জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: সীমান্তে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধের দাবিতে শ্রমিক বিক্ষোভে আজ উত্তপ্ত হয়ে উঠল বনগাঁর পেট্রাপোল। তাঁদের অভিযোগ, কয়েকজন অসাধু ব্যবসায়ী এই সীমান্ত বাণিজ্য শুরু করেছে। জিরো পয়েন্টে পণ্য খালাসের জন্য বাংলাদেশি শ্রমিকদের আনাগোনা বাড়ছে। ফলে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা তাঁদের।
এই দাবিতে শনিবার বেলায় তাঁরা সীমান্তে আন্দোলন শুরু করেন। যদিও পেট্রাপোল ল্যান্ড অথরিটির মতে, কেন্দ্র ও রাজ্যের অনুমোদন নিয়েই সীমান্ত বাণিজ্য শুরু হয়েছে। বাংলাদেশি শ্রমিকদের থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কার কথাও উড়িয়ে দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
[আরও পড়ুন: অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় করোনার থাবা, সদ্যোজাত কোলে হাসিমুখে বাড়ি ফিরলেন যুদ্ধজয়ী]
লকডাউনের জেরে দীর্ঘ ৩৭ দিন পর বনগাঁর পেট্রাপোল সীমান্তে শুরু হয়েছে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য। কেন্দ্রের অনুমতি সাপেক্ষেই তা চালু করা হয়েছে। নির্দিষ্ট স্বাস্থ্যবিধি মেনে, ন্যূনতম কর্মীকে কাজে লাগিয়ে তবেই বাণিজ্য হবে। বৃহস্পতিবার থেকেই তা ভারত-বাংলাদেশের পেট্রাপোল সীমান্তে চালু হয়েছে আমদানি-রপ্তানি। ফলে বাংলাদেশি শ্রমিকরা ব্যবসার কাজে সীমান্ত পেরিয়ে এদেশে আসার সুযোগ পাচ্ছেন। এই ইস্যুতেই শনিবার পেট্রাপোল সীমান্তে শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করেন। তাঁদের অভিযোগ, পেট্রাপোল অ্যাসোসিয়েশনের শ্রমিকরা আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হোক। কারণ, এই ব্যবসা চালু করেছে কয়েকজন অসাধু ব্যবসায়ী। জিরো পয়েন্টে পণ্য খালি করতে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিকরা আসছেন, এতে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। এই আশঙ্কা প্রকাশ করে তাঁরা বাণিজ্য বন্ধ করার দাবি তোলেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে বিএসএফ, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করে।
[আরও পড়ুন: মানা হচ্ছে লকডাউন? খতিয়ে দেখতে ফুলবাড়ি-বাংলাবান্ধা সীমান্ত পরিদর্শনে কেন্দ্রীয় দল]
এদিকে, বারাসত সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি দেবদাস মণ্ডলের দাবি, কেন্দ্র যখন আমদানি-রপ্তানিতে সায় দিয়েছে, তখন যথেষ্ট ভাবনাচিন্তা এবং পরিকাঠামোগত প্রস্তুতি নিয়েই তা চালু করার অনুমোদন দিয়েছে। বনগাঁর অর্থনীতি অনেকাংশেই সীমান্ত বাণিজ্যের উপর নির্ভরশীল। তাই এভাবে কাজ বন্ধের দাবি সঙ্গত নয় বলে মনে করছেন তিনি। যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি ছাড়া সীমান্তে বাণিজ্য চালু হয়েছে, এই অভিযোগ তুলে জেলাশাসককে চিঠি দিয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের মেন্টর গোপাল শেঠ।
পেট্রাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের ম্যানেজার শুভজিৎ মণ্ডল জানিয়েছেন, কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের অনুমতিক্রমে আমদানি-রপ্তানি শুরু হয়েছে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের শ্রমিকরা কাজ করছেন নিয়ম মেনে। সংক্রমণ ছড়ানো অসম্ভব বলেও দাবি তাঁর। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, পরবর্তীতে এই বাণিজ্য বন্ধ করে দেওয়া নিয়ে সরকারি কোনও নির্দেশ না আসা পর্যন্ত আগের নিয়ম অনুসারেই কাজ চলবে।
The post সীমান্ত বাণিজ্যে অসাধু-যোগ, অভিযোগে আমদানি-রপ্তানি বন্ধের দাবিতে শ্রমিক বিক্ষোভ appeared first on Sangbad Pratidin.
