সুমন করাতি, হুগলি: ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনের তদন্তের কিনারা করল চুঁচুড়া থানার পুলিশ। শুক্রবার সকালে রমেশ মুদালিয়া নামে এক ব্যক্তির রক্তাক্ত দেহ পাওয়া যায়। রমেশের চার খুনিকে গ্রেপ্তার করেছেন তদন্তকারীরা। সাম্প্রতিক অতীতে রাজ্যের পুলিশের একটা অংশের ভূমিকা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠেছিল। পুলিশ একাধিক ক্ষেত্রে সঠিক তদন্ত করছে না। তেমন অভিযোগও উঠেছিল। তবে এক্ষেত্রে পুলিশ সক্রিয় হয়ে তদন্ত চালিয়েছে। পুলিশের ভূমিকায় প্রশংসা করছেন এলাকার বাসিন্দারা।
খুনের তদন্তে নেমে পুলিশ প্রথমে মৃতের স্ত্রী ভারতী ও শাশুড়িকে গ্রেপ্তার করে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ওই চার জনের নাম উঠে আসে। পুলিশ তাদের সকলকেই শনিবার রাতে গ্রেপ্তার করেছে।
শুক্রবার গ্রেপ্তারের পর পুলিশের জেরায় খুনের কথা স্বীকার করেছিল মৃতের স্ত্রী ও শাশুড়ি। তাদের থেকে আরও একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যায়। বিকাশ মোহালি, পরীক্ষিত সোম ওরফে বাপি, অভিষেক রাজভর ওরফে আশিস, প্রসেনজিৎ বিশ্বাস ওরফে বাবু নামে চারজনের নাম উঠে আসে। স্থানীয় ওই চার যুবকের খোঁজে পুলিশ তল্লাশি চালায়। এই চার জন খুন করেছে। সেই কথা জানার পরেই তদন্তের গতি বাড়ানো হয়। গতকাল রাতে ওই চারজনকে এলাকা থেকেই গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। পুলিশের জেরায় একসময় ভেঙে পড়ে ওই চারজন। খুনের কথা স্বীকার করে নেয় তারা।
তবে আর কেউ ওই খুনের সঙ্গে কি জড়িত রয়েছে? মৃতের স্ত্রী ও শাশুড়ির সঙ্গে এই খুনের যোগ কতটা গভীরে? তারা দুজনেই কি এই খুনের পরিকল্পনা করেছিল? খুনের জন্য নিযুক্ত করা হয়েছিল ওই চারজনকে? খুনের সময় কি ওই দুই মহিলাও অকুস্থলে উপস্থিত ছিল? সেইসব প্রশ্ন উঠে আসছে। তবে আরও তদন্তের স্বার্থে পুলিশ বিস্তারিত কিছুই বলতে চায়নি। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে ব্যক্তিগত শত্রুতা, আর্থিক বিরোধ, বা অন্য কোনও কারণ রয়েছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আজ রবিবার অভিযুক্তদের চুঁচুড়া জেলা সদর আদালতে পেশ করা হয়।
হুগলির দেবানন্দপুর দক্ষিণ নলডাঙা সৃজনপল্লি এলাকায় শুক্রবার সকালে রমেশ মুদালিয়ার মৃতদেহ উদ্ধার হয়। শরীরে একাধিক ধারালো অস্ত্রের দাগ ছিল। মৃতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে স্ত্রী ও শাশুড়িকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।