সুমন করাতি, হুগলি: বঙ্গ রাজনীতিতে সম্প্রতি নতুন শব্দ তৈরি হয়েছে – রাম-বাম জোট। তা বেশ প্রকাশ্যেও এসেছে। শাসকদল তৃণমূলকে হারাতে নাকি তলে তলে হাত মিলিয়েছে বিজেপি ও বাম নেতৃত্ব। তারই মাঝে এবারের পঞ্চায়েত ভোটে (Panchayat Election) অন্য ছবি। একই পরিবার থেকে দু’দলের দুই প্রার্থী। শাশুড়ি সিপিএম (CPM) আর বউমা লড়ছেন বিজেপির (BJP) হয়ে। পাণ্ডুয়ার পোঁটবা গ্রামে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে জমে উঠেছে বামপন্থী শাশুড়ি ও দক্ষিণপন্থী বউমার লড়াই।দু’জনেরই দাবি – আমি জিতব।
আগামী ৮ জুলাই রাজ্যের ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচন। মনোনয়ন পর্ব শেষ হতেই এলাকায় শুরু হয়ে গিয়েছে ভোটের প্রচার। পাণ্ডুয়ার (Pandua) শিমলাগর ভিটাশিন গ্রাম পঞ্চায়েতের পোঁটবা গ্রামের ১১০ নম্বর বুথে বিজেপি প্রার্থী সোনালি মাণ্ডির প্রতিদ্বন্দ্বিতা তাঁর কাকী-শাশুড়ি সিপিএম প্রার্থী লক্ষ্মীরানি মাণ্ডির সঙ্গে। ঘরে ঘরের এই রাজনৈতিক লড়াইয়ে কে হবে জয়ী? এই নিয়ে কিন্তু টানটান উত্তেজনা।
[আরও পড়ুন: ‘ভারতীয়রা ফর্সা নন?’, খুশি-সুহানার ‘আর্চিস’ বর্ণবিদ্বেষের শিকার হতেই কষিয়ে জবাব জোয়ার ]
পোঁটবার ১১০ নম্বর বুথে আলাদা আলাদাভাবে প্রচার করতে দেখা গেল দুই প্রার্থীকেই। বিজেপি প্রার্থী সোনালি ভোট প্রচারে বেরিয়ে কাকী-শাশুড়ি সিপিআই প্রার্থী লক্ষীরানি মাণ্ডির পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেন। আশীর্বাদও দেন লক্ষ্মীদেবী। সোনালি বলেন, ”রাজনৈতিক মতাদর্শ আলাদা হলেও পারিবারিকভাবে আমাদের সম্পর্ক ভাল। আমি ওঁর কাছে আশীর্বাদ চেয়েছি, উনি আশীর্বাদ করে বলেছেন, জয়ী হবে।”
[আরও পড়ুন: গলসিতে বিরল কাণ্ড, তৃণমূলের বিজয়োৎসবে শামিল মনোনয়ন প্রত্যাহার করা ২ সিপিএম প্রার্থী]
এদিন প্রচারে বেরিয়ে কাকী-শাশুড়ি লক্ষ্মীরানি মাণ্ডি আবার বলেন, ”বউমা বউমার মতো লড়বে, আমি আমার মতো লড়ব। ওকে বলেছি, তুমিও ভাল থাকো, আমিও ভাল থাকি। তুমিও জয়ী হও, আমিও জয়ী হব।” বউমাকে জয়ের আশীর্বাদ দিলেও নিজে জয়ী হলেই বেশি খুশি হবেন, তা খোলাখুলি জানিয়ে দিলেন লক্ষ্মীদেবী। আর এবারের পঞ্চায়েত ভোটে এই শাশুড়ি-বউমার লড়াই অন্য মাত্রা পেয়েছে। তবে রাজনৈতিক লড়াই ঘরের ভিতরে আনতে নারাজ দুই প্রার্থীই। তাঁরা চান, যে-ই জিতুক, সেটা হোক শান্তিতেই। আর এই ভোটযুদ্ধ প্রভাব ফেলেনি পরিবারের মধ্যেও।