shono
Advertisement
Dhulian

হিংসায় পুড়ে ছাই দোকান, আতঙ্ক কাটিয়ে ধুলিয়ানে লস্যি বিক্রি করতে বেরিয়েছেন বিশাল

সোমবার থেকে স্বাভাবিক হচ্ছে পরিস্থিতি। খুলছে দোকানপাট।
Published By: Suhrid DasPosted: 03:39 PM Apr 14, 2025Updated: 04:53 PM Apr 14, 2025

শাহজাদ হোসেন, ফরাক্কা: সংশোধিত ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে হিংসা ছড়িয়েছে মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন অংশে। সামশেরগঞ্জ থেকে ধুলিয়ানের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়েছিল অশান্তি। শুক্রবার থেকে হিংসার কারণে সাধারণ মানুষ প্রাণভয়ে ভীত ছিলেন। দুষ্কৃতীদের হামলায় পুড়ে গিয়েছে বিশাল দাসের লস্যির দোকান। কিন্তু হাল ছাড়েননি তিনি। সোমবার তিনি লস্যি নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিলেন। থানার সামনেই তিনি এদিন লস্যি বিক্রি করেছেন। বিশাল বলেন, "বাপ-দাদার আমল থেকে এলাকায় শান্তির পরিবেশ ছিল। আগে কখনও এমন হয়নি।"

Advertisement

ধুলিয়ানের বাসিন্দা বিশাল দাস, পেশায় লস্যিবিক্রেতা। এই অশান্তির আঁচ তাঁর পরিবার ও ব্যবসার উপরেও পড়েছে। নতুন দোকান কবে হবে, জানেন না তিনি। সোমবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করতেই তিনি পেটের টানে বেরিয়ে পরেন। বিশাল বলেন, এবারের ইদেও অনেক লস্যি বিক্রি করেছেন। সব সম্প্রদায়ের মানুষজন তাঁর দোকান থেকে লস্যি কিনেছেন এতদিন। কিন্তু এমন অশান্তি আগে কখনও দেখেননি তিনি। দোকান পুড়ে গেলেও বাড়িতে ফ্রিজে লস্যির সরঞ্জাম রাখা ছিল। সেসব নিয়েই এদিন তিনি বেরিয়ে পড়েছেন।

সোমবার সকাল থেকে মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন জায়গায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। বাজারের দোকানপাট খুলতে শুরু করেছে। মানুষজনও রাস্তাঘাটে বেরচ্ছেন। পথে টোটো-সহ অন্যান্য গাড়িও চলাচল করছে। প্রশাসন আশ্বাস দিচ্ছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। গুজবে কান না দিতে জোরালো বার্তা দিয়েছেন রাজ্যের এডিজি আইনশৃঙ্খলা জাভেদ শামিম। মুর্শিদাবাদে গিয়েছেন এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকার। শুক্রবার থেকে ধুলিয়ানের একাধিক জায়গায় অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি ছিল। এলাকার দুই মহিলা বাসিন্দার চোখেমুখে আতঙ্ক। হামলার কথা বলতে গিয়ে কেঁদেও ফেলেন তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, বাইরের লোকজন বিএসএফের পোশাক পরে এলাকায় ঢুকেছিল। এলাকায় কার্যত দাপিয়ে বেড়ায় দুষ্কৃতীরা। বাড়ির ভিতর ঢুকে লোকজনদের মারধর করে তারা। লুটপাটও চালানো হয়েছে। শুধু তাই নয়, ছাদে উঠে হামলাকারীরা গুলিও চালায় বলে অভিযোগ। বাসিন্দাদের বেশ কয়েকজনকে মারধর করে টানতে টানতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেই মারাত্মক অভিযোগও তাঁদের মুখে শোনা গিয়েছে।

গতকাল রবিবার থেকে নতুন করে আর অশান্তি ছড়ায়নি ধুলিয়ানে। এলাকায় টহল দিচ্ছে বিএসএফ, সিআরপিএফ, পুলিশ। গোটা মুর্শিদাবাদে ১৮ কোম্পানি সিআরপিএফ জওয়ান নামানো হয়েছে বলে খবর। এলাকার ইন্টারনেট পরিষেবা আগামিকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে। অশান্তি ছড়ানোর জন্য ২০০ জন এখনও অবধি গ্রেপ্তার হয়েছে। এদিন কাজে বেরিয়েছিলেন সুভদ্রা হোমিও ক্লিনিকের দায়িত্বে থাকা সুজন রায়চৌধুরী। তিনি বলেন, "ধুলিয়ানে এমন বিষয় আগে ছিল না। সবাই শান্তিতে একসঙ্গে একই পরিবারের মতো মিলেমিশে থাকি। মন্দিরে পুজো হয়। ইদও পালিত হয়। সব অনুষ্ঠানে ভাই-ভাইয়ের মতো থাকি।" তিনি আরও বলেন, "আমরা যে ভালো আছি, অনেকের সহ্য হচ্ছে না। গুজব ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে চারদিকে।" এলাকার বাসিন্দা দেবাশিস দাস দাবি করেছেন, "ধুলিয়ানে গুজব ছড়ানো হয়েছে। সেই গুজবে কান দেওয়া ঠিক নয়। পুলিশ-প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে। মানুষজন রাস্তায় বেরচ্ছেন।" আজ থেকে ওষুধের দোকান খুলেছেন মহম্মদ জিয়াউল হক। তিনিও জানিয়েছেন, অশান্তি কাটিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • এমন ঘটনা কখনও হয়নি। সব সম্প্রদায়ের মানুষজন একসঙ্গেই বসবাস করেন।
  • কখনও এমন অশান্তি হয়নি। এমনই বলছেন ধুলিয়ানের সাধারণ মানুষ।
  • সোমবার সকাল থেকে মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন জায়গায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।
Advertisement