সুমন করাতি, হুগলি: ১৩০০টি মধ্যে ৩০০টি ফর্ম এন্ট্রি হয়েছে! বিএলওকে বিডিও অফিসে ডেকে ডেটা এন্ট্রি করানোর নামে দীর্ঘক্ষণ বসিয়ে রাখার অভিযোগ। অসুস্থ বোধ করার পরও তাঁকে ছাড়া হয়নি বলেও দাবি। বাড়ি ফিরে কাজের চাপে হাউমাউ করে কেঁদে ভাসান বিএলও। সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল সেই ভিডিও।
পান্ডুয়া ব্লকের বাঁটিকা বৈচী গ্ৰাম পঞ্চায়েতের পশ্চিমপাড়া এলাকার স্কুল শিক্ষিকা সুমিতা মুখোপাধ্যায় (ঘোষ) বিএলও-র দায়িত্ব পেয়েছেন। ওই পঞ্চায়েতের ই ৪১ নম্বর বুথের বিএলও তিনি। ১৩০০ ভোটারের এনুমারেশন ফর্ম দেওয়া হয়েছে তাঁকে। সুমিতা প্রায় ৩০০টি ফর্ম আপলোড করেছেন। এত কম কেন? সেই কথা বলে তাঁকে বিডিও অফিসে ডাকা হয়। সুমিতাদেবীর দাবি, টেকনিক্যাল সমস্যার জন্য বেশি ফর্ম আপলোড করতে পারেননি তিনি।
এদিকে ব্লক অফিসে গেলে তাঁকে বিডিও অফিসে বসেই কাজ করার কথা বলা হয়। সেখানেও টেকনিক্যাল সমস্যার মুখে পড়েন তিনি। অভিযোগ, সে কথা জানানো হলেও তাঁকে দীর্ঘক্ষণ বসিয়ে রাখা হয়। সুমিতা অসুস্থ হয়ে পড়েন। বাড়ি ফিরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। সেই ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। শিক্ষক শিক্ষাকর্মী ও বিএলও ডিউটি প্রতিরোধ মঞ্চের আহ্বায়ক অনিমেষ হালদারের ফেসবুক প্রোফাইল থেকে ওই ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে।
বিএলও সুমিতা মুখোপাধ্যায় বলেন, "আমার শারীরিক অসুস্থতা থাকা সত্ত্বেও আমি এই কাজ করছি। ইতিমধ্যেই প্রায় ৩০০ জনের নাম অনলাইনে আপডেট করেছি। তারপরও আমাকে ব্লক অফিসে ডেকে পাঠিয়ে, ওখানেই অনলাইন এন্ট্রির কথা বলা হয়। কিন্তু সেখানে সার্ভার সমস্যা ছিল। কাউকে বলেও সমস্যার কোনও সুরাহা হয়নি। সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টে অবধি সেখানে বসিয়ে রাখা হয়। এই সবের মাঝে আমার খাওয়া হয়নি। আমি অসুস্থ বোধ করি। মনে হচ্ছিল নিজেকে শেষ করে দিই। সহযোগী বিএলওরা আমার সঙ্গে বাড়ি অবধি এসেছিলেন। আমাকে প্রচণ্ড ভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে।" তার আরও দাবি, নির্বাচন কমিশনের সঠিক পরিকল্পনা নেই। একাধিক বার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হচ্ছে। বিএলওরা ফিল্ড ওয়ার্ক করছে। তাদের সমস্যাটা কেউ বুঝছে না।
বিএলওর স্বামী বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, "সেদিন মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে কান্নাকাটি করছিল। হাসপাতালে ভর্তি করার মতো পরিস্থিতি হয়েছিল। সার্ভারডাউন থাকার কারণে সমস্যা হচ্ছে। দায় চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে আমার স্ত্রীর উপর। উনি তো কাজ করবো না বলছেন না। টার্গেট ফিলাপ করেও হেনস্থা করা হচ্ছে তাঁকে।"
নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, সুমিতা উনি লো-পারফর্মিং বিএলও! এভারেজের থেকে অনেক কম ফর্ম অনলাইনে এন্ট্রি করেছেন। তবে সুমিতা একা নন। আরও অনেকেই রয়েছে এই তালিকায়। যাঁরা কম ফর্ম ফিলআপ করেছে তাঁদের বোঝানোর জন্য বিডিও অফিসে ডাকা হয়েছিল। উনি ব্লক অফিসে এসেছিলেন এবং সেখানে কাজও করেছেন। শারীরিক অসুবিধার জন্য তার কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছে এমন কিন্তু বিষয়টি নয়। ব্লকে তাকে হ্যান্ড হোল্ডিং হেল্প করে দেওয়া হয়েছে। যদি ওই বিএলওর চিকিৎসার কিছু বিষয় কিছু থাকে সেটাও দেখা হবে বলে জানানো হয়েছে।
