অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়, শিলিগুড়ি: এক দশকেরও বেশি সময় ধরে পাহাড়ের মাটিতে শক্ত ভিত গেরুয়া শিবিরের। সেই কবে থেকে দার্জিলিংয়ের (Darjeeling) সাংসদের পদটি ধরে রেখেছেন বিজেপি প্রার্থীরা। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে দু’জন বিধায়ককেও নির্বাচিত করেছেন পাহাড়বাসী। তিনজন জনপ্রতিনিধি নিয়েও বিজেপি পুরভোটে দাঁত ফোটাতে পারল না এবারও। ২০২২-এর পুরভোটে দার্জিলিংয়ে একটি ওয়ার্ডেও ফুটল না পদ্ম। আর ঠিক উলটোপথে হেঁটে আত্মপ্রকাশেই চমকে দিল অজয় এডওয়ার্ডের রাজনৈতিক দল – ‘হামরো পার্টি’। দার্জিলিং পুরসভার দখল নিল এই নতুন দলটি। ৩১ ওয়ার্ডের মধ্যে ১৮টিতেই জিতলেন হামরো পার্টির প্রার্থীরা। আরেক নতুন দল ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার (BGPM) দখলে এল ৯টি ওয়ার্ড।
২০২১-এর নভেম্বরের শেষ দিক। পাহাড়ের রাজনীতিতে চমক দিয়ে আত্মপ্রকাশ করল একটি নতুন দল। ব্যবসার পাশাপাশি রাজনীতির ময়দানে আসেন গ্লেনারিস (Glenary’s) কর্তা অজয় এডওয়ার্ড। মিরিকে সাংবাদিক বৈঠক করে দলের নাম এবং লোগো প্রকাশ করেন তিনি। পাহাড়ে বরাবরই বেশ পরিচিত মুখ অজয় এডওয়ার্ড। গ্লেনারিস রেস্তরাঁর কর্তা এডওয়ার্ডের ব্যবসায়ী মহলে যথেষ্ট পরিচিতি রয়েছে। তিনি এক সময় জিএনএলএফের (GNLF) দার্জিলিং শাখার সভাপতি ছিলেন। জিএনএলএফ সভাপতি মন ঘিসিংয়ের সঙ্গে অজয় এডওয়ার্ডের ঠান্ডা লড়াই চলছিল। তার জেরেই অজয় দলীয় পদ থেকে ইস্তফা দেন। তারপর নিজেই পৃথক রাজনৈতিক দল তৈরি করেন। যা এখনও নথিভুক্ত হয়নি। ফলে এবারের পুরভোটে নির্দল হিসেবেই ভোটে অংশ নিয়েছিল হামরো পার্টি। আর তাতেই বুঝিয়ে দিল, কম সময়ের মধ্যেই জনগণের কতটা ভরসার জায়গা তৈরি করতে সমর্থ হয়েছে। যদিও ২২ নং ওয়ার্ড থেকে নিজে হেরেছেন অজয় এডওয়ার্ড।
১৮ টি ওয়ার্ডের দখল নিয়ে দার্জিলিং পুরসভায় বোর্ড গড়তে চলেছে হামরো পার্টি। যা দার্জিলিংয়ের রাজনৈতিক মহলে ইতিহাস। দলের প্রধান অজয় এডওয়ার্ড অনভিজ্ঞতার কথা স্বীকার করে জানিয়েছেন, পুরসভার কাজ চালাতে তৃণমূলের সাহায্য চাইবেন তাঁরা। উলটোদিকে, তৃণমূল (TMC) নেতা তথা শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গৌতম দেব এদিন সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান, হামরো পার্টি দার্জিলিং পুরসভায় বোর্ড গঠন করলে শাসকদল সবরকম সাহায্য করবে। গৌতম দেব দার্জিলিং পুরসভার নির্বাচনী দায়িত্বে ছিলেন।
[আরও পড়ুন: আইপিএলের পরই আয়ারল্যান্ডে টি-২০ সিরিজ খেলতে যাবে ভারত, ঘোষিত দিনক্ষণ]
পুরভোটে ভাল ফল হয়েছে অনীত থাপার ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার (BGPM)। ৯ টি ওয়ার্ডে জিতেছেন এই দলের প্রার্থীরা। আর এ থেকেই স্পষ্ট, পাহাড়ে বিনয় তামাং, বিমল গুরুংদেরও প্রত্যাখ্যান করেছে জনতা। অন্যদিকে, গত পুরভোটে দার্জিলিংয়ে তৃণমূল মাত্র একটি ওয়ার্ডে জিতেছিল। এবার তা বেড়ে দাঁড়াল ২। তবে মোর্চার সঙ্গে অলিখিত জোট থাকায় উভয়ের প্রাপ্ত ওয়ার্ড মোট ৫।