সন্দীপ্তা ভঞ্জ: চরম অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে রাজ্য। চিকিৎসা ক্ষেত্র যেন পরিণত হয়েছে রণক্ষেত্রে। তিনদিন ধরে চলছে চিকিৎসকদের কর্মবিরতি। অন্যদিকে, রোগীর আত্মীয়-স্বজনদের লাগাতার আন্দোলন। এর মাঝেই স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে সবর হলেন অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ। সোমবার গভীর রাতে নীলরতন সরকার হাসপাতালে হওয়া ধুন্ধুমার পরিস্থিতির পর থেকেই রাজ্যের চিকিৎসাকেন্দ্রগুলিতে বন্ধ চিকিৎসা পরিষেবা। চিকিৎসক আক্রমণ কাণ্ডে প্রতিবাদের জল গড়িয়েছে দেশের রাজধানী অবধি। আর সেই প্রসঙ্গেই বৃহস্পতিবার ফেসবুকে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন রুদ্রনীল ঘোষ। রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কথাও বললেন সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল-এর প্রতিনিধির সঙ্গে।
[আরও পড়ুন: যৌন হেনস্তার মামলায় নানা পাটেকরকে স্বস্তি দিল পুলিশ ]
বৃহস্পতিবার নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে রুদ্রনীল লেখেন, “পরিষেবা দেওয়াটা যদি ডাক্তারের ডিউটি হয়, তবে সুরক্ষা দেওয়াটাও প্রশাসনের ডিউটি!” রুদ্রনীল যিনি কিনা রাজ্যের ক্ষমতাসীন দল অর্থাৎ তৃণমূল ঘনিষ্ঠ হিসেবেই পরিচিত, তিনিই কথা বলছেন প্রশাসনের বিরুদ্ধে? তাহলে কি তিনিও গেরুয়া শিবিরের দিকে ঝুঁকছেন? প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। প্রসঙ্গত, বুধবার সকালেও নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে তৃণমূল সমর্থকদের পোস্ট করা একটি মিম শেয়ার করে, কঠোর ভাষায় তার প্রতিবাদ জানান অভিনেতা। রুদ্রনীল লেখেন, “মজার একটা লিমিট থাকে! সেটা টপকালে মুশকিল! এই কুরুচির রাজনৈতিক পোস্টের তীব্র বিরোধিতা করছি! মিম মানেটা পালটে দিও না কেউ! please!!!” জল্পনাটা শুরু হয় সেখান থেকেই। অস্ফুটে প্রশ্ন ওঠা শুরু করে, এবার কি তবে সত্যি বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন তৃণমূল ঘনিষ্ঠ অভিনেতা?
এপ্রসঙ্গে কথা বলতেই অভিনেতা রুদ্রনীলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।সরাসরি এ প্রশ্নের উত্তর না দিলেও, রাজ্যের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে রীতিমতো সুর চড়িয়েছেন অভিনেতা। তিনি বলেন, “জুনিয়র ডাক্তার, যারা আমাদের ভবিষ্যৎ, তাঁদেরকে আক্রমণ করা হচ্ছে। আজকে কেন এরাজ্য থেকে বাইরের রাজ্যে চলে যাচ্ছে ছেলেমেয়েরা? নিশ্চয়ই সেখানে সুযোগ-সুবিধে অনেক বেশি।” রাজ্যের প্রশাসনিক কাঠামো এবং কাজকর্ম নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন রুদ্রনীল। এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, “একজন ডাক্তার আক্রান্ত হবেন কেন, তাঁদের যথাযথ নিরাপত্তা দেওয়ার মতো রাজ্যে সেই পরিকাঠামো কেন থাকবে না? আমাদের রাজ্যে যে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। জাতপাত ধর্মের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। আমরা যা যা পাওয়ার জন্য ভোটটা দিই বা যাদের আসনে বসাই, আমাদের দেওয়া ট্যাক্সের টাকায় যাদের মাইনে হয়, তারা কিন্তু জনগণের প্রতিনিধি। স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান এসব ঠিক থাকলে মানুষ কখনোই সেই সরকারের বিরুদ্ধে হুজ্জুতি করার সাহস পাবে না। সরকার এবং রাজনৈতিক দল দুটোকে গুলিয়ে ফেললে মুশকিল। যে কোনও রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীদের বলব, ‘মুখ খোলার আগে দয়া করে ভাবুন।’ আমরা ভোট দিয়ে তাঁদের আসনে বসিয়েছি। তাঁদের আবার ক্ষমতাচ্যূত করতে সাধারণ মানুষের ৫ মিনিট সময় লাগবে না… তা কেন্দ্র হোক বা রাজ্য।”
[আরও পড়ুন: হবু কনে নুসরতকে আইবুড়ো ভাত খাওয়ালেন মিমি, কী কী ছিল মেনুতে?]
উল্লেখ্য, রুদ্রনীল ঘোষ শাসকদলের ঘনিষ্ঠ হিসেবেই পরিচিত। হঠাৎ এমন কী হল, যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে তিনি সরব হলেন, সেই প্রশ্ন কিন্তু চাগাড় দিয়েছে অনেকের মাথাতেই। এপ্রসঙ্গে তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি জানান, “আমি একজন স্বাধীন নাগরিক। না তৃণমূল কর্মী না বিজেপি কর্মী। সন্দেশখালি হোক কিংবা রাজ্য তথা দেশের স্বাস্থ্য পরিষেবা, একজন সাধারণ মানুষ হিসেবেই কথাগুলো বলছি।”
The post শিবির বদলাচ্ছেন রুদ্রনীল? এনআরএস কাণ্ডে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে সরব অভিনেতা appeared first on Sangbad Pratidin.