয়ে পিয়ারসন হাসপাতাল চত্বরে চলে আসেন। শুরু হয় অবস্থান বিক্ষোভ। অভিযোগ, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ হাসপাতালের সব গেট ভিতর থেকে বন্ধ করে দেয়। পুলিশ চলে আসে, পরে আত্মীয় পরিজনদের বুঝিয়ে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহ বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। পরে কয়েকজন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বাড়ির সামনে বসে পরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। সেই বিক্ষোভ চলছে এখনও। কয়েকজন শান্তিনিকেতন থানায় চলে আসেন। পুলিশ অভিযোগ দায়ের করা হয়। সেখানে অভিযোগ করা হয়, অসীমকে পরিকল্পিত ভাবে খুন করে প্রমান লোপাট করা চেষ্টা করা হয়েছে। এই কাজে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ যুক্ত আছে এবং ষড়যন্ত্র রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বিশ্বভারতীর জনসংযোগ আধিকারিককে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup ছাঁদনাতলা toolbarvideo শোনো toolbarshorts রোববার